নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: খোঁজ মেলার প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই গোটা বিশ্বের কাছে আতঙ্ক হয়ে উঠেছে করোনা ভাইরাসের নতুন প্রজাতি ওমিক্রন (Omicron)। এই ভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পেতে ইতিমধ্যেই একাধিক দেশ দক্ষিণ আফ্রিকা (south africa) ও বৎসোয়ানার সঙ্গে বিমান চলাচল নিষিদ্ধ করেছে।
কিন্তু শুধু বিমান চলাচল বন্ধ রাখলেই যে ওমিক্রনের হাত থেকে রেহাই মিলবে তা নয়। বরং এই ভাইরাসের হাত থেকে নিস্তার পেতে বেশ কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলার কথা বলেছেন বিশেষজ্ঞরা (expert)। তাঁরা জানিয়েছেন, এই ভাইরাসের হাত থেকে দেশবাসীকে রক্ষা করতে হলে কেন্দ্রীয় সরকারকে (central government) অবিলম্বে বেশকিছু পদক্ষেপ করতে হবে।
তাঁরা বলেছেন, সরকারের উচিত এখনই ঘরোয়া জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা। এই মুহূর্তে প্রকাশ্যে সব ধরনের জমায়েতের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি হবে। তাই তাঁরা এখনই সব ধরনের জমায়েতের ওপর নিষেধাজ্ঞার কথা বলছেন না। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বিমান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ না করে কোনও দেশ থেকে বিমান যখন ভারতে আসবে সে সময় বিমানবন্দরেই বিমান যাত্রীদের করোনা পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
দেশের সমস্ত মানুষকে যত শীঘ্র সম্ভব যাতে টিকার দুটি ডোজ দেওয়া যায় সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। সংক্রমণের মাধ্যমে দেশের মানুষের মধ্যে একটি সার্বিক প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে উঠবে বলে সরকারের যে অনুমান সেই ভ্রান্ত ধারণা থেকে যত শীঘ্র সম্ভব বেরিয়ে আসতে হবে। সরকারকে সেই ধরনের নীতি চালু করতে হবে যা প্রয়োজনে সহজেই শিথিল করা যাবে।
একইসঙ্গে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, সংক্রমণের এই ধাক্কা সামাল দিতে দেশের কোভিড হাসপাতালগুলিতে পর্যাপ্ত শয্যা আছে কিনা তা দেখতে হবে। যদি শয্যা সংখ্যা কম হয় তবে তা বাড়াতে হবে। দেশের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে যাওয়ার ক্ষেত্রে চালু করতে হবে টিকা পাসপোর্ট। যে সমস্ত মানুষ কোনও কারণে এখনও টিকা নেননি তাঁদেরকে অবিলম্বে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। প্রয়োজনে বুস্টার ডোজ দেওয়ার ব্যবস্থাও করতে হবে সরকারকে। বিশেষজ্ঞরা আরও জানিয়েছেন, করোনার হাত থেকে যে এখনই মুক্তি মিলবে তা নয়। তাই এই ভাইরাস মোকাবিলার ব্যাপারে সরকারকে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে।
বিশেষজ্ঞদের পাশাপাশি ওমিক্রন প্রতিরোধ করার ব্যাপারে কেন্দ্রের পক্ষ থেকেও রাজ্যগুলিকে সতর্ক করা হয়েছে। কেন্দ্র এদিন জানিয়েছে, প্রয়োজনে রাজ্যগুলিকে কড়া নজরদারি চালাতে হবে। বাড়াতে হবে করোনা পরীক্ষার সংখ্যা। একই সঙ্গে রাজ্যগুলিকে আরও দ্রুতগতিতে টিকাকরণ করতে এবং মানুষ যাতে করোনা বিধি মেনে চলে সে বিষয়টিও নিশ্চিত করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রক এদিন জানিয়েছে, এই নতুন ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে তার জন্য পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি রাজ্যে করোনা পরীক্ষা কমেছে। সম্প্রতি যে সমস্ত অঞ্চলে করোনার প্রাদুর্ভাব বেড়েছে সেই সমস্ত এলাকায় কড়া নজরদারি চালাতে হবে। এছাড়াও প্রত্যেকটি রাজ্যে করোনা আক্রান্তের হার বা পজিটিভিটি রেট ৫ শতাংশের নিচে থাকে সে বিষয়েও ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে পরামর্শ দিয়েছে।