বিল আটকে রাখা নয়! সম্মতি না-দিলে বিধানসভায় ফেরত দিতে বাধ্য রাজ্যপাল: সুপ্রিম কোর্ট

Governor Bill Assent Ruling

বিল পেশ, পাস ও রাজ্যপালের অনুমোদন, এই সাংবিধানিক প্রক্রিয়ার ওপর গুরুত্বপূর্ণ ব্যাখ্যা দিল সুপ্রিম কোর্ট। রাষ্ট্রপতির রেফারেন্সের ভিত্তিতে বুধবার সর্বোচ্চ আদালত জানিয়ে দিল, গভর্নর কোনও বিলকে অনির্দিষ্টকালের জন্য আটকে রাখতে পারেন না, কিন্তু একইসঙ্গে বিল অনুমোদনের জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দেওয়ার ক্ষমতা আদালতের নেই, কারণ তা হলে কার্যত তিনটি শাখার ক্ষমতার পৃথকীকরণে (separation of powers) হস্তক্ষেপ করা হবে।

Advertisements

‘Deemed Assent’ ধারণা খারিজ Governor Bill Assent Ruling

পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ বৃহস্পতিবার পর্যবেক্ষণ করে, রাজ্যপাল বিল নিয়ে অনন্ত নীরবতায় বসে থাকতে পারেন না; তাঁকে ‘যৌক্তিক সময়সীমার মধ্যে’ সিদ্ধান্ত জানাতেই হবে। কিন্তু কত দিনের মধ্যে সেই সিদ্ধান্ত দিতে হবে—তা আদালত সর্বজনীনভাবে নির্দিষ্ট করে দিতে পারে না। বিল অত্যধিক দিন ধরে ঝুলে থাকলে আদালত সীমিত হস্তক্ষেপ করে রাজ্যপালকে সিদ্ধান্ত জানাতে নির্দেশ দিতে পারে, তবে বিলের ‘গুণগত দিক’ বিচার করতে পারে না।

   

একই সঙ্গে বেঞ্চ স্পষ্ট জানায়—‘ডিমড অ্যাসেন্ট’-এর ধারণা সংবিধানের কাঠামোর পরিপন্থী। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময় পেরোলেই বিল স্বয়ংক্রিয়ভাবে গৃহীত বলে ধরে নেওয়া যাবে না। এতে আইন প্রণয়নের সাংবিধানিক চেক–অ্যান্ড–ব্যালান্স দুর্বল হয়ে পড়ে।

বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন

সুপ্রিম কোর্ট আরও সতর্ক করে দেয়, বিল আইন হওয়ার আগেই আদালতের সামনে তার বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যাবে না। সংবিধানের ২০০ ও ২০১ অনুচ্ছেদের অধীনে রাষ্ট্রপতি বা রাজ্যপালের ‘অ্যাসেন্ট’-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তকে ‘বিল পর্যায়ে’ বিচার করা অসাংবিধানিক। কেবলমাত্র কোনও বিল আইন (Act) হয়ে গেলে তার সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে বিচার বিভাগ আগ্রহ দেখাতে পারে।

তবে বেঞ্চ এ-ও জানায়, সংবিধানিক প্রক্রিয়া যদি অকার্যকর বা স্থগিত হয়ে পড়ে—যেমন রাজ্যপালের দীর্ঘকালীন নীরবতা বিধানসভার আইন প্রণয়ন ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে—তাহলে ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে। কিন্তু ‘এক রকম সময়সীমা সব বিলের জন্য’—এই ধরণের ধারণা আদালত প্রত্যাখ্যান করেছে।

Advertisements

মত সংরক্ষণ করেছিলেন

মামলাটি রাষ্ট্রপতির রেফারেন্স হিসেবে সুপ্রিম কোর্টে আসে তামিলনাড়ুর রাজ্যপালের ‘বিল বিলম্ব’ নিয়ে আগের রায়কে কেন্দ্র করে। ওই রায়ে দুই বিচারপতির বেঞ্চ বিল প্রক্রিয়াকরণে সাংবিধানিক পদাধিকারীদের জন্য কিছু সময়সীমা প্রস্তাব করেছিলেন। এরপরই কেন্দ্র ২০০ ও ২০১ অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যা নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলে।

পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ, প্রধান বিচারপতি বি. আর. গাভাই, বিচারপতি সুর্যকান্ত, বিক্রম নাথ, পি. এস. নারসিমা ও এ. এস. চন্দুরকর, দশ দিনের শুনানি শেষে ১১ সেপ্টেম্বর মত সংরক্ষণ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সেই পরামর্শমূলক মত ভবিষ্যতে কেন্দ্র–রাজ্য সম্পর্ক ও রাজ্য আইন প্রণয়নের গতি—উভয় ক্ষেত্রেই প্রভাব ফেলবে বলেই মনে করা হচ্ছে।

 

Bharat: The Supreme Court ruled that Governors cannot indefinitely delay state bills, but cannot be time-bound for assent, upholding separation of powers. The bench explicitly rejected the concept of ‘Deemed Assent’, clarifying the constitutional check and balance on legislative process.