চন্ডীগড়: পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে দিনদুপুরে গুলি করে খুন করা হল RSS কর্মী নবীন অরোরাকে। দোকান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোটরসাইকেলে থাকা অবস্থায় দু’জন দুষ্কৃতী তাঁকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় ৩৫ বছর বয়সি নবীনের। এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে, পাশাপাশি উত্তেজনাও বেড়ে উঠছে ধীরে ধীরে।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিনের মতোই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজের দোকান বন্ধ করে মোটরসাইকেলে বাড়ির দিকে বেরিয়েছিলেন নবীন অরোরা। হঠাৎই পিছন থেকে একটি মোটরসাইকেলে আসা দুই ব্যক্তি তাঁকে লক্ষ্য করে একাধিক রাউন্ড গুলি চালায়। রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। ঘটনায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই দোকানের শাটার নামিয়ে দেন। খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়।
৬৯৯৯ টাকায় Samsung ও Motorola-র 12GB ব়্যামের ফোন! Flipkart Winter Sale-এ দুর্দান্ত অফার
ঘটনার পর পাঞ্জাব পুলিশের এসএসপি ভূপিন্দর সিংহ সাংবাদিকদের বলেন, “এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। নবীন অরোরা দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তখনই দু’জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি তাঁকে গুলি করে হত্যা করে। দ্রুততম সময়ে অপরাধীদের গ্রেফতার করতে আমরা ৮–৯টি বিশেষ টিম গঠন করেছি।” তিনি জানান, সিসিটিভি ফুটেজ, প্রযুক্তিগত তথ্য এবং স্থানীয় সূত্র থেকে পাওয়া নির্দিষ্ট কয়েকটি তথ্য ইতিমধ্যেই পুলিশের হাতে এসেছে।
এসএসপি আরও বলেন, “আমরা বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখছি। কোনও কোণ নষ্ট করা হচ্ছে না। প্রযুক্তিগত লিড আমাদের তদন্তে সহায়তা করছে। কিছু নির্দিষ্ট তথ্যও হাতে এসেছে, তা যাচাই করা হচ্ছে। খুব শিগগিরই অপরাধীদের গ্রেফতার করা হবে এবং তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” স্থানীয় বাসিন্দারা জানান,নবীন অরোরা এলাকার পরিচিত যুবক ছিলেন।
তাঁর দোকানের সামনে প্রতিদিনই ভিড় লেগে থাকত। রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থাকলেও তিনি ব্যক্তিগত জীবনে শান্ত ও বিনয়ী হিসেবেই পরিচিত ছিলেন। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে পরিবার শোকে ভেঙে পড়েছে।
ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের উদ্দেশ্য নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। কেউ বলছেন ব্যক্তিগত শত্রুতা, কেউবা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করছেন। তবে পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য প্রকাশ করেনি। তদন্তকারীদের বক্তব্য, এখনই কোনও সিদ্ধান্তে পৌঁছানো ঠিক হবে না। সব দিক খতিয়ে দেখেই সামনে আনা হবে প্রকৃত সত্য।
নবীনের মৃত্যু ঘিরে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়েছে ফিরোজপুরের বিভিন্ন মহলে। আরএসএস-এর স্থানীয় নেতৃত্ব ঘটনার নিন্দা জানিয়ে দুষ্কৃতীদের দ্রুত গ্রেফতারের দাবি তুলেছে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভয় ছড়িয়েছে—যে শহরে সন্ধ্যা নামতেই রাস্তা অনেকটাই ফাঁকা হয়ে যায়, সেখানে এমন প্রকাশ্য খুন নিরাপত্তা নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলছে।
এমন পরিস্থিতিতে পুলিশি টহল বাড়ানো হয়েছে। এলাকার বিভিন্ন সড়কে বাড়ানো হয়েছে নাকা চেকিং। আশপাশের কয়েকটি গ্রামেও পুলিশ তল্লাশি চালাচ্ছে। সিসিটিভি ফুটেজে দুটি মোটরসাইকেলের গতিপথ স্পষ্ট হওয়াতে তদন্ত আরও গতি পেয়েছে বলে জানাচ্ছেন পুলিশ আধিকারিকরা।


