ভারতে অবৈধ অনলাইন বেটিং অ্যাপগুলির (Online Betting Case) বিরুদ্ধে বড়সড় তদন্ত চালাচ্ছে ইডি (Enforcement Directorate)। এই তদন্তে একে একে বহু নামী ক্রিকেটার, অভিনেতা ও সেলিব্রিটিকে ডেকে পাঠানো হচ্ছে। এবার তলবের নোটিশ গেল প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট তারকা যুবরাজ সিং এবং রবিন উথাপ্পার কাছে।
সূত্র অনুযায়ী, রবিন উথাপ্পাকে ২২ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে ইডি সদর দফতরে হাজিরা দিতে হবে। অপরদিকে, যুবরাজ সিং-কে হাজিরা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ২৩ সেপ্টেম্বর। তাদের বয়ান রেকর্ড করা হবে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন (PMLA)-এর অধীনে। ইডির ধারণা, এই দুই তারকা ক্রিকেটারের কাছে অনলাইন বেটিং প্ল্যাটফর্মের প্রচার, চুক্তি এবং টাকার লেনদেন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকতে পারে।
এর আগে ১৩ আগস্ট সুরেশ রায়না এবং ৪ সেপ্টেম্বর শিখর ধবনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তদন্তের অগ্রগতিতে দেখা যাচ্ছে, কেবলমাত্র ক্রিকেটার নন, বিনোদন জগতের বহু তারকাও ইডির নজরে রয়েছেন। যেমন, প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ ও অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তীকে সম্প্রতি জেরা করা হয়েছিল। অভিনেতা অঙ্কুশ হাজরাকেও মঙ্গলবার জেরা করেছে ইডি। বলিউড অভিনেত্রী উর্বশী রৌতেলাকে হাজিরার নোটিশ পাঠানো হলেও তিনি এখনও হাজির হননি।
ইডি সূত্রের দাবি, এই অবৈধ বেটিং অ্যাপগুলি বিদেশে টাকা পাচার করার বড় চক্রের সঙ্গে যুক্ত। প্রচার, বিজ্ঞাপন ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে এরা সাধারণ মানুষের কাছে নিজেদের পৌঁছে দেয়। এতে সেলিব্রিটি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বদের ব্যবহার করা হয়, যাদের মুখ বা নাম ব্যবহার করে প্রচুর মানুষ প্রলুব্ধ হয়।
কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক গত বছরই স্পষ্ট নির্দেশ দেয় যে কোনও সংবাদপত্র, নিউজ চ্যানেল, বিনোদন মাধ্যম কিংবা সোশ্যাল মিডিয়ায় অনলাইন বেটিং প্ল্যাটফর্মের বিজ্ঞাপন দেওয়া যাবে না। তবুও দেখা গিয়েছে, বহু তারকা প্রকাশ্যে সেইসব প্ল্যাটফর্মকে সমর্থন বা প্রচার করেছেন। এর ফলেই কেন্দ্রীয় সংস্থা আরও কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে।
ইডি-র তদন্তে জানা গিয়েছে, বহু নিষিদ্ধ বেটিং প্ল্যাটফর্ম এখনও ভুয়ো নাম ব্যবহার করে সক্রিয় রয়েছে। এরা ব্যবহারকারীদের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা সংগ্রহ করে এবং সেই টাকা বিদেশে পাচার করা হয়। এতে মানি লন্ডারিং-এর পাশাপাশি ফেমা (FEMA)-র একাধিক ধারার লঙ্ঘন হয়েছে বলে সন্দেহ।
একজন আধিকারিক জানিয়েছেন, বর্তমানে প্রায় ২২ কোটি ভারতীয় নাগরিক বিভিন্ন বেটিং অ্যাপ ব্যবহার করেন, যাদের মধ্যে ১১ কোটি মানুষ নিয়মিত জড়িত। এই বিশাল অঙ্কের টাকার লেনদেন অর্থনীতির পক্ষে অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং অপরাধমূলক কার্যকলাপকে উসকে দিচ্ছে।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, যুবরাজ সিং এবং রবিন উথাপ্পার জবানবন্দি তদন্তের নতুন মোড় ঘোরাতে পারে। কারণ, তারা নিজেরা কোনও বিজ্ঞাপনের সঙ্গে জড়িত থাকলেও, আরও কারা এতে জড়িত সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারেন। আগামী দিনে আরও অভিনেতা ও ক্রীড়াবিদকে তলব করা হতে পারে বলে অনুমান।