বেঙ্গালুরু: অপারেশন থিয়েটারে ব্যবহার হওয়া চেতনানাশক ওষুধ (Anesthetic Drugs) প্রোপোফল দিয়ে স্ত্রীকে হত্যা করলেন এক চিকিৎসক স্বামী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুর মারাথাল্লিতে। জানা গিয়েছে, চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক স্ত্রী ডঃ ক্রুতিকা এম রেড্ডীকে স্বল্প পরিমাণে চেতনানাশক ওষুধ প্রোপোফল দিতেন জেনারেল সার্জেন ডঃ মহেন্দ্র রেড্ডী।
পুলিশ সূত্রে খবর, ২০২৪ সালের ২৬ মে গাঁটছড়া বাধেন ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত ওই চিকিৎসক দম্পতি। কিন্তু শারীরিক অসুস্থতা জনিত কারণে মারাথাল্লিতে বাবার বাড়িতেই থাকতেন ক্রুতিকা। জানা গিয়েছে, ক্রুতিকার সঙ্গে দেখা করতে যেতেন মহেন্দ্র এবং দুইদিন ধরে ক্রুতিকার শিরায় প্রোপোফল ইনজেকশন দিয়েছিলেন তিনি।
এই প্রক্রিয়াকে ক্রুতিকার চিকিৎসার অংশ হিসেবে দাবী করেছিলেন তিনি। এরপর চলতি বছর ২৩ এপ্রিল গুরুতর অসুস্থ বধ করতে শুরু করেন ডঃ ক্রুতিকা। তাঁকে পার্শ্ববর্তী একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেছিলেন।
রহস্যের জট খুলে খুনি সব্যস্ত স্বামী
প্রাথমিকভাবে ডঃ ক্রুতিকার মৃত্যুকে স্বাভাবিক মৃত্যু বলেই মনে করা হয়েছিল। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর রিপোর্ট জমা করেছিল। কিন্তু, মৃত্যু নিয়ে কৃত্তিকার বড় বোন, রেডিওলজিস্ট ডঃ নিকিতা এম রেড্ডীর সন্দেহ হয় এবং তিনি বোনের মৃত্যু নিয়ে বিস্তারিত তদন্তের উপর জোর দেন।
ছয় মাস পর, ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি (FSL) রিপোর্টে ক্রুতিকার একাধিক অঙ্গে প্রোপোফলের উপস্থিতি পাওয়া যায় এবং প্রমাণিত হয় যে ক্রুতিকার মৃত্যু অ্যানেস্থেটিক (Anesthetic Drugs) যৌগের কারণে হয়েছে। ফরেন্সিক রিপোর্টের ভিত্তিতে মারাথাল্লি পুলিশ ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS), ২০২৩-এর ধারা ১০৩-এর অধীনে মামলাটিকে খুন হিসাবে পুনর্বিবেচনা করে এবং মহেন্দ্রকে উদুপির মণিপাল থেকে গ্রেফতার করা হয়।
ক্রুতিকাকে খুনের পর বেঙ্গালুরু ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছিলেন ডঃ মহেন্দ্র এবং তাঁর বিরুদ্ধে লুক আউট নোটিশ জারি করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, ওটি এবং আইসিইউ-এর ওষুধ সম্পর্কে জ্ঞান থাকার কারণে ক্রুতিকাকে খুন করতে সেটিকেই অস্ত্র হিসেবে বেছে নেন মহেন্দ্র।
স্বল্প পরিমাণে চেতনানাশক ওষুধ (Anesthetic Drugs) শিরায় দিতে থাকায় ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়েন ক্রুতিকা এবং ঘটনাটিকে স্বাভাবিক মৃত্যু হিসাবে চিত্রিত করার চেষ্টা করেছিলেন মহেন্দ্র, বলে অভিযোগ। কীভাবে মহেন্দ্র খুনের পরিকল্পনা এবং তাঁর চিকিৎসা জ্ঞানকে ব্যবহার করেছিলেন, সেই বিষয়ে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। পরে জানা যায়, মহেন্দ্রর পরিবারে আগেও অপরাধ ঘটেছে।