বারো ঘন্টার টানা তল্লাশির পর গ্রেফতার আলফালাহর কর্ণধার

ed-arrests-al-falah-chairman-terror-financing-raid-okhla

নয়াদিল্লি, ১৮ নভেম্বর: সন্ত্রাস অর্থায়ন সংক্রান্ত অর্থপাচার মামলায় বড়সড় পদক্ষেপ নিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED arrests )। দীর্ঘ প্রায় বারো ঘণ্টার টানা তল্লাশি, নথি খতিয়ে দেখা এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর অবশেষে গ্রেফতার করা হল আল-ফালাহ গ্রুপের চেয়ারম্যান জাওয়াদ আহমদ সিদ্দিকিকে। যে আলফালাহ ইউনিভার্সিটির সঙ্গে দিল্লি বিস্ফোরণের যোগ সূত্র পাওয়া গেছে এবং যে ইউনিভার্সিটির ডাক্তাররা সন্ত্রাসবাদী কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ। 

Advertisements

ইডি সূত্রে জানা গেছে, তদন্তকারীরা আজ সকাল থেকেই দিল্লির ওখলা অঞ্চলে অবস্থিত আল-ফালাহ গ্রুপের অফিসে নেমে পড়েন। অফিসের অভ্যন্তর থেকে পাওয়া নথি, ডিজিটাল ডেটা, কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ লেনদেনের রেকর্ড এবং সন্দেহজনক ফান্ড মুভমেন্টের তথ্য—এসব মিলিয়ে দিনভর চলে ছানবিন। তল্লাশির একাধিক পর্যায় শেষে সন্ধ্যায় সিদ্দিকিকে আটক করে ইডি-র তদন্ত দল।

   

সংহতি দিবসের মঞ্চ থেকেই নির্বাচনী সুর তুলতে পারেন মমতা-অভিষেক

ইডি-র অভিযোগ, আল-ফালাহ গ্রুপের একাধিক আর্থিক লেনদেন এমন কিছু সংগঠন এবং ব্যক্তির সঙ্গে যুক্ত যাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে অর্থসাহায্যের সন্দেহ রয়েছে। ইনকামিং ও আউটগোয়িং ফান্ডের মধ্যে অস্বাভাবিকতা নজরে আসার পর থেকেই কেন্দ্রীয় সংস্থার চোখ পড়ে সিদ্দিকির ওপর। বিশেষ করে কয়েকটি বিদেশি অ্যাকাউন্ট থেকে আসা টাকা এবং তা দেশের অভ্যন্তরে কীভাবে পুনরায় বিতরণ করা হয়েছে—সেই চক্র খতিয়ে দেখতে ইডি বিগত কয়েক মাস ধরে নীরব তদন্ত চালাচ্ছিল।

Advertisements

আজকের তল্লাশিতে নথি, হার্ডডিস্ক, একাধিক লেনদেনের স্লিপ এবং ই-মেইল কমিউনিকেশন উদ্ধার হয়েছে। ইডি মনে করছে এই তথ্যপ্রমাণ ভবিষ্যতের তদন্তে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তল্লাশি চলার সময় অফিসের ভেতরের একাধিক ভিজ্যুয়াল প্রকাশ্যে আসে, যেখানে দেখা যায় তদন্তকারীরা আলমারি ভেঙে কাগজপত্র বের করছেন, সার্ভার রুমে কম্পিউটার ও স্টোরেজ ড্রাইভ বাজেয়াপ্ত করছেন এবং কর্মীদের একে একে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সূত্র মতে কিছু নথির সঙ্গে সন্ত্রাসবাদ-লিঙ্কড এনজিওর যোগাযোগের ইঙ্গিত, অনিয়মিত চ্যারিটি ডোনেশনের রেকর্ড, এবং সন্দেহজনক বিদেশি রেমিট্যান্স এসব তথ্য সামনে আসায় তদন্ত আরও গভীরতর হবে। অপ্রত্যাশিত এই অভিযান ব্যবসায়িক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি করেছে। আল-ফালাহ গ্রুপে কাজ করা এক কর্মী জানান “সকাল থেকেই ইডি এসে অফিস ঘিরে ফেলে। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম রুটিন ইনকোয়ারি, কিন্তু পরে বুঝলাম বড় কিছু ঘটছে। সবার ল্যাপটপ, ফোন, এমনকি ব্যক্তিগত ব্যাগও চেক করা হয়েছে।”

তদন্ত চলায় আপাতত অফিসের কার্যক্রম বন্ধ রাখা হয়েছে। ইডি কর্মকর্তাদের দাবি সিদ্দিকির জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সন্তোষজনক উত্তর দিতে পারেননি। কিছু লেনদেনের ক্ষেত্রে তিনি “ব্যবসায়িক প্রয়োজনে টাকা চলাচল” বলে ব্যাখ্যা দিলেও কোনো নথি দেখাতে পারেননি। ইডি আগামীকাল সিদ্দিকিকে আদালতে পেশ করবে এবং হেফাজত চাইবে বলে জানা গেছে। আগামী কয়েক দিনে আরও দপ্তর, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বাড়িতে তল্লাশি হতে পারে।