“দুবাই এয়ারশো-তে ট্র্যাজেডি, কী কারণে ক্র্যাশ করল তেজস?

Expert Analysis Tejas Dubai Crash

দুবাই এয়ারশোতে ভারতীয় বায়ুসেনার (IAF) স্বদেশি যুদ্ধবিমান তেজস বিধ্বস্ত হয়ে পাইলট উইং কমান্ডার নমংশ শ্যালের (Wing Commander Namansh Syal) মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনায় গোটা দেশ শোকস্তব্ধ। শুক্রবার স্থানীয় সময় দুপুর ২টা ০৮ মিনিটে একটি এরিয়াল ম্যানুভার বা আকাশ পথে কসরত দেখানোর সময় বিমানটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাটিতে আছড়ে পড়ে এবং সেখান থেকে ঘন কালো ধোঁয়া বের হতে থাকে।

Advertisements

২৪ বছরের ইতিহাসে তেজসের এই দ্বিতীয় দুর্ঘটনা। যে বিমানটি নিখুঁত সুরক্ষার জন্য পরিচিত, তার এই বিপর্যয় একটিই প্রশ্ন তুলে দিয়েছে: কীভাবে ভেঙে পড়ল তেজস?

   

বিশেষজ্ঞদের মতে, শেষ মুহূর্তে যা ঘটেছিল:

ভারতীয় বায়ুসেনা আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্ঘটনার কারণ প্রকাশ না করলেও, বিমান ও প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞরা ভাইরাল হওয়া ভিডিও ফুটেজ এবং বিমানের শেষ মুহূর্তের গতিবিধির বিশ্লেষণ করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরেছেন:

ব্যারেল রোল কৌশল: বিশেষজ্ঞদের ধারণা, পাইলট সম্ভবত একটি জটিল কৌশল ‘ব্যারেল রোল’ করার চেষ্টা করছিলেন। এই কৌশলে বিমানটি সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে নিজের অক্ষের চারপাশে সম্পূর্ণ ঘুরে আবার স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসে। এটি তুলনামূলকভাবে সহজ কসরত হলেও, উচ্চ গতিতে যুদ্ধবিমানে এর প্রয়োগ অত্যন্ত নিঁখুত হওয়া প্রয়োজন।

লুপ এবং উচ্চতা: তেজস বিমানটি একটি সুনির্দিষ্ট লুপ (Loop) সম্পূর্ণ করার চেষ্টা করছিল— প্রথমে উপরে ওঠা, তারপর উল্টে যাওয়া এবং পুনরায় নীচে নেমে এসে আবার উপরে ওঠা। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বিমানটি পুনরায় উপরে উঠতে ব্যর্থ হয়।

গতি ও দূরত্বের অভাব: বিশেষজ্ঞদের মতে, বিমানটি সম্ভবত মাটির খুব কাছে চলে এসেছিল এবং শেষ মুহূর্তে আবার উপরে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় গতি ধরে রাখতে পারেনি। সামান্য ভুল হিসাবের কারণেই এই বিপর্যয় ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Advertisements

ইঞ্জিনের ত্রুটির সম্ভাবনা: যদিও এটি প্রাথমিক অনুমান, কিছু বিশেষজ্ঞ ইঞ্জিনের ‘ফ্লেমআউট’ বা হঠাৎ ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে যাওয়াকেও দুর্ঘটনার একটি সম্ভাব্য কারণ হিসেবে তুলে ধরেছেন।

 স্বদেশি গর্বের বিমান Expert Analysis Tejas Dubai Crash

বেঙ্গালুরু-ভিত্তিক হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (HAL) দ্বারা নির্মিত তেজস হলো ভারতের প্রথম দেশীয় প্রযুক্তির তৈরি যুদ্ধবিমান। এটি প্রায় ২৪ বছর ধরে পরিষেবা দিয়ে আসছে। যদিও এই বিমানের ইঞ্জিনগুলি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জেনারেল ইলেকট্রিক (GE) থেকে আনা।

ভারতের স্কোয়াড্রন শক্তি দ্রুত হ্রাস পাওয়ায়, বিশেষত সম্পূর্ণ মিগ-২১ বহর অবসরের পর, বায়ুসেনা তার শূন্যস্থান পূরণের জন্য তেজসের উপর বহুলাংশে নির্ভর করছে।

ভারতীয় বায়ুসেনা দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত আদালত (Court of Inquiry) গঠন করেছে। সেই তদন্তের চূড়ান্ত রিপোর্টেই এই মর্মান্তিক দুর্ঘটনার আসল কারণ জানা যাবে।