উত্তরপ্রদেশের ফতেপুরে এমজি কলেজ মাঠে অবস্থিত আতসবাজি বাজারে সোমবার দুপুরে ভয়াবহ আগুন লেগে অন্তত ৬৫–৭০টি দোকান সম্পূর্ণ ভস্মীভূত হয়েছে। কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী, কোটি কোটি টাকার আতসবাজি এক ঝলকেই আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। একই সঙ্গে কয়েক ডজন দুইচাকার যানবাহনও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তবে কোনো প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
আগুনের সূত্রপাত ও বিস্তার
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, দুপুর ১২.৩০টার দিকে একটি আতসবাজির দোকানে শর্ট–সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে পাশের সব দোকানে, যা আতসবাজিতে ভর্তি ছিল। তীব্র উত্তেজনা ও বিস্ফোরণের শব্দে বাজারে এক চরম আতঙ্ক সৃষ্টি হয়, এবং ধোঁয়ার ঘন কুয়াশা পুরো এলাকায় নেমে আসে।
ফতেপুর এসপি অনুপ কুমার সিং বলেন, “এপর্যন্ত কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। আমাদের প্রথম লক্ষ্য আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা। আগুনের কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দায়িত্বহীনদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
চিফ ফায়ার অফিসার জইবীর সিং জানিয়েছেন, মাত্র ১৫–২০ মিনিটের মধ্যে পুরো বাজার আগুনে আচ্ছন্ন হয়ে যায়। তিনি বলেন, “৬৫–৭০টি দোকান এবং দুই ডজনেরও বেশি দু’চাকার যানবাহন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে। তবে সৌভাগ্যক্রমে কোনও প্রাণহানি ঘটেনি।”
উদ্ধারকাজ ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ Fatehpur Firecracker Market Fire
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বালি, জল ও অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।
তবে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, ফায়ার টেন্ডার ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে প্রায় ২০ মিনিট সময় নেন, যদিও ফায়ার স্টেশন মাত্র ২০০ মিটার দূরে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী সতীশ বলেন, “বাজারটি মাত্র আধা ঘণ্টা আগে চালু হয়েছিল। ১৫ মিনিটের মধ্যেই সব ধ্বংস হয়ে গেল। আমরা কেবল আমাদের জীবন রক্ষা করতে পেরেছি।”
অন্য এক দোকানীর অভিযোগ, তার স্টলে ৮ লাখ টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছিল, যা আগুনে সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট রবীন্দ্র সিং এবং এসপি ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। জেলা প্রশাসন আগুনের প্রকৃত কারণ ও ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের দ্রুত সহায়তা প্রদানেরও আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
BJP জেলা সভাপতি মুখলাল পাল ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে অভিহিত করেছেন এবং অভিযোগ তুলেছেন, ফায়ার টেন্ডারের বিলম্বের জন্য দায়িত্বজ্ঞানহীনতার প্রশ্ন ওঠা উচিত।