কলকাতা: যেখানে কুমোরটুলির প্রতিমা জাহাজে চড়ে সাতসমুদ্র পেরিয়ে পাড়ি দেয় ভিনদেশে, সেখানে কাশীতে এমন এক দুর্গাপ্রতিমা (Durga) রয়েছে যাকে হাজার চেষ্টার পরেও এক চুলও সরানো যায় না! সেই ১৯৬৭ সাল থেকে ৬ ফুটের এক চালার একই মাটির দুর্গা প্রতিমা বছরের পর বছর পূজিত হচ্ছেন কাশীর মুখোপাধ্যায় পরিবারে। ২৬০ বছর ধরে বিজয়া দশমীর দিন হয়না প্রতিমা বিসর্জন।
শিবের কাশীতে আড়াই শতকেরও বেশি সময় ধরে একই স্থানে অধিষ্ঠান করে আছেন মা দুর্গা। দড়ি দিয়ে টেনে, পালোয়ান দিয়ে তোলার হাজারও চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। এক চুলও সরানো যায়নি একচালার প্রতিমাটিকে। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে অলৌকিক কথা। বহুকাল আগে পরিবারের প্রধান কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্নে এসেছিলেন মা দুর্গা। দেবী নাকি তাঁকে বলেছিলেন, “কাশীবাসির সঙ্গেই থাকবেন তিনি। তাঁকে এখান থেকে সরানো যাবে না”।
কালীপ্রসন্নের পরবর্তী প্রজন্মও তাই ২৬০ বছর ধরে ওই একই মাটির প্রতিমার পুজো (Durga Puja) করে আসছেন। বারাণসির বাঙালি তলার পুরাতন দুর্গা বাটির (Puratan Durga Bati) এই ঐতিহ্যবাহী পুজো দেখতে সমগ্র দেশ থেকে ছুটে আসেন ভক্তরা। এমনকি টালিগঞ্জের শিল্পীরাও এই পুজো দেখতে যান বারাণসিতে।
মুখোপাধ্যায় পরিবারের এক সদস্য ইন্দ্রনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিজয়া দশমীর দিন সব ঠাকুর বিসর্জন হলেও আমাদের মা দুর্গা আমাদের সঙ্গেই বছরের পর বছর ধরে আছেন। দেবীকে নিত্যপুজো, আরতি এবং প্রসাদ দেওয়া হয় বছরভর”। কাশীর এই পুরাতন দুর্গাবাটির পুজো আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার (ASI) দ্বারা নিবন্ধিত। শুধু দুর্গা প্রতিমাই নয়। মুখোপাধ্যায় পরিবারের কাছে একাদশ শতাব্দীর একটি গ্রানাইট বিষ্ণু মূর্তি (সম্ভবত পাল আমলের) এবং ২২টি শিব লিঙ্গ। কাশীর ওই জমিতে বসত বাড়ি তৈরির সময় মাটির তল থেকে মূর্তি গুলো পাওয়া গেছিল বলে দাবি করে পরিবারটি।