ইলন মাস্কের (elon-musk) মালিকানাধীন স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কোম্পানি স্টারলিঙ্ক ভারত সরকারের কাছ থেকে গ্লোবাল মোবাইল পার্সোনাল কমিউনিকেশন বাই স্যাটেলাইট (জিএমপিসিএস), ভেরি স্মল অ্যাপারচার টার্মিনাল (ভিএসএটি) এবং ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) ক্যাটাগরি-এ লাইসেন্স পেয়েছে।
টেলিকম বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, স্টারলিঙ্ক (elon-musk) এই জিএমপিসিএস লাইসেন্স পাওয়া তৃতীয় কোম্পানি, এর আগে ওয়ানওয়েব এবং রিলায়েন্স জিও এই লাইসেন্স পেয়েছে। এই লাইসেন্স স্টারলিঙ্ককে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মোবাইল যোগাযোগ পরিষেবা প্রদানের অনুমতি দেয়, বিশেষ করে দুর্গম এবং অপ্রতুল সেবা প্রাপ্ত এলাকায় নিরবচ্ছিন্ন সংযোগ স্থাপনের জন্য।
টেলিকম বিভাগ জানিয়েছে, জিএমপিসিএস লাইসেন্স (elon-musk) স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মোবাইল যোগাযোগ পরিষেবা প্রদানের সুযোগ দেয়, বিশেষ করে যেসব অঞ্চলে স্থলভিত্তিক নেটওয়ার্কের সংযোগ সীমিত। লাইসেন্সধারীদের স্যাটেলাইট টার্মিনাল স্থাপন করতে হবে এবং গোপনীয়তা, বৈধ ইন্টারসেপশন এবং স্যাটেলাইট ট্রান্সমিশনের বৈশ্বিক মান মেনে নিরাপদ ও নিরবচ্ছিন্ন পরিষেবা নিশ্চিত করতে হবে।
কেন্দ্রীয় যোগাযোগ মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের জানান, লাইসেন্স (elon-musk)প্রদানের পর স্পেকট্রাম বরাদ্দ করা হবে। তিনি বলেন, বিশেষ করে দুর্গম এলাকায়, যেখানে তারের লাইন বা টাওয়ার স্থাপন করা কঠিন, সেখানে স্যাটেলাইট যোগাযোগ পরিষেবার মাধ্যমেই ইন্টারনেটের প্রসার বাড়ানো সম্ভব।
সম্প্রতি, এয়ারটেল এবং জিও স্টারলিঙ্কের (elon-musk) সঙ্গে অংশীদারিত্ব করেছে, যাতে স্টারলিঙ্কের উচ্চ-গতির স্যাটেলাইট ইন্টারনেট পরিষেবা ভারতের গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। এয়ারটেল এবং জিও তাদের বিস্তৃত ডিলারশিপ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে স্টারলিঙ্কের পরিষেবা বিক্রি ও প্রচার করবে।
এপ্রিলের মাঝামাঝি সময়ে, বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়াল স্টারলিঙ্কের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি এক্স-এ একটি পোস্টে বলেন, তাদের আলোচনায় “স্টারলিঙ্কের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম, তাদের বিদ্যমান অংশীদারিত্ব এবং ভারতে ভবিষ্যৎ বিনিয়োগ পরিকল্পনা” নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
স্টারলিঙ্কের (elon-musk) এই লাইসেন্স প্রাপ্তি ভারতের স্যাটেলাইট যোগাযোগ খাতে একটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। জিএমপিসিএস লাইসেন্স স্টারলিঙ্ককে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে ভয়েস, ডেটা, ফ্যাক্স এবং ব্রডব্যান্ড মাল্টিমিডিয়া পরিষেবা প্রদানের অনুমতি দেয়। এই প্রযুক্তি ভারতের গ্রামীণ এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে, যেখানে প্রায় ৭৫% মানুষের কাছে ব্রডব্যান্ড সংযোগ নেই।
