Fadnavis Sends Message: ‘Modi Will Continue as Prime Minister After 2029
মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীস (fadanavis) মঙ্গলবার দৃঢ়ভাবে জানিয়েছেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ২০২৯-এর পরও দেশের নেতৃত্ব দেবেন এবং তাঁর উত্তরসূরি নিয়ে আলোচনার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। মুম্বাইয়ে ‘ইন্ডিয়া গ্লোবাল ফোরাম’-এ বক্তৃতার সময় তিনি এই মন্তব্য করেন। ফড়নবীসের এই বক্তব্য শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) নেতা সঞ্জয় রাউতের গত মাসের একটি দাবির প্রতিক্রিয়া হিসেবে এসেছে। রাউত অভিযোগ করেছিলেন যে, মোদী নাগপুরে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর সদর দফতরে গিয়েছিলেন তাঁর ‘অবসর’-এর বার্তা জানাতে।
গত ৩১ মার্চ নাগপুরে ফড়নবীসকে (fadanavis) তাঁর পূর্ববর্তী মন্তব্য সম্পর্কে প্রশ্ন করা হয়েছিল। সেদিন তিনি বলেছিলেন, “আমাদের সংস্কৃতিতে, যখন বাবা বেঁচে থাকেন, তখন উত্তরাধিকার নিয়ে আলোচনা করা অনুচিত। এটা মুঘল সংস্কৃতি। এখনও সেই সময় আসেনি।”
ফড়নবীস (fadanavis)স্পষ্ট করে বলেন
মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেন, “আমি বলেছি, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উত্তরসূরি নিয়ে ভাবার এখনই সময় নয়। কারণ, ২০২৯ সালে মোদী আবার প্রধানমন্ত্রী হবেন।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, “মোদী আমাদের নেতা এবং তিনি অনেক বছর ধরে দেশকে নেতৃত্ব দেবেন।”
রাউতের অভিযোগ
গত মাসে রাউত দাবি করেছিলেন যে, মোদী ৩০ মার্চ নাগপুরে আরএসএস সদর দফতরে গিয়েছিলেন ‘সেপ্টেম্বরে তাঁর অবসরের আবেদন লিখতে’। তিনি বলেছিলেন, “মোদীর উত্তরসূরি আরএসএস নির্ধারণ করবে। এজন্যই মোদীকে সেখানে ডাকা হয়েছিল এবং বন্ধ দরজার আড়ালে আলোচনা হয়েছে।
ইঙ্গিত খুবই স্পষ্ট। সংঘ পরবর্তী নেতা ঠিক করবে এবং সেই নেতা সম্ভবত মহারাষ্ট্রের হবেন।” রাউত আরও দাবি করেন, মোদী তাঁর তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হলেও, এই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি ৭৫ বছর বয়সে পৌঁছাবেন। তিনি ইঙ্গিত দেন যে, বিজেপি-তে ৭৫ বছর বয়সে অবসর নেওয়ার কিছু নেতার প্রথা রয়েছে, এবং মোদীর ক্ষেত্রেও তা প্রযোজ্য হতে পারে।
রাউতের এই মন্তব্যের পর থেকে রাজনৈতিক মহলে তীব্র আলোচনা শুরু হয়। তিনি বলেছিলেন, “আরএসএস জাতীয় নেতৃত্বে পরিবর্তন চায়। মোদীর সময় শেষ। সংঘ এখন পরবর্তী বিজেপি সভাপতি নির্বাচনেও ভূমিকা রাখতে চায়।” তবে, এই দাবির কোনও স্পষ্ট প্রমাণ তিনি পেশ করেননি।
ফড়নবীসের প্রত্যাখ্যান
ফড়নবীস (fadanavis) রাউতের এই অভিযোগকে সম্পূর্ণ খারিজ করে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “মোদী আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং ২০২৯-এও তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। তাঁর উত্তরসূরি খুঁজে বের করার কোনও প্রয়োজন নেই। গোটা দেশ তাঁকে ২০২৯-এ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চায়।” তিনি রাউতের বক্তব্যকে ‘মুঘল সংস্কৃতির’ সঙ্গে তুলনা করে বলেন, “আমাদের ভারতীয় সংস্কৃতিতে এমন আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক।” ফড়নবীসের এই মন্তব্য বিজেপি-র অভ্যন্তরীণ ঐক্য এবং মোদীর নেতৃত্বের প্রতি তাঁর দৃঢ় সমর্থনের ইঙ্গিত দেয়।
