নয়াদিল্লি, ১৯ অক্টোবর: ভারতের প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা একটি কৌশলগত মাস্টারস্ট্রোক করেছে যা আঞ্চলিক বিমান শক্তির সমীকরণকে বদলে দিয়েছে। একটি চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন অনুসারে, ডিআরডিও (DRDO) সম্প্রতি অপারেশন সিঁদুরের সময় ভারতীয় ভূখণ্ডে উদ্ধার করা একটি চিনা পিএল-১৫ই এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্রের মূল প্রযুক্তি অধ্যয়ন করেছে এবং এটিকে তাদের দেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ‘অ্যাস্ট্রা মার্ক-২’-এর সাথে একীভূত করেছে (Astra Mark-II PL-15E missile)।
ডিআরডিও সূত্রের খবর, পিএল-১৫ই থেকে প্রাপ্ত মূল প্রযুক্তি এখন দ্রুত ‘অ্যাস্ট্রা মার্ক-২’ প্রোগ্রামে সংহত করা হচ্ছে। এই রিভার্স ইঞ্জিনিয়ারিং উদ্যোগ ‘অ্যাস্ট্রা মার্ক-II’-কে এত বড় প্রযুক্তিগত অগ্রগতি দেবে যে এটি আমেরিকান AIM-260 JATM এবং ইউরোপীয় উল্কার মতো পশ্চিমি সিস্টেমগুলির সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারে বা এমনকি তাদের ছাড়িয়ে যেতে পারে। এটি একটি বিরল ঘটনা যেখানে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরাসরি তথ্য একটি দেশের দেশীয় অস্ত্র কর্মসূচিকে এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে তুলে ধরছে।
চিনা প্রযুক্তি কীভাবে এই শক্তি বৃদ্ধি করেছে?
PL-15E ক্ষেপণাস্ত্রের ধ্বংসাবশেষ ভারতীয় প্রকৌশলী এবং বিজ্ঞানীদের জন্য একটি প্রযুক্তিগত পুরস্কারের চেয়ে কম কিছু নয়। তিনি ক্ষেপণাস্ত্রের দুটি গুরুত্বপূর্ণ অংশের গভীর বিশ্লেষণ করেছেন:
১. ক্ষেপণাস্ত্রের ‘সেন্সর’: AESA সিকার
PL-15E তে AESA (অ্যাক্টিভ ইলেকট্রনিকলি স্ক্যানড অ্যারে) রাডার সিকার প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে। ডিআরডিও এই সিকারের নকশা বিশ্লেষণ করেছে এবং একটি নতুন স্থাপত্য চিহ্নিত করেছে। এই নতুন তথ্যের উপর ভিত্তি করে, ‘অ্যাস্ট্রা মার্ক-II’ উন্নত করা হচ্ছে, যা শত্রুর ইলেকট্রনিক যুদ্ধের মুখেও লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার অতুলনীয় ক্ষমতা প্রদান করে।
২. ক্ষেপণাস্ত্রের ‘ইঞ্জিন’: দ্বৈত-পালস প্রপালশন
চিনা ক্ষেপণাস্ত্রের দ্বৈত-পালস প্রপালশন সিস্টেম, যা উন্নত প্রপেলেন্টের উপর ভিত্তি করে তৈরি, ডিআরডিওর জন্য গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা প্রদান করে। এই প্রযুক্তিটি এখন Astra Mark-II এর নতুন মোটর ডিজাইন উন্নত করার জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে। এটি Mark-II কে দীর্ঘ দূরত্বের জন্য Mach 5 এর উপরে গতি বজায় রাখতে সক্ষম করবে, যার ফলে এর এনগেজমেন্ট রেঞ্জ 200 কিলোমিটারেরও বেশি বৃদ্ধি পাবে।
শত্রুর কৌশল সম্পর্কে জ্ঞান
এছাড়াও, ডিআরডিও পিএল-১৫ এর অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা এবং ভবিষ্যতে চিনা ক্ষেপণাস্ত্র মোকাবিলায় ব্যবহৃত ইলেকট্রনিক পাল্টা-প্রতিরোধ ব্যবস্থা (ECCM) এড়াতে এর কৌশল সম্পর্কেও জেনেছে। এই সাফল্য ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণায় এক নতুন দিকনির্দেশনা দেবে, যার ফলে ভারত প্রতিরক্ষা প্রযুক্তিতে বিশ্বব্যাপী পরাশক্তি হিসেবে তার অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে সক্ষম হবে।