ঈদের আগেই বিস্ফোরণ মহারাষ্ট্রের মসজিদে

মহারাষ্ট্রের (maharashtra) বীড জেলার একটি মসজিদে রবিবার ভোরে জেলটিন স্টিক দিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের মতে, একজন ব্যক্তি মসজিদে এই জেলটিন স্টিকগুলো রাখায় বিস্ফোরণ টি…

mosque explosion in maharashtra

মহারাষ্ট্রের (maharashtra) বীড জেলার একটি মসজিদে রবিবার ভোরে জেলটিন স্টিক দিয়ে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। পুলিশের মতে, একজন ব্যক্তি মসজিদে এই জেলটিন স্টিকগুলো রাখায় বিস্ফোরণ টি ঘটেছে। ঘটনাটি ভোর ২:৩০ টার দিকে গেওরাই তহসিলের অর্ধ মাসলা গ্রামে ঘটেছে। এই বিস্ফোরণে কোনো হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও মসজিদের অভ্যন্তরীণ অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানা গেছে।

   

আরো দেখুন Xiaomi Civi 5 Pro-তে থাকবে 67W ফাস্ট চার্জিং, শক্তিশালী ব্যাটারি সহ শীঘ্রই লঞ্চ হতে চলেছে

Advertisements

ঘটনার বিবরণ

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার গভীর রাতে এই বিস্ফোরণের ফলে গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। বিস্ফোরণের তীব্রতায় মসজিদের দেয়াল ও মেঝেতে ফাটল ধরেছে এবং অভ্যন্তরীণ কাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার পরপরই বীড জেলা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, জেলটিন স্টিকগুলো মসজিদের দরজা ও জানালার কাছে রাখা হয়েছিল, যা সাধারণত বিস্ফোরক হিসেবে কূপ খনন বা পাহাড় কাটার কাজে ব্যবহৃত হয়।

বীডের (maharashtra) পুলিশ সুপারিন্টেনডেন্ট এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, “আমরা দুজন সন্দেহভাজনকে হেফাজতে নিয়েছি। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং বিস্ফোরণের উদ্দেশ্য ও পরিকল্পনা সম্পর্কে তদন্ত করা হচ্ছে।” তিনি আরও বলেন, “এটি একটি গুরুতর ঘটনা, তবে এতে কেউ আহত হয়নি, যা আমাদের জন্য স্বস্তির বিষয়।”

পুলিশের পদক্ষেপ

ঘটনার পর পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে এলাকাটি ঘিরে ফেলে। বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞদের একটি দল ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে এবং তারা জেলটিন স্টিকের উৎস ও বিস্ফোরণের প্রকৃতি নির্ধারণের চেষ্টা করছে। পুলিশের মতে, এই ধরনের জেলটিন স্টিক সাধারণত নির্মাণ কাজে ব্যবহৃত হয়, তবে এটি কীভাবে মসজিদে এল এবং কে এটি রেখেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। দুজন আটক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত এগিয়ে চলছে।

পুলিশ জনসাধারণের কাছে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, “আমরা সবাইকে শান্ত থাকতে এবং গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং আমরা এই ঘটনার পিছনের সত্য উদঘাটনের জন্য কাজ করছি।”

স্থানীয়দের প্রতিক্রিয়া (maharashtra)

অর্ধ মাসলা গ্রামের বাসিন্দারা এই ঘটনায় হতবাক। একজন গ্রামবাসী, আব্দুল রহিম বলেন, “মাঝরাতে হঠাৎ একটা বিকট শব্দে আমরা সবাই জেগে উঠি। মসজিদের দিকে ছুটে গিয়ে দেখি দেয়াল ভেঙে পড়েছে। এটা আমাদের শান্তিপূর্ণ গ্রামে কীভাবে ঘটল, বুঝতে পারছি না।” আরেকজন বাসিন্দা জানান, “এই মসজিদ আমাদের গ্রামের কেন্দ্রবিন্দু। এটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় আমরা মর্মাহত।”
স্থানীয় নেতারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। গ্রামের সরপঞ্চ বলেন, “এটি একটি ন্যক্কারজনক কাজ। আমরা পুলিশের সঙ্গে সহযোগিতা করছি এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া

এই ঘটনা রাজনৈতিক মহলেও আলোড়ন ফেলেছে। বিরোধী দলের নেতারা সরকারের কাছে এই বিস্ফোরণের পিছনে সম্পূর্ণ তদন্ত এবং দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছেন। একজন বিরোধী নেতা বলেন, “এটি শুধু একটি মসজিদের উপর আক্রমণ নয়, আমাদের সম্প্রীতির উপর হামলা। সরকারের উচিত এই ঘটনার পিছনের মূল কারণ খুঁজে বের করা।”

তদন্তের দিকে নজর

বিস্ফোরণের কারণ এখনও পুরোপুরি স্পষ্ট নয়। পুলিশ জানিয়েছে, তারা জেলটিন স্টিকের উৎস এবং এটি মসজিদে আনার উদ্দেশ্য সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে। তদন্তকারীরা এটাও খতিয়ে দেখছে যে এটি কোনো পরিকল্পিত হামলা ছিল কি না, নাকি অন্য কোনো উদ্দেশ্যে এই বিস্ফোরক রাখা হয়েছিল। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আগামী কয়েক দিনের মধ্যে তদন্তে আরও তথ্য প্রকাশিত হতে পারে।

সম্প্রদায়ের উদ্বেগ

এই ঘটনা স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। অনেকে আশঙ্কা করছেন যে এটি সম্প্রদায়গত উত্তেজনার কারণ হতে পারে। তবে, পুলিশ ও স্থানীয় নেতারা বারবার শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। একজন সম্প্রদায়ের নেতা বলেন, “আমরা চাই না এই ঘটনা আমাদের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন নষ্ট করুক। আমরা আইনের উপর ভরসা রাখছি।”

মহারাষ্ট্রের বীড জেলার এই বিস্ফোরণ ঘটনা স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ও প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। পুলিশ তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার পিছনের সত্য উদঘাটনের চেষ্টা করছে। এখন সবার নজর তদন্তের ফলাফলের দিকে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রশাসন ও সম্প্রদায়ের সম্মিলিত প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।