ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল রাজধানী, মোদীর সতর্কবার্তা

১৭ ফেব্রুয়ারি, সোমবার সকালে দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকায় কম্পন (Delhi Earthquake) অনুভূত হয়। এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৪.০ মাত্রার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরিস্থিতি নিয়ে…

Earthquake Shakes Capital, Modi Issues Safety Warning

১৭ ফেব্রুয়ারি, সোমবার সকালে দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকায় কম্পন (Delhi Earthquake) অনুভূত হয়। এই ভূমিকম্পের তীব্রতা ছিল ৪.০ মাত্রার। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পরিস্থিতি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘শান্ত থাকুন এবং পরবর্তী কম্পনের জন্য সতর্ক থাকুন।’ তিনি আরও জানান যে কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।

জাতীয় ভূমিকম্প (Delhi Earthquake) গবেষণা কেন্দ্র (NCS) জানিয়েছে, ৪.০ মাত্রার ভূমিকম্পটি দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে অনুভূত হয়। এই ভূমিকম্পের কেন্দ্র ছিল নয়াদিল্লিতে, যা সকাল ৫:৩৬ মিনিটে ঘটেছিল। ভূমিকম্পটি পাঁচ কিলোমিটার গভীরে অনুভূত হয়। দিল্লি পুলিশ একটি পোস্টে লিখেছে, ‘ আশা করি সবাই নিরাপদে আছেন।’ তারা নাগরিকদের জরুরি সাহায্যের জন্য ১১২ হেল্পলাইনে কল করার আহ্বান জানিয়েছে। 

   

এই ভূমিকম্পের ফলে দিল্লি, নয়ডা, গ্রেটার নয়ডা এবং গাজিয়াবাদের অনেক বাসিন্দা তাদের বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন। PTI ভিডিওতে দেখা গেছে, দিল্লি-এনসিআর জুড়ে লোকেরা তাদের বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন, পরবর্তী ভূমিকম্পের জন্য চিন্তিত। এই অঞ্চলে বড় বড় অট্টালিকা থেকে অনেক বাসিন্দা নিরাপত্তার জন্য বাইরে চলে আসেন।

ভূমিকম্পের (Delhi Earthquake) সময় একটি জোরালো শব্দ শোনা যায়, যা পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক করে তোলে। এই অঞ্চলের ভূমিকম্পের কেন্দ্র দৌলাকুয়ানে ছিল, যেখানে দুর্গাবাই দেশমুখ কলেজ অফ স্পেশাল এডুকেশন অবস্থিত। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, ২০১৫ সালে এখানে ৩.৩ মাত্রার একটি ভূমিকম্পও অনুভূত হয়েছিল। এই এলাকায় প্রতি দুই-তিন বছরে ছোট আঘাত দেখা যায়, তবে এটি সাধারণত কম মাত্রার ভূমিকম্প।

বৃহত্তর দিল্লি অঞ্চলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি অনেক বেশি। দিল্লি এবং তার আশপাশের এলাকাগুলি ভারতের সিসমিক জোন ৪-এ অবস্থিত, যা একটি ইনট্রাপ্লেট অঞ্চল এবং এখানে মাঝারি থেকে উচ্চ মাত্রার ভূমিকম্পের ঝুঁকি রয়েছে, বিশেষ করে হিমালয় অঞ্চলের ভূমিকম্পের কারণে।

দিল্লিতে ভূমিকম্পের ইতিহাস বেশ পুরনো। ২০২০ সালে, ১২ এপ্রিল নর্থইস্ট দিল্লিতে ৩.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল। এরপর ১০ মে ২০২০-এ ৩.৪ মাত্রার একটি ভূমিকম্প এবং বেশ কিছু পরবর্তী আফটারশকও হয়েছিল। এছাড়া, ২০২০ সালের ২৯ মে রোঠাকের কাছে ৪.৪ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছিল, যা দিল্লির বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল।

এদিনের ভূমিকম্পের পরেও বড় ধরনের ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট পাওয়া যায়নি। তবে, সিসমিক অঞ্চলে অবস্থিত এই শহরগুলিতে ভূমিকম্পের পরবর্তী কম্পনগুলোর আশঙ্কা করা হচ্ছে। ভূমিকম্পের সময়, দিল্লির অনেক এলাকা এবং আশপাশের অঞ্চলের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে নিরাপদ স্থানে চলে গেছেন।

বিপদ এড়াতে, বিশেষজ্ঞরা সাধারণত কিছু সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেন, যেমন ভূমিকম্পের সময় খোলামেলা জায়গায় চলে যাওয়া এবং বড় বিল্ডিং বা অন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে না যাওয়া। ভূমিকম্পের পর, আফটারশক হতে পারে, তাই সেগুলির জন্যও প্রস্তুতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, দিল্লি এবং আশপাশের এলাকাগুলির বাসিন্দাদের ভূমিকম্পের সময় সতর্ক থাকতে হবে এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চলতে হবে। এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এই অঞ্চলটি সিসমিক জোন ৪-এ অবস্থিত এবং ভবিষ্যতে বড় ভূমিকম্পের জন্য প্রস্তুত থাকা জরুরি। এমন পরিস্থিতিতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বার্তা হলো, ‘শান্ত থাকুন, সতর্ক থাকুন, এবং নিরাপদে থাকুন।’