এছাড়া, আরএসএস-এর একজন সিনিয়র নেতা সুরেশ ‘ভাইয়্যাজি’ যোশীও রাউতের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি বলেন, “প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্থাপন নিয়ে কোনও আলোচনার কথা আমার জানা নেই।” যোশী আরও জানান, মোদীর নাগপুর সফরে আরএসএস প্রতিষ্ঠাতা কে বি হেজওয়ারের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে তাঁর স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানানো এবং মাধব নেত্রালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনই ছিল মূল উদ্দেশ্য।
এবার আইনি পরামর্শ নিতে অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যয়ের দ্বারস্থ চাকরিহারাদের একাংশ
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
মোদী গত ৩০ মার্চ নাগপুরে আরএসএস সদর দফতরে গিয়েছিলেন এবং সেখানে সংঘ প্রধান মোহন ভাগবত, ফড়নবীস এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি উপস্থিত ছিলেন। এটি ছিল ১১ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকার পর তাঁর প্রথম নাগপুর সফর। মোদী সেখানে আরএসএস-কে ভারতের অমর সংস্কৃতির ‘বটবৃক্ষ’ বলে প্রশংসা করেন। তবে, রাউত এই সফরকে অবসরের আলোচনার সঙ্গে যুক্ত করে বিতর্কের সূত্রপাত করেন।
বিজেপি নেতারা বারবার দাবি করেছেন যে, মোদী ২০২৯-এর লোকসভা নির্বাচনেও দলকে নেতৃত্ব দেবেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ গত বছর বলেছিলেন, “মোদী ২০২৯-এও এনডিএ-কে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনবেন।” এই প্রেক্ষাপটে ফড়নবীসের মঙ্গলবারের বক্তব্য দলের অভ্যন্তরীণ আস্থার প্রতিফলন।
বিতর্কের প্রভাব
রাউতের মন্তব্য এবং ফড়নবীসের প্রতিক্রিয়া রাজনৈতিক মহলে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিরোধী দলগুলো প্রায়ই মোদীর বয়স এবং অবসর নিয়ে প্রশ্ন তুলে থাকে। গত লোকসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির নেতা অরবিন্দ কেজরিওয়াল দাবি করেছিলেন যে, মোদীর জায়গায় অমিত শাহকে প্রধানমন্ত্রী করার পরিকল্পনা রয়েছে। তবে, বিজেপি এই সমস্ত অভিযোগকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে খারিজ করে এসেছে।
অন্যদিকে, ভারতীয় সংবিধানে প্রধানমন্ত্রীর জন্য কোনও সর্বোচ্চ বয়সসীমা নির্ধারিত নেই। শুধুমাত্র ন্যূনতম বয়সের শর্ত রয়েছে—লোকসভার জন্য ২৫ এবং রাজ্যসভার জন্য ৩০। তাই মোদীর নেতৃত্ব নিয়ে আইনি কোনও বাধা নেই।
ফড়নবীসের এই দৃঢ় বক্তব্য মোদীর নেতৃত্বে বিজেপি-র আস্থা এবং ২০২৯-এর নির্বাচনী পরিকল্পনার ইঙ্গিত দেয়। রাউতের দাবি যদিও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, তবে আরএসএস এবং বিজেপি উভয়ই এটি প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামী দিনে এই বিতর্ক কীভাবে রাজনৈতিক সমীকরণকে প্রভাবিত করবে, তা দেখার বিষয়।