লখনউ: কৃষিশ্রমিকদের (Farm Workers) স্বার্থে বড় পদক্ষেপ নিল উত্তরপ্রদেশ সরকার। এক ঐতিহাসিক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, রাজ্যের সব জেলার প্রাপ্তবয়স্ক কৃষিশ্রমিকরা এখন থেকে দৈনিক ন্যূনতম ₹২৫২ মজুরি পাবেন, যা মাসিক হিসাবে দাঁড়াচ্ছে ৬,৫৫২ টাকা।
এই সিদ্ধান্তে শুধু চাষাবাদে নিযুক্ত শ্রমিকরাই নন, উপকরণ খাত যেমন পশুপালন, মৌচাক পালন, পোলট্রির কাজেও নিযুক্ত শ্রমিকদের জীবনমান উন্নত হবে। রাজ্যের মুখপাত্র জানিয়েছেন, এই ন্যূনতম মজুরি বাস্তবায়নের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ গ্রামীণ শ্রমিকের জন্য আর্থিক নিরাপত্তা এবং সম্মানজনক জীবনের পথ প্রশস্ত হবে।
রাজ্যের শ্রম ও কর্মসংস্থান বিভাগের মুখ্যসচিব এম কে শানমুগ সুন্দরম জানিয়েছেন, এই নতুন ন্যূনতম মজুরি সমস্ত ধরনের কৃষিকাজের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। এতে ধান, গম বা অন্যান্য ফসল চাষ, ছত্রাক চাষ (মাশরুম), ফসল বাজারে পৌঁছে দেওয়ার কাজ, পশুপালন, ডেইরি ফার্ম, মৌচাক পালন, পোলট্রি ফার্ম এবং সংশ্লিষ্ট সহায়তামূলক কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরাও অন্তর্ভুক্ত থাকবেন।
তিনি আরও বলেন, মজুরি প্রদানের ক্ষেত্রে একাধিক মাধ্যম চালু করা হয়েছে। নগদে, আংশিক নগদে, পণ্যের মাধ্যমে (যেমন চাষের ফসল) বা ডিজিটাল মাধ্যমে মজুরি প্রদান করা যাবে। তবে যেকোনও ক্ষেত্রেই ন্যূনতম ২৫২ টাকা মজুরির চেয়ে কম হওয়া চলবে না। এর ফলে গ্রামীণ অঞ্চলে ডিজিটাল লেনদেন বাড়বে এবং মজুরি প্রদানের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা আসবে।
স্বল্পকালীন চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের জন্যও সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। তাদের প্রতি ঘণ্টার মজুরি দৈনিক মজুরির এক-ষষ্ঠাংশের কম হতে পারবে না। যদি কোনও শ্রমিক ইতিমধ্যেই ২৫২ টাকার বেশি মজুরি পেয়ে থাকেন, তবে তা তার জন্য নতুন ন্যূনতম মজুরি হিসাবে গণ্য হবে।
এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র মজুরি নির্ধারণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় — এটি রাজ্যের শ্রমনীতির এক মৌলিক রূপান্তরের প্রতিফলন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বহুবার বলেছেন, শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা করা তাঁর সরকারের অগ্রাধিকারের মধ্যে পড়ে। পূর্বে রাজ্য সরকার ই-শ্রম পোর্টালের মাধ্যমে কোটি কোটি অসংগঠিত শ্রমিকদের নথিভুক্ত করে বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করেছিল। এই নতুন মজুরি বিজ্ঞপ্তি সেই দিকেই আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।
এই মজুরি বৃদ্ধির মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রে শ্রমের গুণমান ও ধারাবাহিকতা বাড়বে, শ্রমিকদের জীবনে স্থিতিশীলতা আসবে এবং ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ ভাবনার বাস্তবায়ন আরও শক্তিশালী হবে। একই সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ কৃষি উৎপাদনের পাশাপাশি কৃষিশ্রমিকদের কল্যাণের ক্ষেত্রেও দেশের শীর্ষস্থানে উঠতে চায়।