ভক্তদের ভিড় সামলাতে হিমশিম বিমানবন্দর, লাঠিচার্জ পুলিশের

গুয়াহাটি: অসমের সঙ্গীতশিল্পী জুবিন গার্গ (Zubeen Garg) সিঙ্গাপুরে সাঁতারের সময় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।  শনিবার রাতেই তাঁর মরদেহ দিল্লি আসে। রবিবার ভোরে নিয়মিত বিমানে সেই মরদেহ…

zubeen garg death mystery

গুয়াহাটি: অসমের সঙ্গীতশিল্পী জুবিন গার্গ (Zubeen Garg) সিঙ্গাপুরে সাঁতারের সময় দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান।  শনিবার রাতেই তাঁর মরদেহ দিল্লি আসে। রবিবার ভোরে নিয়মিত বিমানে সেই মরদেহ নিয়ে আসা হয় গুয়াহাটিতে। প্রিয় শিল্পীর শেষযাত্রা উপলক্ষে সকাল থেকেই ভিড় জমে যায় বিমানবন্দরে। হাজার হাজার মানুষ প্রিয় গায়কের শেষ ঝলক দেখার আশায় ভিড় জমালে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়। পুলিশকে ভিড় নিয়ন্ত্রণে হালকা লাঠিচার্জ পর্যন্ত করতে হয়।

Advertisements

মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নিজে দিল্লি থেকে মরদেহ সঙ্গে নিয়ে আসেন। বিমানবন্দরে প্রিয় শিল্পীর কফিন গ্রহণ করেন তাঁর স্ত্রী গারিমা শইকিয়া। বিমানবন্দর থেকে মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় শিল্পীর নিজ বাড়িতে। পরিবারের সদস্যরা সেখানে প্রায় দেড় ঘণ্টা সময় পান শেষবারের মতো প্রিয়জনকে বিদায় জানানোর জন্য।

Advertisements

এরপর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় অরুণ ভোজেশ্বর বড়ুয়া ক্রীড়া কমপ্লেক্সে। সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সাধারণ মানুষ সেখানে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ভক্তদের ভিড়ে ভাসতে থাকে গোটা গুয়াহাটি। কারও হাতে ফুল, কারও হাতে ব্যানার—সবার মুখে একটাই স্লোগান, “জুবিন দা অমর হউক।”

মুখ্যমন্ত্রী জানান, “জুবিন গার্গ ইয়ট ভ্রমণের সময় সাঁতারে নেমেছিলেন। তাঁকে লাইফ জ্যাকেট পরতে বলা হয়েছিল। তিনি প্রথমে জ্যাকেট পরলেও কয়েক সেকেন্ড পর সেটি খুলে ফেলেন। পরে তাঁকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে CPR দেওয়া হয়। সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।”

আসাম সরকার ইতিমধ্যেই তিন দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, সরকারি ভোজ, এবং উৎসবমুখী কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য শিবির, বৃক্ষরোপণ ইত্যাদি জনসেবামূলক কার্যক্রম চালু থাকবে।

রাজ্য মন্ত্রিসভা রবিবার সন্ধ্যায় বৈঠকে বসে শেষকৃত্যের স্থান নির্ধারণ করবে। পরিবার এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠনের সঙ্গে আলোচনা করেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। সিঙ্গাপুর পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনাটির তদন্ত শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, যে বন্ধুবান্ধবেরা জুবিন গার্গের সঙ্গে ইয়ট ভ্রমণে ছিলেন, তাঁদেরও প্রশ্নোত্তর করা হচ্ছে।

আসামের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে জুবিন গার্গের প্রয়াণ এক অপূরণীয় ক্ষতি। ভক্তদের মতে, “আজ শুধু একজন শিল্পী নয়, এক জন আন্দোলনের কণ্ঠস্বর চলে গেলেন।” গুয়াহাটি থেকে অসমের প্রত্যন্ত গ্রাম পর্যন্ত সর্বত্র এখন শোকস্তব্ধ পরিবেশ।