Explosive Statement by Mahua on BJP’s Market Closure in Chittaranjan Park
দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কে, যেখানে বাঙালি সম্প্রদায়ের প্রাধান্য রয়েছে, সেখানে মাছ ও মাংসের দোকান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে মঙ্গলবার অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ মহুয়া মৈত্র (mahua)। তিনি একটি ভিডিও প্রকাশ করে দাবি করেছেন যে, ‘বিজেপির গুন্ডারা’ এলাকার মাছ ব্যবসায়ীদের মন্দিরের পাশে ব্যবসা চালানোর জন্য হুমকি দিচ্ছে।
মহুয়া মৈত্রের (mahua) বিরুদ্ধে অভিযোগ
তবে, বিজেপি পাল্টা জবাব দিয়ে মহুয়া মৈত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছে যে, তিনি একটি ‘বিকৃত’ ভিডিও প্রকাশ করে এলাকায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। মহুয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতে দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, তাদের কাছে এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জমা পড়েনি। তবে, বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে বলে তারা নিশ্চিত করেছে।
মহুয়া মৈত্র (mahua) যে ভিডিওটি এক্স (সাবেক টুইটার)-এ পোস্ট করেছেন, তাতে একজন গেরুয়া টি-শার্ট ও জিন্স পরা ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে। তিনি বলছেন, চিত্তরঞ্জন পার্কের মার্কেট নং ১-এ মন্দিরের ঠিক পাশে মাছের বাজার বসানো ভুল।
এই এলাকা, যা সংক্ষেপে ‘সিআর পার্ক’ নামে পরিচিত, দিল্লির অন্যতম অভিজাত এলাকা হিসেবে গণ্য হয়। ভিডিওতে ওই ব্যক্তি বলেন, “বাজারটা মন্দিরের ঠিক পাশে। এটা ভুল। এতে সনাতনীদের ভাবাবেগে আঘাত লাগছে। সনাতন ধর্ম বলে, আমাদের কাউকে হত্যা করা উচিত নয়… মাছ আর মাংস দেবতাদের উৎসর্গ করা হয়, এটা সম্পূর্ণ কাল্পনিক। শাস্ত্রে এর কোনো প্রমাণ নেই। গোটা দেশ এটা দেখছে।”
মহুয়া মৈত্র এই ভিডিওর সঙ্গে দাবি করেছেন
মহুয়া মৈত্র (mahua) এই ভিডিওর সঙ্গে দাবি করেছেন যে, বিজেপি সমর্থিত কিছু ব্যক্তি এলাকার মাছ ব্যবসায়ীদের উপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং তাদের দোকান বন্ধ করতে বাধ্য করছে। তিনি এটিকে ধর্মীয় স্বাধীনতার উপর হামলা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তবে, বিজেপি এই অভিযোগকে ‘মিথ্যা’ ও ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে। দলের মুখপাত্ররা বলছেন, মহুয়া ইচ্ছাকৃতভাবে একটি সম্পাদিত ভিডিও প্রকাশ করেছেন, যার উদ্দেশ্য হলো সিআর পার্কের শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা।
চিত্তরঞ্জন পার্ক দীর্ঘদিন ধরে বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের একটি কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। এখানকার বাজারে মাছ ও মাংসের দোকানগুলো স্থানীয় বাসিন্দাদের দৈনন্দিন জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। বিশেষ করে দুর্গাপুজোর মতো উৎসবের সময় এই বাজারগুলোতে প্রচুর ভিড় হয়।
মহুয়ার অভিযোগের পর এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কেউ কেউ বলছেন, মন্দিরের পাশে মাছের বাজার থাকা নিয়ে কখনো কোনো সমস্যা হয়নি। অন্যদিকে, কিছু ব্যক্তি মনে করছেন, এই বিষয়টি অযথা রাজনৈতিক রঙ দেওয়া হচ্ছে।
IPL 2025: পঞ্জাব-চেন্নাই ম্যাচের পর অরেঞ্জ ও পার্পল ক্যাপের দৌড়ে এগিয়ে কে?
বিজেপির একজন স্থানীয় নেতা বলেন
বিজেপির একজন স্থানীয় নেতা বলেন, “মহুয়া মৈত্র যে ভিডিওটি পোস্ট করেছেন, তা সত্যের অংশবিশেষ মাত্র। এটি এমনভাবে সম্পাদনা করা হয়েছে যাতে বিজেপির বিরুদ্ধে মানুষের ক্ষোভ জন্মায়। আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী, এবং এ ধরনের অভিযোগ আমাদের দলের নীতির বিরুদ্ধে।”
দিল্লি পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন
তিনি আরও দাবি করেন যে, এলাকার ব্যবসায়ীরা স্বেচ্ছায় তাদের দোকান চালাচ্ছেন, এবং কেউ তাদের উপর জোর খাটাচ্ছে না। দিল্লি পুলিশের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, “আমরা এখনও পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে, আমরা ঘটনাটি খতিয়ে দেখছি। প্রয়োজনে স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হবে।” পুলিশের তরফে এটাও বলা হয়েছে যে, তারা এলাকায় শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক তরজা তীব্র হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থকরা মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়ে বলছেন, এটি সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার উপর হস্তক্ষেপের একটি উদাহরণ। অন্যদিকে, বিজেপি এটিকে ‘বিরোধীদের প্রোপাগান্ডা’ হিসেবে চিহ্নিত করেছে।
সামাজিক মাধ্যমে এই বিষয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে, এবং অনেকে এই ঘটনার পেছনে সত্য উদঘাটনের দাবি জানাচ্ছেন। চিত্তরঞ্জন পার্কের এই ঘটনা আপাতত শিরোনামে রয়েছে। তদন্তের ফলাফলের উপর নির্ভর করছে, এই বিতর্ক কোন দিকে মোড় নেবে।