চীন-ভারত সম্পর্কের নতুন অধ্যায়, ফের মিলবে সাংহাই–দিল্লি সরাসরি ফ্লাইট

নয়াদিল্লি: পাঁচ বছরের অপেক্ষার পর ফের খুলতে চলেছে ভারত-চীনের (India China) আকাশপথ। আগামী ৯ নভেম্বর থেকে চায়না ইস্টার্ন এয়ারলাইনস (China Eastern Airlines) পুনরায় চালু করছে সাংহাই ও নয়াদিল্লির মধ্যে সরাসরি বিমান পরিষেবা। দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের স্বাভাবিকীকরণের পথে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Advertisements

চলতি বছরের আগস্টে তিয়ানজিন-এ অনুষ্ঠিত শাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন (SCO) সম্মেলনের সাইডলাইনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিন পিং-এর বৈঠকের পর এই ঘোষণা আসে। বৈঠকে দুই দেশই সম্মত হয় যে, সীমিত শহরগুলির মধ্যে সরাসরি ফ্লাইট পুনরায় চালু করা হবে, যা দুই দেশের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করবে।

চায়না ইস্টার্ন জানিয়েছে, নতুন পরিষেবা প্রতি বুধবার, শনিবার এবং রবিবার চলবে। সাংহাইয়ের পুডং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (Pudong Airport) থেকে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে ফ্লাইট ছাড়বে, এবং দিল্লির ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর (IGIA)-এ পৌঁছবে বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়)। ফেরার পথে বিমানটি দিল্লি থেকে রাত ৭টা ৫৫ মিনিটে উড়ান দেবে এবং পরদিন ভোর ৪টা ১০ মিনিটে সাংহাই পৌঁছবে।

সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এই রুটে Airbus A330-200 ব্যবহার করা হবে, যা দীর্ঘ দূরত্বের জন্য উপযুক্ত এবং যাত্রীদের আরামদায়ক ভ্রমণের অভিজ্ঞতা প্রদান করে। টিকিট বিক্রিও ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গেছে।

এই ঘোষণা এমন সময় এসেছে যখন ভারতের বিমান সংস্থা ইন্ডিগো (IndiGo) ইতিমধ্যে কলকাতা-গুয়াংঝাউ (Guangzhou) রুটে প্রতিদিনের ফ্লাইট চালু করার ঘোষণা দিয়েছে। খুব শীঘ্রই দিল্লি-গুয়াংঝাউ রুটেও নতুন পরিষেবা শুরু হতে পারে বলে জানা গিয়েছে।

Advertisements

২০২০ সালের গোড়ায় কোভিড-১৯ মহামারির কারণে ভারত-চীনের মধ্যে সব সরাসরি বিমান পরিষেবা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। এর পরেই লাদাখ সীমান্তে সংঘাত ও উত্তেজনা আরও বাড়ে, যা দুই দেশের সম্পর্কে ছায়া ফেলে। সেই উত্তেজনার জেরে দীর্ঘ সময় বন্ধ থাকে দুই দেশের আকাশপথ।

তবে, গত বছরের অক্টোবর মাসে উভয় দেশ দেমচক (Demchok) ও দেপসাং (Depsang)-এর মতো গুরুত্বপূর্ণ সংঘর্ষ পয়েন্ট থেকে সেনা প্রত্যাহারে সম্মত হয়। এরপর থেকেই সীমান্তে শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

বাণিজ্য মহল মনে করছে, এই নতুন ফ্লাইট পরিষেবা পুনরায় শুরু হলে দুই দেশের ব্যবসায়িক যোগাযোগ, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় অনেকটাই বাড়বে। বিশেষজ্ঞদের মতে, “এই পদক্ষেপ কেবল আকাশপথের পুনরুদ্ধার নয়, বরং দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের নতুন অধ্যায়ের সূচনা।”

চায়না ইস্টার্ন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “আমরা ভারত ও চীনের জনগণের মধ্যে যোগাযোগ এবং আস্থা পুনর্গঠনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাংহাই–দিল্লি রুট পুনরায় চালুর মাধ্যমে আমরা সেই লক্ষ্যে আরও এক ধাপ এগোলাম।”