আয়তনে ভারতের সবচেয়ে ছোট রাজ্য। অথচ ভোটের (Lok Sabha Election) আগে সেখানেই উড়ছে কোটি কোটি টাকা। অবশ্য শুধু টাকাই নয়, বিনামূল্যে মদ-মাদকও মিলছে। শর্ত একটাই, দলের প্রার্থীকে ভোট দিতে হবে। এই শর্তে ‘হ্যাঁ’ বললেই, আপনার বাড়িতে পৌঁছে যাবে টাকা কিংবা মদের বোতল।
ফ্রিতে টিভি-এসি-ফ্রিজও পেয়ে যেতে পারেন। মে মাসে ৭ তারিখ ভোট রয়েছে ভারতের সবচেয়ে ছোট রাজ্য গোয়ায়। তার আগে সেখান থেকে কোটি কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করেছে নির্বাচন কমিশন। মদ-মাদকদ্রব্যও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, গোয়া থেকে গত ছয় সপ্তাহে অর্থাৎ, মার্চের ১ তারিখ থেকে এপ্রিলের ১৩ তারিখ পর্যন্ত ১ লক্ষ লিটার অ্যালকোহল, ১৫.৬৪ কোটি নগদ টাকা, ৩.২৩ কোটি টাকার মাদক এবং ১.১৮ কোটি টাকার বিনামূল্যের সামগ্রী বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। দেশের ক্ষুদ্রত্তম রাজ্য গোয়ায় মাত্র দুটি লোকসভা আসন রয়েছে। উত্তর গোয়া এবং দক্ষিণ গোয়া। অথচ অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় গোয়ায় সামগ্রিক বাজেয়াপ্ত সামগ্রীর পরিমাণ আনুপাতিক হারে বেশি।
এই একই সময় পর্বে, গুজরাত থেকে ৬.৫ কোটি, দিল্লি এনসিআর থেকে ১১.২৮ কোটি, উত্তরাখণ্ড থেকে ৬.১ কোটি এবং ওডিশা থেকে ১.৪৭ কোটি টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। যদিও নাগাল্যান্ড, লাদাখ, লাক্ষাদ্বীপ এবং পুডুচেরি কোনও টাকা বাজেয়াপ্ত হয়নি। গোয়া থেকে গত ছয় সপ্তাহে ৩.২৩ কোটি টাকার মাদক উদ্ধার হয়েছে। গুজরাতে এই অঙ্কটা ৪৮৫ কোটি, মহারাষ্ট্রে ২১৩ কোটি, পঞ্জাবে ২৮০ কোটি এবং তামিলনাড়ুতে ২৯৩ কোটি।
ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশনের এই সংক্রান্ত পোর্টাল ইলেকশন সিজার ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (ইএসএমএস) থেকে উপরের তথ্যগুলি মিলেছে। গত বিধানসভা ভোটের শেষ দফায় কমিশন বাজেয়াপ্ত সামগ্রীর রিয়েল টাইম তথ্যের জন্য এই পোর্টাল চালু করে। গোয়ায় ১০১,৪৪৬ লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, অন্যদিকে দুই ‘ড্রাই’ স্টেট গুজরাত এবং বিহার থেকে যথাক্রমে ৭৬০,০৬২ লিটার এবং ৮৪৫,৭৫৮ লিটার মদ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।
গোয়ার স্থানীয় সংবাদপত্রগুলি মদ বাজেয়াপ্ত হওয়ার খবরে হইচই শুরু করেছে। কারণ গোয়া প্রতিবেশী রাজ্যগুলিতে অবৈধ অ্যালকোহল পরিবহণের জন্য একটি বাহক হয়ে উঠেছে। কর্নাটক ও মহারাষ্ট্রের সরকারি আধিকারিকরা, গোয়া থেকে আসা মদ তাদের রাজ্যের সীমানায় বাজেয়াপ্ত করেছে। ভোটের আগে গোয়াতেও হাত বদল হয়েছে মূল্যবান ধাতুরও। যদিও ইএসএমএস পোর্টালে উল্লেখ নেই মূল্যবান ধাতুগুলির ঠিক কোন ধরনের। তবে গত ছয় সপ্তাহে গোয়া থেকে ৩.৮ কোটি টাকা মূল্যের ধাতু বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।