মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (fbi) প্রধান কাশ প্যাটেল রবিবার জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি ভারত সরকারকে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। প্যাটেল এই মর্মান্তিক হামলাকে “সন্ত্রাসবাদের মন্দ শক্তির বিরুদ্ধে বিশ্বের মুখোমুখি হওয়া অবিরাম হুমকির একটি স্মারক” হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
২২ এপ্রিল সংঘটিত এই নৃশংস হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। পাকিস্তান-ভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি)-র প্রক্সি সংগঠন দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট (টিআরএফ) এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। এই ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরে এবং আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক কূটনৈতিক ও জনরোষের জন্ম দিয়েছে।
এক্স-এ পোস্ট করে প্যাটেল লিখেছেন (fbi)
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ পোস্ট করে প্যাটেল (fbi) লিখেছেন, “এফবিআই কাশ্মীরে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার সকল ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে এবং ভারত সরকারকে আমাদের পূর্ণ সমর্থন অব্যাহত রাখবে।” তিনি আরও যোগ করেন, “এটি সন্ত্রাসবাদের মন্দ শক্তির বিরুদ্ধে বিশ্বের মুখোমুখি হওয়া অবিরাম হুমকির একটি স্মারক (fbi)। ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য প্রার্থনা করুন। এই মুহূর্তে দায়িত্ব পালনকারী আইন প্রয়োগকারী বাহিনীর পুরুষ ও নারীদের ধন্যবাদ।”
আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সংহতি
এই হামলার পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ফোনে কথা বলে এই জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। হামলার পরদিন ট্রাম্প মোদীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং জম্মু ও কাশ্মীরে নিরীহ মানুষের প্রাণহানির জন্য গভীর সমবেদনা জানান।
হায়দরাবাদ টেক্কা! রায়নার দিকে নজর আইএসএলের একাধিক ক্লাবের
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্স-এ (fbi) পোস্ট করে জানিয়েছে, “রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ফোন করে জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলায় নিরীহ প্রাণহানির জন্য গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। রাষ্ট্রপতি ট্রাম্প এই জঘন্য হামলার কঠোর নিন্দা জানিয়ে এর পেছনে থাকা অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে ভারতকে পূর্ণ সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একসঙ্গে রয়েছে।”
ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে, পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নিতে রোম যাওয়ার পথে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এই প্রস্তাব পুনরায় দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেননি। একজন সাংবাদিক জিজ্ঞাসা করেন, তিনি কি পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং ভারত ও পাকিস্তানের নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পরিকল্পনা করছেন কিনা।
জবাবে ট্রাম্প বলেন, “ওই সীমান্তে গত ১৫০০ বছর ধরে উত্তেজনা রয়েছে।” তিনি বিতর্কের ইতিহাসকে অতিরঞ্জিত করে বলেন, “তবে তারা একভাবে বা অন্যভাবে এটি সমাধান করে নেবে। আমি নিশ্চিত যে আমি দুই নেতাকেই চিনি।”
মধ্যস্থতার প্রস্তাব না থাকলেও সমর্থন অব্যাহত
মধ্যস্থতার কোনো ইচ্ছা প্রকাশ না করলেও ট্রাম্প এবং তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা পহেলগাঁও জঙ্গি হামলার তীব্র নিন্দা জানাতে এবং ভারতকে সমর্থনের আশ্বাস দিতে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়েছেন। মার্কিন জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গাব্বার্ডও (fbi) এই হামলার নিন্দা জানিয়ে ভারতের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছেন। এক্স-এ পোস্ট করে তিনি লিখেছেন, “আমরা আপনাদের সঙ্গে আছি এবং এই জঘন্য হামলার জন্য দায়ীদের খুঁজে বের করতে আপনাদের সমর্থন করছি।”
ভারতের প্রতিক্রিয়া ও পরিস্থিতি
পহেলগাঁও হামলা ভারতের অভ্যন্তরে তীব্র প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের আসাম, মেঘালয় এবং ত্রিপুরায় এই হামলার প্রেক্ষিতে সামাজিক মাধ্যমে মন্তব্য করার জন্য ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই গ্রেফতারদের মধ্যে একজন বিধায়ক, সাংবাদিক, ছাত্র, আইনজীবী এবং অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক রয়েছেন। ভারত সরকার এই হামলার পেছনে থাকা অপরাধীদের বিচারের আওতায় আনতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের এই সমর্থন ভারতের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এফবিআই প্রধান, মার্কিন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি এবং অন্যান্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের এই সমর্থন ভারতের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা বহন করে যে, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তারা একা নয়।