উত্তরাখণ্ডে দুটি রোপওয়ে প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্র সরকার যা কেদারনাথ এবং হেমকুন্ড সাহিব যাত্রার সময় ব্যাপকভাবে কমিয়ে দেবে। এসব প্রকল্পের মধ্যে অন্যতম হলো গৌরীকুণ্ড থেকে কেদারনাথ পর্যন্ত রোপওয়ে। বর্তমানে ১৬ কিলোমিটার কঠিন পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে ৮ থেকে ৯ ঘন্টা সময় লাগে। তবে
এই নতুন রোপওয়ে প্রকল্পের মাধ্যমে যাত্রীদের যাত্রা সময় কমে মাত্র ৩৬ মিনিটে পৌঁছে যাবে কেদারনাথ।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী আশ্বিনী বৈষ্ণব বুধবার এই ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেবিনেট কমিটি এই প্রকল্পগুলোর অনুমোদন দিয়েছে। এগুলো শুধু যাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক হবে না, বরং পরিবেশবান্ধব উপায়ে পাহাড়ি পথ পাড়ি দেওয়ার সুযোগও তৈরি করবে।
এই রোপওয়ে প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য হবে ১২.৯ কিলোমিটার, এবং এর আনুমানিক খরচ হবে ৪,০৮১ কোটি টাকা। প্রকল্পটি পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে বাস্তবায়িত হবে, এবং এতে অত্যাধুনিক ট্রাই-কেবল ডিটাচেবল গন্ডোলা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। প্রতিদিন ১৮,০০০ যাত্রী পরিবহন করার ক্ষমতাসম্পন্ন এই রোপওয়ে প্রতি ঘন্টায় ১,৮০০ যাত্রী পরিবহন করবে।
কেদারনাথ যাত্রা সহজ হবে
কেদারনাথ ভারতের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের একটি, রুদ্রপ্রয়াগ জেলার ৩,৫৮৩ মিটার (১১,৯৬৮ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত। প্রতি বছর কেদারনাথে প্রায় ২০ লক্ষ তীর্থযাত্রী আসেন। এখন এই রোপওয়ে প্রকল্পটি শুরু হলে, যাত্রীরা গৌরীকুণ্ড থেকে কেদারনাথের মধ্যে একটি সহজ এবং দ্রুত পথ পাবেন। ৮-৯ ঘন্টার হাঁটা এবং খচ্চর যাত্রার পরিবর্তে, মাত্র ৩৬ মিনিটে পৌঁছানো যাবে কেদারনাথে।
এই প্রকল্পটির মাধ্যমে কেদারনাথ যাত্রা তীর্থযাত্রীদের জন্য অনেক সুবিধাজনক হয়ে উঠবে। এছাড়া এটি পর্যটকদের জন্য আরও একটি জনপ্রিয় স্থান হয়ে উঠতে সাহায্য করবে, যা একদিকে পরিবেশ সংরক্ষণ করবে এবং অন্যদিকে জনগণের জন্য অধিক সুবিধা এনে দেবে।
হেমকুন্ড সাহিবে যাত্রার নতুন সুবিধা
এছাড়া গরবিন্দঘাট থেকে হেমকুন্ড সাহিব পর্যন্ত একটি ১২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রোপওয়ে প্রকল্পও অনুমোদন পেয়েছে। বর্তমানে হেমকুন্ড সাহিবের যাত্রা একটি ২১ কিলোমিটার কঠিন পাহাড়ি পথে হয়। এই নতুন রোপওয়ে প্রকল্পের মাধ্যমে হেমকুন্ড সাহিবে যাত্রা করা হবে আরও সহজ এবং সাশ্রয়ী।
এই প্রকল্পটি আছড়ে পড়বে তীর্থযাত্রীদের সংখ্যা, যা ১০ গুণ বেড়ে যাবে। প্রতিবছর হেমকুন্ড সাহিবে প্রায় ১.৭৭ লাখ মানুষ যান, কিন্তু এই রোপওয়ে প্রকল্প শুরু হলে এই সংখ্যা বাড়বে এবং আরো অনেক তীর্থযাত্রী হেমকুন্ড সাহিবে যেতে পারবেন।
প্রকল্পের খরচ এবং ভবিষ্যৎ
হেমকুন্ড সাহিব রোপওয়ে প্রকল্পটির আনুমানিক খরচ ২,৭৩০ কোটি টাকা এবং এটি ডিজাইন, নির্মাণ অর্থনিতি, পরিচালনা, স্থানান্তর মডেলে বাস্তবায়িত হবে। রোপওয়ে সম্পন্ন হলে হেমকুন্ড সাহিবে পৌঁছানো আরও সহজ এবং দ্রুত হবে, যা বিশেষ করে শীতকালীন পরিবেশে তীর্থযাত্রীদের জন্য উপকারী হবে।
এই রোপওয়ে প্রকল্প দুটি শুধু তীর্থযাত্রীদের জন্য সুবিধাজনক নয়, বরং পাহাড়ি অঞ্চলে পরিবহন খাতের উন্নতির জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। রোপওয়ে প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন দেশের পর্যটন খাতেও বিশাল পরিবর্তন আনবে।