ডিজিটাল গ্রেফতার তরুণী! ভুয়ো পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভিডিও কল

ডিজিটাল গ্রেফতার (digital arrested) তরুণী! ভুয়ো পুলিশ পরিচয় (fake police identity) দিয়ে ভিডিও কল। উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে ডিজিটাল গ্রেফতারের (digital arrested) ঘটনা সামনে এসেছে। একজন ইঞ্জিনিয়ারিং…

digital arrested

ডিজিটাল গ্রেফতার (digital arrested) তরুণী! ভুয়ো পুলিশ পরিচয় (fake police identity) দিয়ে ভিডিও কল। উত্তরপ্রদেশের গোরখপুরে ডিজিটাল গ্রেফতারের (digital arrested) ঘটনা সামনে এসেছে। একজন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীকে ডেকে পাঠায় ভুয়া ব্যাংক আধিকারিক। তাকে হুমকি দিয়ে বললেন, তিনি (তরুণী) ঋণ নিয়েছ, যা শোধ করেনি। এমন পরিস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এরপর আরেকজন ভুয়ো পুলিশ পরিচয় দিয়ে ভিডিও কল করেন। বলেন হায়দ্রাবাদে এসে জামিন নিতে হবে।

অনলাইনে জামিনের জন্য টাকা পাঠাতে বলা হয় এবং বুকে ট্যাটু সহ ওই তরুণীকে পুরো শরীর দেখাতে বলা হয়। যাতে তাকে চিহ্নিত করা যায়। ভিডিও করার পর ওই ছাত্রীকে ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে ওই ব্যক্তি। ৩৮ হাজার টাকা নেওয়া হয় ওই তরুণীর থেকে। এর পর আরও ১ লাখ টাকা দাবি করতে থাকে। এই অবস্থায় ছাত্রী থানায় অভিযোগ করে মামলা দায়ের করে।

   

ঘটনাটি ঘটেছে ক্যান্ট থানা এলাকার। নাগাল্যান্ডের ডিমাপুর জেলার ওই ছাত্রী গোরখপুরের মদন মোহন মালব্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করে। তার মোবাইল ফোনে কল আসে যে তিনি এসবিআই ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়েছেন কিন্তু পরিশোধ করেননি। যে কারণে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। অবিলম্বে মূল পরিমাণ এবং ১ লক্ষ টাকা সুদ পরিশোধ করতে হবে, অন্যথায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হবে।

তারপর কিছুক্ষণ পর ছাত্রটির একটি হোয়াটসঅ্যাপ কল আসে। এতে দেখা যায় পুলিশের ইউনিফর্ম পরা এক ব্যক্তি। তিনি বলেন, আপনার বিরুদ্ধে হায়দ্রাবাদে এফআইআর দায়ের করা হয়েছে। আপনি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এখানে এসে জামিন নিন, না হলে পুলিশ আপনাকে গ্রেফতার করবে।ওই শিক্ষার্থী জানান, তিনি কোনো ঋণ নেননি। তাঁর বিরুদ্ধে আবার মামলা হলো কেন? লোকটি উত্তরে বলেন, তিনি এসব জানেন না। আপনার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। আপনার কথা সত্য নাকি ব্যাংকের লোকের কথা, তা পরে জানা যাবে আপনাকে আদালতে হাজির হতে হবে।

ভুয়ো পুলিশের কথা শুনে ছাত্রটি ভয় পেয়ে যায়। তিনি বলেন, এত তাড়াতাড়ি ওখানে আসা মুশকিল। ওই ব্যক্তিটি একজন পুলিশ অফিসার হিসাবে নিজেকে জাহির করে বলেন, আপনার জামিন অনলাইনে নেওয়া উচিত। এর জন্য খরচ হবে ৩৮০০০ টাকা। তরুণী তার নির্দেশে টাকা ট্রান্সফার করে। এরপর ওই ব্যক্তি বলেন, আপনার বুকে ট্যাটু আছে, দেখান কারণ এটি না দেখলে আপনাকে চিহ্নিত করা যাবে না এবং আপনি জামিনও পেতে পারবেন না। এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ আপনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।

লোকটির অনুরোধে ওই ছাত্রী তার জামাকাপড় খুলে ফেলে। এর পর ফোন কেটে দাওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে আবার কল আসে। তিনি বলেন, আপনার অশ্লীল ভিডিও করা হয়েছে। আপনি অবিলম্বে আরও ১০০০০০ টাকা পাঠান, অন্যথায় এই পুরো ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে যাবে। কোথাও মুখ দেখাতে পারবে না। আপনার পরিবারকে কী উত্তর দেবেন? ছাত্রী টাকা দিতে অস্বীকার করলে তাঁকে হুমকি দাওয়া হয়। এরপর পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই তরুণী পড়ুয়া।

পুলিশ সূত্রে খবর, ছাত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অজানা নম্বর দুটির বিরুদ্ধেই মামলা করেছে। দুজনকেই শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে। তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এখনও অবধি গোরক্ষপুর শহরে ডিজিটাল গ্রেফতারের শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। পুলিশ সব সময় মানুষকে সতর্ক থাকতে বলে। এর পরও প্রতারণার শিকার হচ্ছেন মানুষ। পুলিশের অভিধানে কোথাও ডিজিটাল গ্রেফতার শব্দটি উল্লেখ নেই। তার মানে পুলিশ এ ধরনের কোনো ব্যবস্থা নেয় না।