২০০২ সালের স্মৃতি উসকে ফের উত্তপ্ত গুজরাতের গোধরা!

গুজরাতের গোধরায় (Godhra) ফের অশান্তির বাতাবরণ। ২০০২ সালের বিভীষিকাময় হিংসার স্মৃতি উসকে দিয়ে সম্প্রতি নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। নবরাত্রির প্রাক্কালে ধর্মীয় অনুভূতিকে ঘিরে তৈরি…

godhra-gujarat-unrest-2025-stone-pelting-police-station-navratri-tensions-revive-2002-riots-memories

গুজরাতের গোধরায় (Godhra) ফের অশান্তির বাতাবরণ। ২০০২ সালের বিভীষিকাময় হিংসার স্মৃতি উসকে দিয়ে সম্প্রতি নতুন করে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। নবরাত্রির প্রাক্কালে ধর্মীয় অনুভূতিকে ঘিরে তৈরি হওয়া উত্তেজনা হিংসাত্মক রূপ নেয় যখন একদল উন্মত্ত জনতা পুলিশের ‘বজ্র’ (Vajra) গাড়িকে লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে।

ঘটনার সূত্রপাত হয় এক ব্যক্তিকে পুলিশ থানায় তলব করা নিয়ে। সেই ব্যক্তি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ধর্মীয় পোস্টার সংক্রান্ত ভিডিও শেয়ার করেছিলেন। ভিডিওটি ঘিরে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে চাপা উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গোধরা বি ডিভিশন থানার পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয় এবং সেই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় ডাকে। কিন্তু পুলিশি পদক্ষেপ ঘিরেই জনমনে অসন্তোষ দানা বাঁধে এবং এর জেরে শুরু হয় পাথর ছোঁড়ার ঘটনা।

   

এই হঠাৎ আক্রমণের জবাবে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং অতিরিক্ত বাহিনী মোতায়েন করে এলাকায় টহল জোরদার করে। গোটা গোধরা শহরে মুহূর্তেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তবে সতর্কতা অবলম্বন করে বাহিনী মোতায়েন রাখা হয়েছে।

এই ঘটনার সময়েই, গোধরা রেল ইয়ার্ডে একটি বড়সড় ‘মক ড্রিল’ (Mock Drill) পরিচালনা করে ভদোদরা রেলওয়ে ডিভিশন ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী (NDRF)। এই মহড়ার উদ্দেশ্য ছিল, সম্ভাব্য রেল দুর্ঘটনা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে কতটা প্রস্তুত রয়েছে স্থানীয় প্রশাসন ও রেল কর্তৃপক্ষ, তা যাচাই করা। গোধরার মত স্পর্শকাতর এলাকায় এমন মহড়া সময়োপযোগী বলেই মনে করছেন অনেকে।

Advertisements

স্থানীয়দের মতে, সাম্প্রতিক ঘটনার প্রেক্ষাপটে প্রশাসনের আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন ছিল। কারণ গোধরার ইতিহাস অত্যন্ত স্পর্শকাতর। ২০০২ সালে এখানেই একটি ট্রেন আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল, যার জেরে গোটা গুজরাট জুড়ে ভয়াবহ দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে। বহু মানুষের মৃত্যু হয়, হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।

নবরাত্রির মত ধর্মীয় উত্সবের সময় এই ধরনের সংঘর্ষ পরিস্থিতিকে আরও বিপজ্জনক করে তোলে। যদিও পুলিশ ও প্রশাসন দাবি করেছে যে, পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল এবং সব ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তারা সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করছেন। সতর্কবার্তা জারি করা হয়েছে গোধরায় এবং পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে। প্রশাসনের তরফে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে সাধারণ মানুষের উদ্দেশে।

সামনেই আসছে দশেরা ও দীপাবলির মত গুরুত্বপূর্ণ উত্সব। গোধরার সাম্প্রতিক অশান্তি প্রশাসনের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে – কীভাবে অতীতের ছায়া মুছে ফেলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখা যায়, সেটাই এখন প্রধান প্রশ্ন।