নেপালে (Nepal Gen Z Protest) যেন শান্তি ফিরছে না কিছুতেই। গত এক বছরে রাজনৈতিক অস্থিরতা, তরুণ সমাজের ক্রমবর্ধমান ক্ষোভ এবং ক্ষমতাসীনদের প্রতি অবিশ্বাস—সব মিলিয়ে দেশজুড়ে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা আরও একবার সামনে এসে পড়ল বৃহস্পতিবারের ঘটনায়। বারা জেলার সেমরা অঞ্চলে ‘জেন জ়ি’ (Gen Z) আন্দোলনকারীদের সঙ্গে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলির দল CPN-UML-এর সমর্থকদের সংঘর্ষ আবারও প্রমাণ করল, নেপালের রাজনৈতিক সংকট দূর হওয়ার নামই নিচ্ছে না।
গত সেপ্টেম্বরে দেশজুড়ে তুমুল আলোচিত ‘জেন জ়ি’ বিক্ষোভ নেপালের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছিল। মূলত তরুণ সমাজ—বিশেষ করে ১৬ থেকে ২৫ বছর বয়সি যুবক-যুবতীরা তখন রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেয়। দুর্নীতি, বেকারত্ব, উন্নয়নহীনতা, রাজনৈতিক দুর্নীতির চক্র—এই সবই ছিল তাঁদের বিক্ষোভের মূল কেন্দ্রবিন্দু। সেই আন্দোলনের জেরে নড়বড়ে হয়ে পড়ে ওলি-সরকার। লাগাতার বিক্ষোভ, সংঘর্ষ ও চাপের মুখে অবশেষে পতন ঘটে ওলির সরকার। নেপালের রাজনীতিতে এমন যুব-নেতৃত্বাধীন গণআন্দোলন নজিরবিহীন বলেই মনে করেন বিশ্লেষকেরা।
কিন্তু সরকার পরিবর্তন হলেও ক্ষোভের আগুন নিভে যায়নি। বরং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তরুণদের হতাশা আরও বেড়েছে। নতুন সরকারও পরিস্থিতি সামলাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন মহলে। এই পটভূমিতেই বৃহস্পতিবার নতুন করে মাথাচাড়া দেয় অশান্তি। সেমরায় সেই পুরনো ‘জেন জ়ি’ আন্দোলনের কর্মীদের একটি অংশ স্থানীয় বিভিন্ন সমস্যার প্রতিবাদে সমাবেশ করে। অভিযোগ, এই সমাবেশকে ঘিরেই এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। ওলির দল CPN-UML-এর স্থানীয় সমর্থকেরা সেই বিক্ষোভকে ‘সরকার-বিরোধী উস্কানি’ বলেই দাবি করে। প্রথমে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা শুরু হলেও কিছুক্ষণের মধ্যেই তা রূপ নেয় হাতাহাতি এবং পরে পূর্ণাঙ্গ সংঘর্ষে।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, বিক্ষোভকারীদের দাবি ছিল বেশ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতি, স্থানীয় প্রশাসনের উদাসীনতা এবং যুবকদের কর্মসংস্থানহীনতা নিয়ে। তাঁদের অভিযোগ, পুরনো অদক্ষতা ও দুর্নীতির ধারাবাহিকতা এখনও চলছে। অন্যদিকে, CPN-UML-এর সমর্থকদের অভিযোগ, এই বিক্ষোভ ইচ্ছাকৃতভাবে ওলি-সমর্থিত শক্তিকে দুর্বল করার জন্য সাজানো হয়েছে।


