নয়াদিল্লি, ১০ নভেম্বর: ভারত তার বায়ু শক্তি বজায় রাখার জন্য বেশ কয়েকটি বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে (India fighter jet deal)। তাই, তারা উন্নত বায়ু প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পাশাপাশি তাদের প্রাণঘাতী ক্ষমতা বাড়ানোর জন্য পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানের উপর বাজি ধরছে। ভারত বর্তমানে পঞ্চম প্রজন্মের AMCA স্টিলথ ফাইটার জেট তৈরি করছে। তবে এটি সম্পূর্ণরূপে কার্যকর হতে কিছুটা সময় লাগবে। এই ঘাটতি পূরণের জন্য, ভারতের দুটি ফাইটার জেট বিবেচনা করা উচিত: আমেরিকান F-35 এবং রাশিয়ান Su-57। উভয়ই তাদের অনন্য বৈশিষ্ট্যের কারণে প্রকৃত আকাশ শিকারী হিসেবে পরিচিত। এই কারণেই ভারত রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার কূটনৈতিক সম্পর্ককে মাথায় রেখে উভয় বিমানের প্রতি আগ্রহী।
ভারতের জন্য এটি কেবল বিমান কেনার সিদ্ধান্ত নয়, বরং এটি কৌশলগত চাহিদা, মূল্য এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তির ভারসাম্য বজায় রাখার সিদ্ধান্ত। চিন ও পাকিস্তানের বাড়তে থাকা বায়ু হুমকির মুখোমুখি হওয়ায় এই আলোচনা আরও তীব্র হয়েছে।
পঞ্চম প্রজন্মের জন্য ভারতের পরিকল্পনা কী?
পঞ্চম প্রজন্মের যুদ্ধবিমানগুলি তাদের স্টিলথ ক্ষমতা, উন্নত সেন্সর এবং নেটওয়ার্কযুক্ত যুদ্ধ ব্যবস্থা দ্বারা চিহ্নিত। ভারতের নিজস্ব পঞ্চম প্রজন্মের বিমান AMCA অর্থাৎ অ্যাডভান্সড মিডিয়াম কমব্যাট এয়ারক্রাফ্টের বিলম্বের পরিপ্রেক্ষিতে, বিমান বাহিনী শীঘ্রই এই বিদেশী বিকল্পগুলি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছে।
F-35 এবং Su-57 উভয়ই তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে চমৎকার, কিন্তু তাদের নকশা দর্শন এবং খরচের মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে। F-35 তার উন্নতমানের স্টিলথ এবং সেন্সরের জন্য পরিচিত, অন্যদিকে Su-57 তার অসাধারণ গতি এবং তত্পরতার জন্য বিশ্বব্যাপী পরিচিত। এই পরিস্থিতিতে, ভারতকে এখন সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে এই দুটি বিমানের মধ্যে কোনটি তার পরিচালনাগত চাহিদা এবং বাজেটের সাথে খাপ খাবে, বিশেষ করে যেহেতু ক্রয় প্রক্রিয়াটি ত্বরান্বিত করা হয়েছে।
ভারতের জন্য সিদ্ধান্তটি কেন কঠিন?
ভারতীয় বিমান বাহিনীর জন্য পছন্দটি কেবল প্রযুক্তিগত নয়, ভূ-রাজনৈতিকও। রাশিয়া ঐতিহ্যগতভাবে প্রযুক্তি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে আরও উন্মুক্ত, যেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র F-35 এর সংবেদনশীল প্রযুক্তির উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখে। ভারত তার স্বদেশী AMCA প্রোগ্রামের জন্য প্রযুক্তিটি চায়।
ইতিমধ্যে, ভারত ইতিমধ্যেই প্রচুর সংখ্যক রাশিয়ান বিমান ব্যবহার করে, যার মধ্যে রয়েছে Su-30MKI এবং MiG সিরিজ, তাই Su-57 রক্ষণাবেক্ষণ করা সহজ হতে পারে। F-35 এর জন্য পশ্চিমী মানের নতুন পরিকাঠামোর প্রয়োজন হবে।
ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে, F-35 ক্রয় করলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে, অন্যদিকে Su-57 ঐতিহ্যবাহী রাশিয়ান সম্পর্ক বজায় রাখবে। তবে, রাশিয়া থেকে ক্রয় করলে মার্কিন CAATSA নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকিও রয়েছে।
সামগ্রিকভাবে, ভারতকে তার চাহিদা অনুসারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে তারা আরও স্টিলথ অর্থাৎ F-35 নাকি Su-57 চাইবে, যাতে বেশি গতি, ভারী পেলোড এবং কম খরচ হয়। প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে Su-57 চুক্তিটি কেবল সাশ্রয়ীই হবে না বরং ভারতীয় বিমান বাহিনীর চাহিদাও পুরোপুরি পূরণ করবে।



