মহারাষ্ট্রের (Maharashtra) তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে (Eknath Shindey) সাম্প্রতিক সফরে নিজের বাড়ি সাতারায় গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি জ্বর, সর্দি এবং গলাব্যথায় ভুগছেন বলে জানা গেছে। তার শারীরিক অবস্থা নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা গুঞ্জন শুরু হয়েছে, বিশেষ করে এমন একটি সময়ে যখন রাজ্যে পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী কে হবেন তা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি।
বাংলাদেশের হিন্দুদের নাগরিত্ব দেওয়ার দাবি দিলীপের
শিন্ডের পারিবারিক চিকিৎসক ড. আরএম পাত্রে জানিয়েছেন, শিন্ডে গত দুই দিন ধরে অসুস্থ। তাকে অ্যান্টিবায়োটিক এবং স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসকরা আশাবাদী যে তিনি এক-দু’দিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে উঠবেন। বর্তমানে শিন্ডেকে একটি চিকিৎসক দলের পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে, যেখানে তিন থেকে চারজন চিকিৎসক রয়েছেন।
শিন্ডের অসুস্থতার খবরে নানা ধরনের জল্পনা শুরু হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদ নিয়ে চলমান রাজনৈতিক টানাপোড়েনের সঙ্গে তার অসুস্থতার যোগসূত্র থাকতে পারে। শিন্ডের শরীরিক অসুস্থতা হয়তো এই চাপেরই একটি প্রতিফলন।
পেট্রল পাম্পে কাজ করতেন, বন্দুকবাজের গুলিতে শিকাগোতে প্রাণ হারালেন ভারতীয় ছাত্র
অন্যদিকে, রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে বিজেপি মহারাষ্ট্রে মুখ্যমন্ত্রীর পদ পেতে চলেছে এবং সম্ভবত ৫ ডিসেম্বর নতুন মন্ত্রিসভার শপথগ্রহণ হবে। যদি এটি সত্য হয়, তবে রাজ্যে ক্ষমতার ভারসাম্যে বড় পরিবর্তন আসতে চলেছে। তবে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা হয়নি, যা জল্পনা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
২০২২ সালে শিবসেনা ভেঙে বেরিয়ে এসে শিন্ডে মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। তার নেতৃত্বে মহারাষ্ট্রে একাধিক রাজনৈতিক টানাপোড়েন ও প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ দেখা গেছে। মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব ছাড়ার প্রাক্কালে শিন্ডের শারীরিক অবস্থার অবনতিকে রাজনৈতিক চাপের সঙ্গে অনেকেই যুক্ত করছেন।
এই সময়ে শিন্ডের অসুস্থতা রাজ্যে নেতৃত্বের রদবদলের প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ। তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তার ভূমিকা শেষ হতে চললেও, মহারাষ্ট্রের রাজনীতিতে তার অবদান কম নয়। শিবসেনার মধ্যে ভাঙনের সময় তার নেতৃত্ব এবং পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার ক্ষমতা তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।
যদি বিজেপি সত্যিই মুখ্যমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করে, তবে নতুন সরকারের গঠনে শিন্ডের ভূমিকা কী হবে তা নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে। শোনা যাচ্ছে, তিনি হয়তো নতুন মন্ত্রিসভায় একটি গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীত্বের দায়িত্ব পেতে পারেন।
শিন্ডের অসুস্থতার খবর তার সমর্থক এবং দলের সদস্যদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। তার ঘনিষ্ঠ একজন জানিয়েছেন যে, চিকিৎসকরা তাকে সম্পূর্ণ বিশ্রামের পরামর্শ দিয়েছেন এবং তিনি পুরোপুরি সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত কোনো জনসমাবেশে অংশ নেবেন না।
মহারাষ্ট্রের মানুষ একদিকে শিন্ডের দ্রুত সুস্থতা কামনা করছেন, অন্যদিকে রাজ্যের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে স্পষ্টতার অপেক্ষায় রয়েছেন।
ডিজিটাল ইন্ডিয়ার নয়া চমক! বিজয়া ভিট্টলা মন্দির স্তম্ভের কিউআর স্ক্যান করলেই বেজে উঠবে ধ্বনি
শিন্ডের রাজনৈতিক যাত্রা এক সাধারণ নেতা থেকে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ওঠার গল্প। তার সাম্প্রতিক শারীরিক অসুস্থতা হয়তো সাময়িক, কিন্তু এটি রাজনৈতিক দায়িত্ব পালনের চাপ কতটা তীব্র হতে পারে তা স্পষ্ট করে। চিকিৎসকদের যত্নে তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আশাবাদী সবাই। তবে, এর মধ্যেই রাজ্যের রাজনৈতিক উত্তেজনা আর শপথগ্রহণের দিন ঘনিয়ে আসছে। ৫ ডিসেম্বর-এর দিকে তাকিয়ে রয়েছে গোটা মহারাষ্ট্র।