পাঞ্জাব(punjab) সরকার রাজস্থানের মরুভূমি অঞ্চলে মোতায়েন সামরিক বাহিনীর চাহিদা মেটাতে রাজ্যটিকে অতিরিক্ত জল সরবরাহ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শনিবার জারি করা একটি সরকারি বিবৃতিতে মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মানকে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, রাজস্থান সরকার পাঞ্জাবের (punjab) কোটার অংশ থেকে অতিরিক্ত জলের জন্য অনুরোধ জানিয়েছে, কারণ “রাজস্থান সীমান্তে মোতায়েন সেনাবাহিনীর অতিরিক্ত জলের প্রয়োজন।” মান জোর দিয়ে বলেছেন, জাতীয় স্বার্থের বিষয়ে পাঞ্জাব কখনোই পিছপা হয় না।
বিবৃতিতে মান বলেন (punjab)
বিবৃতিতে মান বলেন, “যখনই জাতীয় স্বার্থের প্রশ্ন ওঠে, পাঞ্জাব (punjab) কখনো পিছিয়ে থাকে না। শুধু জল নয়, জাতীয় স্বার্থের জন্য পাঞ্জাব (punjab) তার রক্তও দিতে প্রস্তুত।” তিনি আরও বলেন, দেশের সেনাদের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে তিনি তাৎক্ষণিকভাবে রাজস্থানের জন্য অতিরিক্ত জল ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
এই সিদ্ধান্তটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন পাঞ্জাব (punjab) ও হরিয়ানার মধ্যে জল বণ্টন নিয়ে ইতিমধ্যেই উত্তেজনা চলছে। তবে, মুখ্যমন্ত্রী মান পুনর্ব্যক্ত করেছেন যে, দেশের সীমানা রক্ষাকারী সেনাদের কল্যাণের ক্ষেত্রে পাঞ্জাব জাতীয় প্রয়োজনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়।
গুলাব চাঁদ কাটারিয়ার ডাকা একটি সর্বদলীয় বৈঠক
এই ঘোষণাটি পাঞ্জাবের (punjab) রাজ্যপাল গুলাব চাঁদ কাটারিয়ার ডাকা একটি সর্বদলীয় বৈঠকের পর এসেছে। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মান পাঞ্জাবের জন্য একটি বিশেষ প্যাকেজের দাবি তুলেছেন, উল্লেখ করে যে সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলো ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার কারণে বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
তিনি বলেন, “যুদ্ধ হোক বা অন্য কোনো জরুরি পরিস্থিতি, পাঞ্জাব (punjab) এবং পাঞ্জাবিরা সবসময়ই অগ্রভাগে থাকে।” তিনি আরও যোগ করেন যে, পাঞ্জাব শুধু দেশের খাদ্য ভাণ্ডারই নয়, এটি দেশের তরবারির হাতও, কিন্তু এর অবদান প্রায়শই উপেক্ষিত হয়।
মান বলেন, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর উচিত তাদের মতভেদ ভুলে পাঞ্জাবের জন্য একটি বিশেষ প্যাকেজের দাবি জানানো, যেমনটি জম্মু ও কাশ্মীর এবং অন্যান্য রাজ্যের জন্য দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও জানান, সীমান্তবর্তী জেলাগুলোতে কর্মরত ডাক্তার, শিক্ষক, আঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং অন্যান্যদের জন্য সীমান্ত এলাকা ভাতার দাবি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে উত্থাপন করা হবে। এদিকে, মুখ্যমন্ত্রী রবিবার থেকে রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলো পরিদর্শন করবেন, যাতে সেখানকার পরিস্থিতি সরেজমিনে মূল্যায়ন করা যায়।
ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘর্ষে