ই অ্যান্ড ওয়াই-এর মতো পরামর্শক সংস্থার অনুমান, ভারতের স্যাটেলাইট (elon-musk) পরিষেবা বাজার ২০২৫ সালের মধ্যে ৪.৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে। স্টারলিঙ্কের লো-আর্থ অরবিট (এলইও) স্যাটেলাইট, যা পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৫৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় কাজ করে, উচ্চ-গতির এবং কম-লেটেন্সি ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদান করবে। বর্তমানে স্টারলিঙ্ক প্রায় ৭,০০০ স্যাটেলাইট ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা দিচ্ছে।
লাইসেন্সের (elon-musk) শর্ত অনুযায়ী, স্টারলিঙ্ককে ভারতে ল্যান্ড আর্থ স্টেশন গেটওয়ে স্থাপন করতে হবে। এই গেটওয়ে প্রতিটি স্যাটেলাইট সিস্টেমের জন্য পৃথকভাবে স্থাপন করতে হবে এবং গোপনীয়তা, বৈধ ইন্টারসেপশন এবং স্যাটেলাইট ট্রান্সমিশন মান মেনে চলতে হবে। স্টারলিঙ্ককে ভারতের নতুন লাইসেন্সিং নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়তা মেনে চলতে হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বৈধ ইন্টারসেপশন ক্ষমতা, গেটওয়ে নিরাপত্তা ছাড়পত্র, স্থানীয় উৎপাদন এবং ডেটা স্থানীয়করণ।
এই লাইসেন্স প্রাপ্তির পর স্টারলিঙ্ককে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল স্পেস প্রমোশন অ্যান্ড অথরাইজেশন সেন্টার (আইএন-স্পেস) থেকে অনুমোদন এবং টেলিকম রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (ট্রাই) থেকে স্পেকট্রাম বরাদ্দের প্রয়োজন হবে। সূত্র জানায়, স্টারলিঙ্ককে ১.৬০ কোটি টাকার অ-ফেরতযোগ্য প্রবেশ ফি দিতে হয়েছে।
স্টারলিঙ্কের (elon-musk) ভারতে প্রবেশের পথে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল। ২০২১ সালে, স্টারলিঙ্ক লাইসেন্স ছাড়াই প্রি-বুকিং গ্রহণ করায় টেলিকম বিভাগ তাদের গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেয়। তবে, স্টারলিঙ্ক নতুন নিরাপত্তা নির্দেশিকা মেনে লেটার অফ ইনটেন্ট (এলওআই) পেয়েছে এবং জুন ৭, ২০২৫-এর মধ্যে সমস্ত নিরাপত্তা প্রয়োজনীয়তা পূরণ করেছে। সূত্র জানায়, বাণিজ্যিক পরিষেবা শুরু করতে স্টারলিঙ্ককে গেটওয়ে, নেটওয়ার্ক অপারেশন সেন্টার এবং বৈধ ইন্টারসেপশন ক্ষমতা স্থাপন করতে প্রায় নয় মাস সময় লাগবে।
সরকার আর কি করবে?, সাংবাদিকদের সামনে বিবৃতি শিবকুমারের
স্টারলিঙ্ক (elon-musk) ভারতে ওয়ানওয়েব এবং জিও-এসইএস জয়েন্ট ভেঞ্চারের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করবে। এয়ারটেল এবং জিওর সঙ্গে স্টারলিঙ্কের অংশীদারিত্ব তাদের বিস্তৃত বিতরণ নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পরিষেবা প্রসারে সহায়তা করবে। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট অনুযায়ী, স্টারলিঙ্কের পরিকল্পনা মাসিক ৮৫০ টাকা থেকে শুরু হতে পারে এবং এটি ১০ মিলিয়ন গ্রাহক অর্জনের লক্ষ্য রাখছে। এই পরিষেবা গ্রামীণ ব্যবসা এবং দুর্গম এলাকার জন্য গেম-চেঞ্জার হতে পারে।
এই লাইসেন্স (elon-musk)প্রাপ্তি ভারতের ডিজিটাল সংযোগের ক্ষেত্রে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। স্টারলিঙ্কের উচ্চ-গতির ইন্টারনেট পরিষেবা গ্রামীণ ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিজিটাল বিভাজন দূর করতে সহায়তা করবে। তবে, স্পেকট্রাম বরাদ্দ এবং আইএন-স্পেসের অনুমোদনের মতো প্রক্রিয়াগুলো সম্পন্ন করতে সময় লাগবে। স্টারলিঙ্কের প্রবেশ ভারতের টেলিকম খাতে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করবে এবং দেশের ডিজিটাল অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করবে।