অসমের (Assam) করবি আঙ্গলং পুলিশ একটি বড় সাফল্য অর্জন করেছে। রবিবার পুলিশ ১০ জন “ভ্রষ্টপথে যাওয়া যুবক”কে গ্রেফতার করেছে, যারা একটি স্বনির্ধারিত চরমপন্থী গোষ্ঠী গঠনের চেষ্টা করছিল। এই অভিযানে পুলিশ বিভিন্ন ধরনের অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে, যার মধ্যে রয়েছে একটি একে-৪৭ রাইফেল, তিনটি পিস্তল, একটি এসবি বন্দুক , একটি গ্রেনেড এবং বিভিন্ন ধরনের গুলি।
কর্তৃপক্ষ (Assam) জানিয়েছে, এই যুবকরা দিমা হালাম ডাওগাহ (ইউনাইটেড) বা ডিএইচডি(ইউ) নামে একটি নতুন চরমপন্থী গোষ্ঠী গঠনের পরিকল্পনা করছিল। পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার শান্তি ও উন্নয়নের দৃষ্টিভঙ্গির সাথে সামঞ্জস্য রেখে করবি আঙ্গলং পুলিশ গোপন তথ্যভিত্তিক অভিযান চালিয়েছে এবং একইসঙ্গে স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছে। ফলে এই ১০ জন ভ্রষ্টপথে যাওয়া যুবক অস্ত্র সমেত আত্মসমর্পণ করেছে। পুলিশের এই সাফল্য অসমে শান্তি প্রতিষ্ঠার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
অভিযানের বিস্তারিত (Assam)
করবি আঙ্গলং (Assam) পুলিশের এই অভিযানটি গোপন তথ্যের ভিত্তিতে পরিকল্পিত ছিল। পুলিশ জানিয়েছে যে এই যুবকরা স্থানীয় দিমাসা সম্প্রদায়ের নামে একটি নতুন চরমপন্থী গোষ্ঠী গঠনের চেষ্টা করছিল, যা রাজ্যের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি ছিল। অভিযানের ফলে উদ্ধারকৃত অস্ত্রশস্ত্রের মধ্যে একটি একে-৪৭ রাইফেল, তিনটি পিস্তল, একটি সিঙ্গল ব্যারেল গান, একটি গ্রেনেড এবং বিভিন্ন ক্যালিবারের গুলি রয়েছে।
পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “এই যুবকরা ভ্রষ্টপথে গিয়েছিল, কিন্তু আমাদের গোপন তথ্যভিত্তিক অভিযান এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে তাদের আত্মসমর্পণ করানো সম্ভব হয়েছে। এটি রাজ্যে শান্তি ফিরিয়ে আনার জন্য একটি বড় ধাপ।” তিনি আরও বলেন যে এই অভিযান মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অন্যান্য খবর
এদিনই সোনিতপুর পুলিশ অবৈধ মদ বিরুদ্ধে একটি অভিযান চালিয়ে ১৫ ধরনের মদ উদ্ধার করেছে। উদ্ধারকৃত মদের মধ্যে রয়েছে ১৭টি কিংফিশার বিয়ার (৬৫০ মিলি), ১৫টি কিংফিশার ক্যান বিয়ার (৫০০ মিলি), ২০টি নম্বর ১ ওয়িস্কি (১৮০ মিলি), ২২টি আইকনিক হোয়াইট ওয়িস্কি (১৮০ মিলি), ১০টি আইবি ওয়িস্কি (১৮০ মিলি), ২১টি ওল্ড মনক রাম (১৮০ মিলি), ১৬টি নম্বর ১ রাম (১৮০ মিলি), ৫টি ওল্ড মনক রাম (৩৭৫ মিলি), ৫০টি কেডি ৫০ ওয়িস্কি (৩৭৫ মিলি), ৩টি নম্বর ১ ওয়িস্কি (৩৭৫ মিলি) এবং ১১টি এসি ব্ল্যাক ওয়িস্কি (১৮০ মিলি)। এই অভিযান আসামে অবৈধ মদের ব্যবসায় বাধা সৃষ্টি করতে সফল হয়েছে।
অপরাধ হ্রাস ও দণ্ডমূলক কর্মের উন্নতি
অসমের (Assam) পুলিশ মহানির্দেশক হারদি সিংহ ১৯ জুন রাজ্যের অপরাধ হারে উল্লেখযোগ্য হ্রাস ঘটার কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান যে প্রতি লক্ষ জনবসতি অনুযায়ী অপরাধ হার ২০১৯ সালে ৩৮৫.৮ থেকে ২০২৪ সালে ১৩৯.৩ এবং বর্তমানে ১২৭.৬-এ নেমে এসেছে।
মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভার পর একটি পোস্টে তিনি বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার নেতৃত্বে আমরা বিচার প্রদান এবং নিরাপদ আসাম গড়ার প্রতিশ্রুতি পালন করছি।” তিনি আরও জানান যে রাজ্যের দণ্ডমূলক হার ২০২০ সালে ৫.৫ শতাংশ থেকে ২০২৪ সালে ২২.৯৫ শতাংশ এবং বর্তমানে ২৬.০৯ শতাংশে উন্নতি পেয়েছে।
রাজনীতিতে আসছেন ‘মহারাজ’? জানিয়ে দিলেন সৌরভ
পরিস্থিতির বিশ্লেষণ
করবি আঙ্গলং (Assam) এলাকায় চরমপন্থী গোষ্ঠী গঠনের চেষ্টা আসামের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চলে সাম্প্রতিক কিছুদিনের শান্তির পরিপ্রেক্ষিতে উদ্বেগজনক। তবে পুলিশের দ্রুত পদক্ষেপ এবং আত্মসমর্পণের মাধ্যমে এই হুমকি কাটিয়ে উঠতে সফল হয়েছে। দিমা হালাম ডাওগাহ (ইউনাইটেড) এর মতো গোষ্ঠীগুলো অতীতে এই অঞ্চলে সংঘাত সৃষ্টি করেছিল, তবে ২০১৩ সালে এর অধিকাংশ সদস্য আত্মসমর্পণ করেছিল। এই নতুন চেষ্টা তাদের পুনর্গঠনের ইঙ্গিত দিতে পারে, যা পুলিশের জন্য চ্যালেঞ্জ।
অবৈধ মদ উদ্ধার এবং অপরাধ হারে হ্রাস আসাম পুলিশের কার্যক্ষমতার একটি প্রমাণ। তবে এই অঞ্চলে চরমপন্থা ও অবৈধ কার্যকলাপ সম্পূর্ণ দমন করতে সরকারকে আরও তীব্র পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগ এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রম এই সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
করবি আঙ্গলং (Assam) পুলিশের এই সাফল্য আসামে শান্তি ও নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠার দিকে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। অস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার এবং যুবকদের আত্মসমর্পণ রাজ্যে চরমপন্থার পুনরুত্থান প্রতিরোধে সহায়ক হবে। এর পাশাপাশি অবৈধ মদ বিরুদ্ধে অভিযান এবং অপরাধ হারে হ্রাস পুলিশের দক্ষতার পরিচয় দেয়। তবে দীর্ঘমেয়াদী শান্তি নিশ্চিত করতে সরকারকে স্থানীয় উন্নয়ন এবং সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা বাড়াতে হবে।