ভারতে টেসলার উৎপাদনে আগ্রহী নন মাস্ক, পরিকল্পনা শো রুমের

ইলন মাস্কের (elon-musk) মালিকানাধীন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলা ভারতে উৎপাদন স্থাপনে আগ্রহী নয়, বরং তারা শোরুম খোলার পরিকল্পনা করছে। কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রী এইচ…

elon-musk no plan to manufacture in india

ইলন মাস্কের (elon-musk) মালিকানাধীন বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা কোম্পানি টেসলা ভারতে উৎপাদন স্থাপনে আগ্রহী নয়, বরং তারা শোরুম খোলার পরিকল্পনা করছে। কেন্দ্রীয় ভারী শিল্প মন্ত্রী এইচ ডি কুমারস্বামী সোমবার (২ জুন, ২০২৫) সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, “টেসলার কাছ থেকে আমরা উৎপাদনের কোনো প্রত্যাশা করছি না।

শুধুমাত্র শোরুম খুলতে চায়

তারা (elon-musk)শুধুমাত্র শোরুম খুলতে চায়। তারা ভারতে উৎপাদনে আগ্রহী নয়।” ভারী শিল্প সচিব কামরান রিজভি এই বিষয়ে যোগ করেন, “আমরা যখন আবেদনপত্র গ্রহণ শুরু করব, তখনই কোম্পানির প্রকৃত উদ্দেশ্য জানা যাবে। মন্ত্রী মহোদয় যা বলছেন, তা কোম্পানির প্রতিনিধিদের অনানুষ্ঠানিক কথোপকথনের ভিত্তিতে।”

   

মন্ত্রী কুমারস্বামী আরও জানিয়েছেন যে, ২০২২ সালে ঘোষিত নতুন বৈদ্যুতিক যান (ইভি) নীতির (elon-musk)অধীনে হুন্ডাই, মার্সিডিজ বেঞ্জ, স্কোডা এবং কিয়ার মতো বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় কোম্পানি ভারতে উৎপাদন ইউনিট স্থাপনের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছে। সরকারের মতে, ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো ভারতে বিনিয়োগে আগ্রহী কারণ ভারতের মতো তাদের গাড়িগুলো লেফট-হ্যান্ড ড্রাইভ। ফলে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাইট-হ্যান্ড ড্রাইভ গাড়ির তুলনায় তাদের রপ্তানির জন্য বেশি পরিবর্তন করতে হয় না।

২০২২ সালে ঘোষিত নতুন ইভি নীতি ভারতে উৎপাদন ইউনিট স্থাপনকারী কোম্পানিগুলোর জন্য বেশ কিছু ছাড় প্রদান করে। এই নীতির অধীনে, যদি কোনো কোম্পানি ভারতে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ৪,১৫০ কোটি টাকা) বিনিয়োগ করে উৎপাদন প্ল্যান্ট স্থাপন করে, তবে তারা ১৫ শতাংশ শুল্কে গাড়ি আমদানি করতে পারবে।

প্রথম তিন বছরে কোম্পানিকে ২৫ শতাংশ উপাদান স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করতে হবে, যা পঞ্চম বছরের শেষে ৫০ শতাংশে উন্নীত করতে হবে। এছাড়া, কোম্পানিগুলো বছরে সর্বোচ্চ ৮,০০০ ইউনিট গাড়ি ১৫ শতাংশ কম শুল্কে ভারতে রপ্তানি করতে পারবে।

এর আগে খবর পাওয়া গিয়েছিল

এর আগে, টেসলা (elon-musk) ভারতে গাড়ি আমদানি করে তাদের শোরুমের মাধ্যমে বিক্রি করতে আগ্রহী বলে খবর পাওয়া গিয়েছিল। টেসলার প্রধান ইলন মাস্ক অতীতে ভারতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন, তবে তিনি ভারতের উচ্চ আমদানি শুল্ককে একটি প্রধান বাধা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন।

