মহারাষ্ট্রে (Maharashtra election) সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে কংগ্রেসের (Congress) তুলনা মূলক অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election commission of India) তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে। কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া সুষ্ঠু, স্বচ্ছ এবং আইনসঙ্গত ছিল। কংগ্রেসের সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে কমিশন একে ‘নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ’ নির্বাচন বলে দাবি করেছে। তবে কংগ্রেস দল, যা বিজেপি ও শিবসেনার জোটের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ, এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে প্রস্তুত নয় এবং তারা আজ সুপ্রিম কোর্টে (supreme court of India) যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
পাঁচ রাজ্যের নতুন রাজ্যপাল নিয়োগে বড়সড় রদবদল
নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, যাতে বলা হয় ভোটগ্রহণের সমস্ত ফুটেজ এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নথি জনসাধারণের নাগালের বাইরে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। এক্ষেত্রে, কমিশনের উদ্দেশ্য ছিল নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল যে, নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়ে কিছু ধরনের অস্বচ্ছতা ছিল এবং বিভিন্ন জায়গায় ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে কিছু গোলমাল ঘটেছিল।
কমিশনের তরফে পরিষ্কার জানানো হয়েছে যে, ভোটগ্রহণে কোনো ধরনের অস্বচ্ছতা বা গড়মিল ছিল না এবং সারা রাজ্যে ভোটগ্রহণের সময় সবকিছু সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিশেষত, মহারাষ্ট্রে নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরুর আগে থেকেই, ভোট কেন্দ্রগুলিতে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ এবং সমস্ত ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছিল। ভোট গ্রহণে ব্যবহৃত প্রযুক্তি, ভোটারদের যাচাইয়ের জন্য নিয়মানুবর্তিতা এবং সঠিক রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য কমিশন একাধিক সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে।
এদিকে, কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ভোট গ্রহণের সময় বিভিন্ন জায়গায় ‘ভোট সন্ত্রাস’ এবং ‘ভোট কারচুপি’ ঘটেছে। তারা বিশেষভাবে মুম্বই, পুণে, নাগপুর ও জলগাঁওয়ের মতো কিছু শহরে ত্রুটি থাকার দাবি করেছে। কংগ্রেসের দাবি ছিল যে, নির্বাচনী বুথগুলোতে যেসব ঘটনার উল্লেখ করা হয়েছে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।
ULFA-কে অবৈধ ঘোষণা করতে কড়া পদক্ষেপ, ট্রাইব্যুনাল গঠন করল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক
নির্বাচন কমিশনের এই সাফাইকে অগ্রাহ্য করে, কংগ্রেস আজ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানাতে চলেছে। তাদের দাবি, নির্বাচন প্রক্রিয়ার সঠিক তদন্ত করা প্রয়োজন এবং কমিশনকে নির্বাচনী ফুটেজ এবং নথির উপর আরও খোলামেলা দৃষ্টি রাখতে হবে। কংগ্রেস বলছে, তাদের সন্দেহ যে ভোট গ্রহণের সময় কিছু অসঙ্গতি ছিল, তা আদালত পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে। কংগ্রেস নেতা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী এবং রাজীব সাত্রি এই বিষয়ে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নিতে বলেছেন। তারা আরও দাবি করেছেন যে, নির্বাচনের আগে এবং পরে বিজেপির সঙ্গে জোট সরকারের পক্ষ থেকে একাধিক নির্বাচনী প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে, যা গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
চলবে উন্নয়নের কাজ, এই ডিভিশনে ট্রেন বাতিল করল রেল
এই পরিস্থিতিতে, রাজ্য নির্বাচনের ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেসের অভিযোগ এবং নির্বাচন কমিশনের সাফাই নিয়ে রাজনৈতিক উত্তেজনা অব্যাহত। কংগ্রেসের সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করার বিষয়টি অনেকের কাছে বিশেষভাবে গুরুত্ব পাবে, কারণ এটি পরবর্তী সময়ে দেশের নির্বাচনী বিধি এবং নির্বাচন কমিশনের কার্যক্রমকে আরও খোলাসা করে তুলতে পারে।
এখন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা কংগ্রেসের আবেদন শোনার পর এই বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নেবেন, তা নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ এনে দিতে পারে। তবে, নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়ে অনাস্থা ও বিরোধিতা অব্যাহত থাকা, রাজ্যের রাজনীতিতে আরও জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে।