নির্বাচন কমিশন(Election Commission) মঙ্গলবার ভোটার আইডি এবং আধার লিঙ্কিং নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আয়োজন করেছে। যেখানে নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমারের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তারা এবং প্রযুক্তিগত বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করেন। এই বৈঠকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাইটি সচিব, ইউআইডিএআই সিইওসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে নির্বাচন কমিশন স্পষ্ট করে জানিয়েছে যে এই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণভাবে ভারতীয় সংবিধানের ৩২৬ অনুচ্ছেদ এবং জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫০-এর প্রাসঙ্গিক ধারার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার অনুসরণে ইসি জানিয়েছে যে আধার শুধুমাত্র পরিচয়ের প্রমাণ হিসাবে ব্যবহার হবে, নাগরিকত্বের প্রমাণ হিসেবে নয়। এ সম্পর্কিত প্রযুক্তিগত পরামর্শ শুরু হবে শীঘ্রই, যেখানে ইউআইডিএআই এবং ইসির বিশেষজ্ঞরা একযোগে কাজ করবেন।
নির্বাচন কমিশন এক বিবৃতিতে বলেছে, “ভারতের সংবিধানের ৩২৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, ভোটাধিকার কেবল ভারতীয় নাগরিকদের দেওয়া যেতে পারে; আধার কার্ড কেবল একজন ব্যক্তির পরিচয় প্রমাণ করে।”
এছাড়াও নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে যে ইপিক এবং আধার লিঙ্কিংয়ের কাজটি কেবলমাত্র সংবিধান ও জনগণের প্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫০-এর ২৩(৪), ২৩(৫) এবং ২৩(৬) ধারার আওতায় এবং সুপ্রিম কোর্টের WP(civil) নং 177/2023 রায় অনুসারে করা হবে। এ বিষয়ে প্রযুক্তিগত পরামর্শ শীঘ্রই শুরু হবে।
নির্বাচন কমিশনের নতুন পদক্ষেপ
এদিকে জ্ঞানেশ কুমারের নির্বাচনের কমিশনার হিসেবে অফিস গ্রহণের এক মাসের মধ্যেই বেশ কিছু দীর্ঘদিনের অমীমাংসিত নির্বাচনী সমস্যার সমাধান করতে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এই পদক্ষেপগুলি নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং কার্যকরী করার লক্ষ্য নিয়ে নেওয়া হয়েছে, বিশেষ করে আসন্ন নির্বাচনের আগে।
এছাড়াও ইসি জানিয়েছে যে তারা আগামী ৩১ মার্চ ২০২৫-এর মধ্যে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার জন্য একটি জাতীয়-রাজ্য পর্যায়ে বৈঠক করবে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভোটারদের উদ্বেগ এবং সুপারিশগুলো সরাসরি শোনা যাবে এবং নির্বাচনী ব্যবস্থায় তাদের মতামত অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এটি প্রথমবারের মতো যেখানে নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছ থেকে আইনি কাঠামোর মধ্যে পরামর্শ আহ্বান করেছে এবং ৩০ এপ্রিল ২০২৫ এর মধ্যে তাদের মতামত জমা দেওয়ার সুযোগ দেবে। নির্বাচনী কমিশনের এই অভূতপূর্ব পদক্ষেপের মাধ্যমে এটি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্বচ্ছ এবং প্রতিক্রিয়া স্বরূপ করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
জ্ঞানেশ কুমারের নেতৃত্বে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী প্রক্রিয়া আরও আধুনিক এবং উন্নত করতে কাজ করছে। ইসির এই উদ্যোগগুলি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরাসরি আলোচনার সুযোগ সৃষ্টি করবে এবং ভোটারদের মতামতকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলবে, যা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে।