পহেলগাঁওয়ের রক্তাক্ত জঙ্গি হামলার (Pahalgam Terrorist Attack) পর শুধু উপত্যকায় নয়, কাঁপছে গোটা উপমহাদেশের কূটনৈতিক পরিমণ্ডল। ২৬ জন নিরীহ পর্যটকের প্রাণহানির ঘটনার পর ভারত যে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাতে চলেছে, তা অনেকটাই স্পষ্ট। আর সেই সম্ভাব্য প্রত্যাঘাতের (Pahalgam Terrorist Attack) আশঙ্কাতেই এখন স্নায়ুচাপে ভুগছে পাকিস্তান। এই প্রেক্ষাপটে ইসলামাবাদে জরুরি বৈঠকে বসেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ।
বৃহস্পতিবার ইসলামাবাদে (Pahalgam Terrorist Attack) অনুষ্ঠিত হয়েছে পাকিস্তানের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির (NSC) বৈঠক। এতে উপস্থিত ছিলেন সেনা প্রধান, আইএসআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল, স্বরাষ্ট্র ও বিদেশমন্ত্রক সহ দেশের নিরাপত্তা বিষয়ক শীর্ষ কর্তারা। গোটা বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় ছিল—পহেলগাঁও হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে কী ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হতে পারে এবং সেই পরিস্থিতির মোকাবিলা কীভাবে করা সম্ভব।
পাকিস্তান সরকার (Pahalgam Terrorist Attack) এখন পরিষ্কারভাবেই বুঝে গিয়েছে, এই হামলার রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক প্রতিক্রিয়া মারাত্মক হতে চলেছে। কারণ ইতিমধ্যেই ভারত সরকারের তরফে একাধিক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়েছে এবং একাধিক স্তরে চাপ প্রয়োগের রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, পাকিস্তানের (Pahalgam Terrorist Attack) বিরুদ্ধে শুধু কূটনৈতিকভাবেই নয়, অর্থনৈতিক দিক থেকেও চাপ বাড়ানোর চিন্তাভাবনা করছে দিল্লি। যার মধ্যে রয়েছে বাণিজ্যিক সম্পর্ক স্থগিত রাখা, আন্তর্জাতিক স্তরে পাকিস্তানকে ফের সন্ত্রাসবাদের মদতদাতা দেশ হিসেবে তুলে ধরা, এমনকি জলপ্রবাহ সংক্রান্ত চুক্তিতেও পুনর্বিবেচনার সম্ভাবনা।
এই পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদের (Pahalgam Terrorist Attack) ভিতরে তৈরি হয়েছে গভীর উদ্বেগ। পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে, ভারতের তরফে যদি সামরিক পর্যায়ের কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে তা রুখে দেওয়ার মতো প্রস্তুতি কি আদৌ রয়েছে তাদের? পাশাপাশি, ভারতের আন্তর্জাতিক জনমতকে নিজেদের পক্ষে টেনে নেওয়ার প্রচেষ্টাও পাকিস্তানের জন্য আরও বড় চাপ তৈরি করছে।
ন্যাশনাল সিকিউরিটি কমিটির বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ বলেছেন, “পাকিস্তান (Pahalgam Terrorist Attack) শান্তি চায়, তবে আত্মরক্ষার জন্য যা কিছু করা দরকার, তা করা হবে।” যদিও তাঁর এই বক্তব্যে কোনও নতুন কৌশলগত দিশা স্পষ্ট হয়নি। পাকিস্তান এবার আন্তর্জাতিক মহলের সহানুভূতি পেতে চাইছে এবং দাবি করছে, “এই হামলার সঙ্গে আমাদের সরাসরি কোনও যোগ নেই।”
তবে ভারত সরকারের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, পহেলগাঁও হামলার পর পাওয়া গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী, হামলাকারীরা পাকিস্তানের মদতে পরিচালিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। তাদের চলাচলের প্যাটার্ন, অস্ত্রশস্ত্র এবং ব্যবহৃত কৌশল সবই পাকিস্তান-প্রশিক্ষিত জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
এই প্রেক্ষাপটে ইসলামাবাদের (Pahalgam Terrorist Attack) ‘শান্তি বার্তা’ আদৌ কার্যকর হবে কিনা, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলেও সন্দেহ রয়েছে। কারণ এর আগেও বহুবার পাকিস্তান একই সুরে কথা বলেছে, কিন্তু জঙ্গি কার্যকলাপ রুখতে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। এই কারণে এবার ভারতের প্রতিক্রিয়া আরও কঠোর হতে পারে বলেই বিশেষজ্ঞদের ধারণা।
সব মিলিয়ে, উপত্যকার জঙ্গি (Pahalgam Terrorist Attack) হানার প্রেক্ষাপটে ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক নতুন করে উত্তপ্ত হতে শুরু করেছে। আর এই উত্তাপ সামাল দিতে এখন পাকিস্তানের ভিতরে চলছে কূটনৈতিক ব্যস্ততা, উদ্বেগ আর প্রস্তুতির দৌড়। ইসলামাবাদে বৈঠকের পর কী পদক্ষেপ নেয় পাকিস্তান, এবং ভারত কীভাবে তার জবাব দেয়, তা নির্ধারণ করবে উপমহাদেশের আগামী দিনের রাজনৈতিক আবহাওয়া।