Fake Voter Allegations: এক এপিক নম্বরে একাধিক ভোটার কেন? জবাব দিল নির্বাচন কমিশন

ভোটার তালিকায় গরমিলের (Fake Voter Allegations) অভিযোগকে ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। বিরোধীরা দাবি করছে, একাধিক ভোটারের একই এপিক (EPIC) নম্বর থাকা মানেই ভূয়ো ভোটারদের…

Election Commission Clarifies EPIC Number Controversy

ভোটার তালিকায় গরমিলের (Fake Voter Allegations) অভিযোগকে ঘিরে দেশজুড়ে বিতর্কের ঝড় উঠেছে। বিরোধীরা দাবি করছে, একাধিক ভোটারের একই এপিক (EPIC) নম্বর থাকা মানেই ভূয়ো ভোটারদের অন্তর্ভুক্তি। এই বিতর্কের মধ্যে এবার মুখ খুলল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশন সাফ জানিয়ে দিল, একই এপিক নম্বর থাকা মানেই সংশ্লিষ্ট ভোটার ভূয়ো নন।

Advertisements

কমিশনের ব্যাখ্যা
সম্প্রতি নির্বাচন কমিশনের তরফে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ‘‘দুই রাজ্যের ভোটারের একই এপিক নম্বর থাকলেও তাঁদের আলাদা পরিচয় রয়েছে। তাঁদের ব্যক্তিগত তথ্য, বিধানসভা কেন্দ্র এবং পোলিং বুথ সব ভিন্ন থাকে।’’

Advertisements

কমিশনের আরও ব্যাখ্যা, ‘‘আগে স্থানীয়ভাবে ভোটার কার্ড তৈরি করা হত, যার ফলে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তিকে একই নম্বর দেওয়া হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু তার মানে এই নয় যে তাঁরা ভূয়ো ভোটার। একজন ভোটার কেবলমাত্র সেই রাজ্যে ভোট দিতে পারবেন, যেখানে তাঁর নাম ভোটার তালিকায় নথিভুক্ত রয়েছে।’’

Also Read | Voter List Discrepancies: ভোটার তালিকায় ‘গরমিল’ নিয়ে ‘বিস্ফোরক’ তথ্য ফাঁস নির্বাচন কমিশনের 

কীভাবে ঘটল এই গরমিল?
নির্বাচন কমিশনের মতে, একসময় ম্যানুয়ালি ভোটার কার্ড তৈরি এবং বিতরণ করা হত। তখন একাধিক ব্যক্তির একই এপিক নম্বর দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। বিশেষ করে যেসব রাজ্যে পুরনো পদ্ধতিতে কার্ড তৈরি হয়েছিল, সেখানেই এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যাচ্ছে।

কমিশনের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ‘‘এই সমস্যার সমাধানে আমরা কেন্দ্রীয়ভাবে ভোটার তালিকা পর্যালোচনা করছি। খুব শীঘ্রই যাঁদের একই এপিক নম্বর রয়েছে, তাঁদের জন্য পৃথক ইউনিক নম্বর জারি করা হবে।’’

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া
ভোটার তালিকার গরমিল নিয়ে রাজনৈতিক মহলে চাপানউতোর অব্যাহত। বিরোধী দলগুলি কমিশনের যুক্তি মানতে নারাজ। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, ‘‘বিজেপি পরিকল্পিতভাবে ভোটার তালিকায় গরমিল সৃষ্টি করছে। একাধিক রাজ্যে একই ভোটারকে নথিভুক্ত করে নির্বাচনে কারচুপির চেষ্টা চালানো হচ্ছে। কমিশনের উচিত নিরপেক্ষ তদন্ত করা।’’

অন্যদিকে, বিজেপির দাবি, ‘‘তৃণমূল সরকার ভূয়ো ভোটার তৈরি করে নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের নাম জালিয়াতি করে ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আমরা এই বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের হস্তক্ষেপ চাই।’’

ভোটারদের করণীয়

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ভোটারদের নিজেদের তথ্য যাচাই করতে কমিশনের অফিশিয়াল পোর্টালে যেতে হবে। যদি কেউ তাঁর এপিক নম্বরে বিভ্রান্ত হন, তবে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন দফতরে যোগাযোগ করতে পারেন।

এছাড়া, ভোটারদের সঠিক তথ্য নিশ্চিত করতে আধার নম্বরের সঙ্গে ভোটার কার্ড সংযুক্তিকরণ প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা হবে বলে জানিয়েছে কমিশন।

কমিশনের পরবর্তী পদক্ষেপ
ভোটার তালিকা আরও স্বচ্ছ করতে কমিশন কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিচ্ছে—
1. ইউনিক এপিক নম্বর প্রদান: যাঁদের একই এপিক নম্বর রয়েছে, তাঁদের নতুন করে ইউনিক নম্বর দেওয়া হবে।
2. তথ্য যাচাই ও আপডেট: কেন্দ্রীয় পোর্টালের মাধ্যমে ভোটারদের তথ্য যাচাই ও সংশোধন করা হবে।
3. আধার সংযুক্তিকরণ: ভোটারদের সঠিক পরিচয় নিশ্চিত করতে আধার-ভোটার লিঙ্কিং প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা হবে।
4. বায়োমেট্রিক যাচাই: ভবিষ্যতে জাল ভোটার রুখতে বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবহার করা হতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের এই বিবৃতি বিতর্কের অবসান ঘটাতে পারবে কি না, তা সময়ই বলবে। তবে ভোটার তালিকা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা যে আরও বাড়বে, তা স্পষ্ট।