ফরিদাবাদ: যৌথ অভিযানে নস্যাৎ বৃহৎ নাশকতার ছক। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) এবং ফরিদাবাদ পুলিশ যৌথভাবে অভিযান চালিয়ে রবিবার উদ্ধার করে প্রায় ৩৫০ কেজি বিস্ফোরক পদার্থ, একটি একে-৪৭ রাইফেল এবং বিপুল পরিমাণ গুলি-বারুদ। ধাউজ গ্রামের একটি ভাড়া বাড়ি থেকে এই বিস্ফোরক মজুতের খবর মেলায় অভিযান চালানো হয়।
তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, উদ্ধার অভিযানের সূত্রপাত হয় জম্মু ও কাশ্মীরে গ্রেফতার হওয়া সন্দেহভাজনদের জেরা থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে। তদন্তে উঠে আসে, ফরিদাবাদের আল-ফলাহ মেডিক্যাল কলেজের ছাত্র ড. মুজাহিল শাকিল, যিনি মূলত জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দা, তিনি গত তিন মাস ধরে ধাউজ গ্রামের ওই বাড়িটি ভাড়া নিয়ে সেখানে বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক মজুত করেছিলেন।
অভিযানে উদ্ধার হয়েছে ১৪ ব্যাগ অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট (ওজন প্রায় ১০০ কেজি), ৮৪টি লাইভ কার্টিজ, একটি একে-৪৭ রাইফেল, টাইমার, রাসায়নিক দ্রবণসহ মোট ৪৮টি আইটেম, যা তদন্তকারীদের মতে আইইডি তৈরিতে ব্যবহারযোগ্য।
অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট উদ্ধার Faridabad Terror Plot Foiled
ফরিদাবাদ পুলিশের কমিশনার সতেন্দ্র গুপ্ত জানিয়েছেন, “এটি আরডিএক্স নয়, বরং অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট।” তিনি আরও বলেন, “অভিযানটি সম্পূর্ণ হয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের দল, আইবি এবং স্থানীয় পুলিশের সমন্বয়ে। ঘটনাটি নিয়ে সকাল ১১টায় বিস্তারিত জানাতে সাংবাদিক বৈঠক করা হবে।”
তদন্তে জানা গিয়েছে, ড. শাকিলকে ৩০ অক্টোবর গ্রেফতার করে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ, তাঁর সহযোগী ড. আদিল আহমদ রাঠার–কে পাকড়াও করার পর। এরপর রবিবার সকালে তাকে ফরিদাবাদে এনে গোপন মজুত সামগ্রী শনাক্ত ও উদ্ধার করা হয়।
বড়সড় নাশকতার ছক বানচাল
এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই উদ্ধার অভিযানে একটি বড়সড় নাশকতার ছক ভেস্তে গিয়েছে। উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক দিয়ে একাধিক উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন আইইডি তৈরি করা সম্ভব ছিল।” প্রাথমিক ফরেনসিক পরীক্ষায় উদ্ধার সামগ্রীর বিস্ফোরক গুণাগুণ নিশ্চিত হয়েছে। সামগ্রীগুলি বিস্তারিত বিশ্লেষণের জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এই নেটওয়ার্কের সঙ্গে আন্তঃসীমান্ত যোগসূত্রের ইঙ্গিত। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি ইতিমধ্যেই অর্থের উৎস এবং সম্ভাব্য ‘হ্যান্ডলার’-দের সন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে।
তদন্তে শীঘ্রই ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ) যোগ দিতে পারে বলে পুলিশের শীর্ষ মহল সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশের এক সিনিয়র অফিসার বলেন, “এটি নিঃসন্দেহে এক বড় সাফল্য। এই অভিযান না হলে উত্তর ভারতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ভয়াবহ হামলার আশঙ্কা ছিল।”
