কলকাতার নামকরা আইন কলেজে ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের নারকীয় ধর্ষণের ঘটনা সামনে এল পুণে শহরে। এক বিলাসবহুল আবাসনে ঢুকে এক যুবতীকে ধর্ষণের (Rape) অভিযোগ উঠেছে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের বিরুদ্ধে। অভিযুক্ত কুরিয়ার বয়ের ছদ্মবেশে ঢুকে এই ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটায়।
ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার সন্ধেবেলায়, পুণের এক অভিজাত আবাসনে। অভিযোগ, ওই সমাজে বসবাসকারী বছর ২৫-এর এক যুবতীকে ধর্ষণ (Rape) করে অভিযুক্ত। শুধু ধর্ষণই নয়, অভিযুক্ত নির্যাতিতার অচৈতন্য দেহের পাশে দাঁড়িয়ে তার ফোন দিয়ে সেলফিও তোলে এবং মেসেজে লিখে যায়— “আবার আসব আমি।”
জানা গিয়েছে, বুধবার সন্ধে সাড়ে ৭টা নাগাদ যুবতীর ফ্ল্যাটের দরজায় হাজির হয় এক অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তি। সে নিজেকে একটি কুরিয়ার সংস্থার ডেলিভারি বয় বলে দাবি করে এবং জানায় যে যুবতীর নামে একটি পার্সেল এসেছে।
যুবতী জানান, তাঁর নামে কোনও পার্সেল আসার কথা নয়। তবুও অভিযুক্ত বারবার জোর দিয়ে বলে, পার্সেলের জন্য সই ও ওটিপি লাগবে। তখন যুবতী ভিতরে যান মোবাইল আনতে এবং সেফটি ডোরটি খোলা রেখেই দেন। সেই সুযোগে অভিযুক্ত মূল দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকে পড়ে।
যুবতীর অভিযোগ অনুযায়ী, ওই ব্যক্তি তাঁর মুখে একটি রাসায়নিক স্প্রে করে অচৈতন্য করে দেয় এবং তারপর তাঁকে ধর্ষণ (Rape) করে। ঘটনার এখানেই শেষ নয়। ধর্ষণের পর অভিযুক্ত যুবতীর ফোন দিয়েই তার সঙ্গে সেলফি তোলে এবং ফোনে মেসেজ টাইপ করে রেখে যায়— “আবার আসব আমি।” এই বর্বরতায় আতঙ্কিত পুরো আবাসন এবং পুণে শহর।
ঘটনার পরপরই নির্যাতিতা কোনওভাবে জ্ঞান ফিরে পেয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ ধর্ষণের (Rape) মামলা রুজু করেছে এবং তদন্ত শুরু করেছে। কী ধরনের স্প্রে ব্যবহার করা হয়েছিল, তা জানতে পাঠানো হয়েছে ফরেন্সিকে।
এছাড়াও আবাসনের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে, কারা কারা ওই সময় প্রবেশ করেছিল এবং কীভাবে ওই যুবক নিরাপত্তা রক্ষীদের চোখ এড়িয়ে ভিতরে ঢুকতে পারল।
গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন
এই ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন উঠছে—
কীভাবে কোনও ভেরিফিকেশন ছাড়াই একজন অপরিচিত ব্যক্তি এক অভিজাত আবাসনে ঢুকে পড়ল?
আবাসনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আদৌ কি যথাযথ ছিল?
সুরক্ষিত ভাবা হয় এমন জায়গাতেও মহিলারা যদি এভাবে আক্রান্ত হন, তবে তাঁরা কোথায় নিরাপদ?
এই ভয়াবহ ঘটনায় ফের একবার নারীদের সুরক্ষার প্রশ্ন তুলে দিল দেশের সামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থার ওপর। একদিকে যেমন প্রযুক্তি উন্নত হচ্ছে, অন্যদিকে অপরাধীরা প্রযুক্তির ব্যবহার করেই অপরাধে আরও ধূর্ত হয়ে উঠছে। এই ঘটনায় অভিযুক্তকে দ্রুত শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন মানবাধিকার সংগঠন ও নাগরিক সমাজ।