জম্মু ও কাশ্মীরে সেনা ক্যাম্পে ড্রোন আতঙ্ক

জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্বা জেলার একটি সেনা ক্যাম্পে শুক্রবার রাতে একটি ছোট ড্রোন উদ্ধার করা হয়েছে(Jammu And Kashmir), যা সম্ভবত বিয়ের অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত…

drone panic in army camp Jammu And Kashmir

জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্বা জেলার একটি সেনা ক্যাম্পে শুক্রবার রাতে একটি ছোট ড্রোন উদ্ধার করা হয়েছে(Jammu And Kashmir), যা সম্ভবত বিয়ের অনুষ্ঠানে ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত হয়েছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে। কর্মকর্তাদের মতে, ড্রোনটি বারি ব্রাহ্মণা ক্যান্টনমেন্টের সাপ্লাই ডিপোর কাছে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া গেছে।

এই ঘটনা এলাকায় উত্তেজনা সৃষ্টি করলেও, সেনা ও পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে যে এটি কোনো নিরাপত্তা হুমকির সঙ্গে সম্পর্কিত নয় বলে প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে। ড্রোনটি তদন্তের জন্য স্থানীয় পুলিশের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

   

সেনা কর্মীরা শুক্রবার গভীর রাতে ক্যাম্পের ভিতরে ড্রোনটি পড়ে থাকতে দেখেন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, ড্রোনটি সম্ভবত কাছাকাছি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠানে ভিডিও বা ছবি তোলার জন্য ব্যবহৃত হচ্ছিল এবং এর অপারেটর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় এটি সেনা ক্যাম্পের মধ্যে চলে আসে। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ড্রোনটি একটি বাণিজ্যিক কোয়াডকপ্টার, যা সাধারণত ইভেন্ট ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত হয় এবং এতে কোনো সন্দেহজনক উপকরণ বা নজরদারি সরঞ্জাম পাওয়া যায়নি।

এই ঘটনা সাম্বা জেলার বারি ব্রাহ্মণা এলাকায় ঘটেছে, যা আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত একটি সংবেদনশীল অঞ্চল। জম্মু ও কাশ্মীরে ড্রোনের মাধ্যমে নিরাপত্তা হুমকির ইতিহাস থাকায় এই ঘটনা প্রথমে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছিল।

অতীতে, বিশেষ করে ২০২১ সালে জম্মু বিমানবন্দরে ড্রোন হামলার পর থেকে এই অঞ্চলে ড্রোন কার্যকলাপের উপর কড়া নজরদারি রাখা হয়। তবে এই ক্ষেত্রে, কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে ড্রোনটির কোনো ক্ষতিকর উদ্দেশ্য ছিল না বলে মনে হচ্ছে।

স্থানীয় পুলিশ এবং সেনা কর্মকর্তারা ড্রোনটির উৎপত্তি এবং এর অপারেটরের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছে। এটি কাছাকাছি কোনো বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে এসেছে কিনা তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে। সাম্বা জেলার পুলিশ সুপারিন্টেন্ডেন্ট জানিয়েছেন, ড্রোনটির ফ্লাইট পাথ এবং এর অপারেটরের বিষয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলছে।

Advertisements

এই ধরনের ঘটনা এড়াতে ভবিষ্যতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীরে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উদ্বেগ বেড়েছে। ২০২১ সালে জম্মু বিমানবন্দরে ড্রোনের মাধ্যমে বিস্ফোরক ফেলার ঘটনার পর থেকে স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনী ড্রোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে কঠোর নিয়ম জারি করেছে। সাম্বা, রাজৌরি, কাঠুয়া, এবং অন্যান্য জেলায় বাণিজ্যিক ড্রোনের ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। এই ঘটনা আবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতার দিকে ইঙ্গিত করছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এই ধরনের ঘটনা তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করে, বিশেষ করে যেহেতু এই অঞ্চলটি সংবেদনশীল। তারা দাবি করেছেন যে ড্রোনের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আরও কঠোর নিয়ম এবং সচেতনতামূলক প্রচার প্রয়োজন। একইসঙ্গে, সেনা ও পুলিশ জনসাধারণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে এবং জানিয়েছে যে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এই ঘটনা স্থানীয় প্রশাসন এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে আরও সতর্ক করেছে। ড্রোন প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান ব্যবহার এবং এর সম্ভাব্য অপব্যবহার রোধে কাউন্টার-ড্রোন প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে, ভারতীয় সেনাবাহিনী এবং সীমান্তরক্ষী বাহিনী ড্রোনের হুমকি মোকাবিলায় উন্নত প্রযুক্তি মোতায়েন করেছে।

নবান্নে শুরু হচ্ছে ডিজিটাল কন্ট্রোল রুম, রাজ্যজুড়ে সিসিটিভি নজরদারি ২৪ ঘণ্টা

এই ঘটনা যদিও প্রাথমিকভাবে নিরীহ বলে মনে হচ্ছে, তবুও এটি নিরাপত্তা ব্যবস্থার উপর নতুন করে আলোকপাত করেছে। স্থানীয় বাসিন্দারা এবং নিরাপত্তা কর্মকর্তারা আশা করছেন যে তদন্তের মাধ্যমে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ বিবরণ প্রকাশ পাবে এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হবে।