এই পদক্ষেপটি ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের প্রেক্ষাপটে এসেছে। শনিবার ভারত ও পাকিস্তান স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রে গোলাগুলি ও সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করার বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এক্স-এ এক পোস্টে বলেন, ভারত সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় ও অবিচল অবস্থান বজায় রাখবে। তিনি বলেন, “ভারত ও পাকিস্তান আজ গোলাগুলি ও সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করার বিষয়ে একটি সমঝোতায় পৌঁছেছে। ভারত সন্ত্রাসবাদের সব রূপ ও প্রকাশের বিরুদ্ধে তার দৃঢ় অবস্থান অব্যাহত রাখবে।”
বিক্রম মিশ্রি সংবাদমাধ্যমকে জানান
পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি সংবাদমাধ্যমকে জানান, পাকিস্তানের সামরিক অপারেশনের মহাপরিচালক (ডিজিএমও) শনিবার বিকেল ৩:৩৫-এ তার ভারতীয় প্রতিপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন। তিনি বলেন, “উভয় পক্ষ ১৭:০০ ঘণ্টা থেকে স্থল, আকাশ এবং সমুদ্রে সমস্ত গোলাগুলি ও সামরিক পদক্ষেপ বন্ধ করতে সম্মত হয়েছে।” তিনি আরও জানান, উভয় পক্ষের ডিজিএমও আগামী ১২ মে দুপুর ১২টায় পুনরায় কথা বলবেন।
এই শান্তি চুক্তি ভারতের অপারেশন সিঁদুরের পর এসেছে, যা ৭ মে পহেলগাঁওয়ে ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ জঙ্গি হামলার জবাবে শুরু হয়েছিল। ওই হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিল। ভারত পাকিস্তান ও পাকিস্তান-অধিকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে নয়টি জঙ্গি ঘাঁটি ধ্বংস করেছিল। পাকিস্তান এর জবাবে কামান ও ড্রোন ব্যবহার করে উসকানিমূলক পদক্ষেপ নিয়েছিল।
তবে, শান্তি চুক্তি কার্যকর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তান চুক্তি লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শ্রীনগরে ব্ল্যাকআউটের মধ্যে ভারতের বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাকিস্তানি ড্রোন আটক করেছে। পাঞ্জাবের পাঠানকোট ও ফিরোজপুর এবং রাজস্থানের জয়সলমির ও বাড়মেরে সম্পূর্ণ ব্ল্যাকআউট জারি করা হয়েছে।
পাকিস্তানকে চাপে ফেলল ভারত, বন্ধ হল ইসলামাবাদের পরমাণু ফাঁকা আওয়াজ
ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের প্রতি রাজ্যের অঙ্গীকার
পাঞ্জাবের (punjab) এই সিদ্ধান্ত জাতীয় ঐক্য ও সার্বভৌমত্বের প্রতি রাজ্যের অঙ্গীকারকে তুলে ধরে। মুখ্যমন্ত্রী মান বলেন, “পাঞ্জাব শুধু জল নয়, দেশের জন্য রক্তও দিতে প্রস্তুত।” তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেশের সৈন্যদের প্রয়োজনের কথা বিবেচনা করে এই জল ছাড়া হয়েছে, যা দেশের ঐক্য, অখণ্ডতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য অপরিহার্য।
পাঞ্জাব তার ঐতিহাসিক ভূমিকাকে পুনরায় নিশ্চিত করেছে
এই পদক্ষেপের মধ্য দিয়ে পাঞ্জাব (punjab) তার ঐতিহাসিক ভূমিকাকে পুনরায় নিশ্চিত করেছে, যেখানে রাজ্যটি সবসময়ই জাতীয় সংকটে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তবে, হরিয়ানার সঙ্গে চলমান জল বণ্টন বিরোধ এবং সীমান্তে অব্যাহত উত্তেজনার মধ্যে এই সিদ্ধান্তটি রাজ্যের জন্য কৌশলগত ও রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। মান বলেন, “পাঞ্জাব কখনোই দেশের বিষয়ে পিছপা হয় না।”
এই ঘটনা ভারতের অভ্যন্তরীণ জল ব্যবস্থাপনা এবং আন্তঃরাজ্য সহযোগিতার গুরুত্বকেও তুলে ধরে। রাজস্থানের সামরিক চাহিদা মেটানোর জন্য পাঞ্জাবের এই ত্যাগ জাতীয় স্বার্থের প্রতি রাজ্যের প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরালো করে। তবে, সীমান্তে শান্তি টিকিয়ে রাখা এবং আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করা এখনও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।