দ্বিতীয় দফায় ভোটার তালিকার নিবিড় সংশোধন (Special Intensive Revision বা SIR) শুরু করল ভারতের নির্বাচন কমিশন (ECI)। সোমবার মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার জানান, ১২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে এই কর্মসূচি। এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ করা হবে। মধ্যরাত থেকেই ‘ফ্রিজ’ হয়ে যাবে বর্তমান ভোটার ডেটা, জানিয়েছে কমিশন।
প্রথম দফায় বিহারে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছিল এই প্রক্রিয়া। এবার দ্বিতীয় দফায় যুক্ত হয়েছে অন্ধ্র ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ, ছত্তীসগঢ়, গোয়া, গুজরাত, কেরল, লক্ষদ্বীপ, মধ্যপ্রদেশ, পুদুচেরি, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, উত্তরপ্রদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ।
কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, এই রাজ্যগুলির মধ্যেই আগামী দুই বছরের মধ্যে বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ ও তামিলনাড়ুতে আগামী বছরই ভোট নির্ধারিত, তাই আপডেটেড ভোটার তালিকা প্রস্তুত করাই এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য।
অসম বাদ পড়ল কেন?
সাংবাদিক সম্মেলনে অসমের নাম না থাকায় প্রশ্ন ওঠে। এ বিষয়ে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার স্পষ্ট জানান, “অসমের নাগরিকত্ব যাচাই প্রক্রিয়া এখনও সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে চলছে। সেখানে নাগরিকত্ব সংক্রান্ত আইন আলাদা বিধান অনুসরণ করে। তাই বর্তমান SIR প্রক্রিয়া অসমে প্রযোজ্য নয়। পৃথক নির্দেশিকার মাধ্যমে রাজ্যের ভোটার তালিকা সংশোধন করা হবে।”
অর্থাৎ, নাগরিকত্ব যাচাই ও এনআরসি-সংক্রান্ত আইনি কাঠামোর কারণেই এবার SIR-এর বাইরে থাকছে অসম।
দেশের কোন কোন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এই দফায় অংশ নিচ্ছে না? ECI Voter List Revision
ভারতে বর্তমানে ২৮টি রাজ্য ও ৮টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল রয়েছে। এর মধ্যে এবার SIR পরিচালিত হচ্ছে মাত্র ১২টিতে। বাকি ১৬টি রাজ্য ও ৫টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল এই দফায় অন্তর্ভুক্ত নয়।
রাজ্যগুলি: অন্ধ্রপ্রদেশ, অরুণাচলপ্রদেশ, অসম, বিহার, হরিয়ানা, হিমাচলপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, কর্ণাটক, মহারাষ্ট্র, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড, ওড়িশা, পঞ্জাব, সিকিম, তেলেঙ্গানা, ত্রিপুরা ও উত্তরাখণ্ড।
কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলি: চণ্ডীগড়, দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ, দিল্লি, জম্মু ও কাশ্মীর ও লাদাখ।
ভোটার তালিকা সংশোধনের টাইমলাইন
জ্ঞানেশ কুমারের বক্তব্য অনুযায়ী, স্বাধীনতার পর এটি নবমবারের মতো দেশজুড়ে ভোটার তালিকা সংশোধনের উদ্যোগ। আগের বড়সড় সংশোধনটি হয়েছিল ২০০২ থেকে ২০০৪ সালের মধ্যে।
সময়সূচি অনুযায়ী:
৪ নভেম্বর থেকে শুরু হবে নতুন ভোটার গণনা ও সংশোধনের কাজ।
৯ ডিসেম্বর প্রকাশিত হবে খসড়া ভোটার তালিকা।
৭ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত হবে চূড়ান্ত তালিকা।
এই প্রক্রিয়ার আওতায় প্রায় ৫১ কোটি ভোটারকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে কমিশনের হিসাব।