২০২২ সালে নতুন ইভি নীতি ঘোষণার পর, যেখানে আমদানি শুল্ক ১৫ শতাংশে হ্রাস করা হয়েছে এবং উৎপাদন প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে, টেসলার ভারতে আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছিল। তবে, সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, টেসলা ভারতে উৎপাদনের পরিবর্তে শুধুমাত্র শোরুম খোলার দিকে মনোনিবেশ করছে।

মন্ত্রী কুমারস্বামী জানিয়েছেন, টেসলা ‘ইলেকট্রিক প্যাসেঞ্জার কার উৎপাদন প্রচার স্কিম’-এর প্রাথমিক আলোচনায় অংশ নিলেও পরবর্তী দুটি বৈঠকে তাদের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না। এদিকে, সরকার এই স্কিমের আওতায় আবেদন গ্রহণ শুরু করতে চলেছে, এবং কোন কোম্পানিগুলো বিনিয়োগে আগ্রহী তা শীঘ্রই স্পষ্ট হবে।

Advertisements

কুমারস্বামী বলেন (elon-musk)

ইউরোপীয় কোম্পানিগুলোর আগ্রহের বিষয়ে কুমারস্বামী বলেন, “হুন্ডাই, মার্সিডিজ বেঞ্জ, স্কোডা এবং কিয়া ভারতে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনের জন্য আগ্রহ দেখিয়েছে।” তিনি (elon-musk)আরও জানান, এই কোম্পানিগুলোর জন্য ভারত একটি আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য কারণ তাদের গাড়ির ড্রাইভিং সিস্টেম ভারতের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এছাড়া, নতুন ইভি নীতি তাদের জন্য রপ্তানি প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করেছে।

টেসলা (elon-musk)ইতিমধ্যে ভারতে তাদের বাজারে প্রবেশের প্রস্তুতি শুরু করেছে। তারা মুম্বাইয়ের বান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সে একটি ৪,০০৩ বর্গফুটের শোরুমের জন্য পাঁচ বছরের লিজ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার প্রথম বছরের ভাড়া প্রায় ৪৪৬,০০০ মার্কিন ডলার। এছাড়া, দিল্লির এয়ারোসিটিতে আরেকটি শোরুম স্থাপনের পরিকল্পনা চলছে। টেসলা ভারতে বিক্রয়, গ্রাহক সহায়তা এবং অপারেশনের জন্য ২৫টিরও বেশি পদে কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞাপনও দিয়েছে।

জি-৭ নিয়ে ধোঁয়াশা! কানাডা যাচ্ছেন না মোদী? প্রশ্নের মুখে কূটনৈতিক সম্পর্ক

ভারতের ইভি নীতি

ভারতের ইভি নীতি দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ি উৎপাদনের বৈশ্বিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে উৎসাহিত করছে। এই নীতির অধীনে, ২০২৪ সালে ভারতের মোট গাড়ি বিক্রির মধ্যে ইভির অংশ ছিল মাত্র ২.৫ শতাংশ, তবে সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে এটিকে ৩০ শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্য নিয়েছে। টাটা মোটরস বর্তমানে ভারতের ইভি বাজারে প্রভাবশালী, তবে স্থানীয় নির্মাতারা আমদানি শুল্ক হ্রাসের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়েছে, কারণ এটি তাদের বিনিয়োগ ও বাজার প্রতিযোগিতার উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও টেসলার ভারতে উৎপাদন স্থাপনের সম্ভাবনাকে “অন্যায্য” বলে উল্লেখ করেছেন, কারণ এটি মার্কিন বাজারের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। ট্রাম্পের এই মন্তব্য টেসলার ভারতে উৎপাদন পরিকল্পনার অনিশ্চয়তাকে আরও জোরদার করেছে।

টেসলার (elon-musk) বর্তমান পরিকল্পনা ভারতে আমদানিকৃত বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রির দিকে মনোনিবেশ করছে। আগামী দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে তারা ভারতের বাজারে তাদের প্রথম গাড়ি চালু করতে পারে। তবে, স্থানীয় উৎপাদনের অভাবে ভারতের ইভি শিল্পে টেসলার অবদান সীমিত থাকতে পারে, যখন ইউরোপীয় কোম্পানিগুলো এই সুযোগ কাজে লাগাতে প্রস্তুত।