কবে আকাশে ফিরবে সেনার ‘ধ্রুব’? এখনও চলছে তদন্ত

নয়াদিল্লি: ভারতের সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হেলিকপ্টার ধ্রুব৷ তবে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও,  এখনও পুরোপুরি আকাশে ফিরতে পারেনি সেটি। একাধিক দুর্ঘটনার পর এই হেলিকপ্টারগুলিকে একসঙ্গে ‘গ্রাউন্ড’…

Dhruv Helicopter grounded

নয়াদিল্লি: ভারতের সামরিক বাহিনীর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হেলিকপ্টার ধ্রুব৷ তবে তিন মাস পেরিয়ে গেলেও,  এখনও পুরোপুরি আকাশে ফিরতে পারেনি সেটি। একাধিক দুর্ঘটনার পর এই হেলিকপ্টারগুলিকে একসঙ্গে ‘গ্রাউন্ড’ করা হয়েছিল। এখন ধাপে ধাপে নিরাপদ ইউনিটগুলিকে ফের চালানোর অনুমতি মিলছে, কিন্তু পুরো বহর এখনও পর্যবেক্ষণে(Dhruv Helicopter Grounded)।

HAL (হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড)-এর তৈরি এই হেলিকপ্টার ভারতের সেনা, বিমানবাহিনী, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডে একযোগে ব্যবহার হয়। শুধু সেনার কাছেই রয়েছে ১৮০টির বেশি ধ্রুব এর মধ্যে ৬০টি অস্ত্রসজ্জিত ‘রুদ্র’ সংস্করণ। বায়ুসেনার রয়েছে ৭৫টি, নৌবাহিনীর ২৪টি এবং কোস্ট গার্ডের ১৯টি।

   

দুর্ঘটনা আর উদ্বেগ

চলতি বছরে একাধিক দুর্ঘটনা ধ্রুবকে ঘিরে নতুন করে উদ্বেগ বাড়িয়েছে। পোরবন্দর, পঠানকোট, মুম্বই, কোচি থেকে শুরু করে অরুণাচল, দেশজুড়ে একাধিক ক্র্যাশ ঘটেছে। এর মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা হয়েছিল ২০২২ সালের অক্টোবরে অরুণাচলে, যেখানে রুদ্র হেলিকপ্টার ভেঙে পড়ে প্রাণ যায় পাঁচ সেনাকর্মীর।

HAL সূত্রে জানা যাচ্ছে, পোরবন্দর দুর্ঘটনায় হেলিকপ্টারের ‘সোয়াশ প্লেট’-এ ফাটল ধরা পড়ে। এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ, যা রটার ব্লেড ঘোরানো ও নিয়ন্ত্রণে ভূমিকা রাখে। এই ত্রুটির তদন্ত এখনও চলছে।

HAL জানিয়েছে, এখনও পর্যন্ত ধ্রুবের মোট ২৮টি দুর্ঘটনার মধ্যে ১৩টি ঘটেছে যান্ত্রিক সমস্যায়, ১৩টি মানবিক ভুলে, আর দু’টি দুর্ঘটনার কারণ মেলেনি।

সীমান্তে চাপ, ফের চালু কিছু হেলিকপ্টার

পহেলগামের সন্ত্রাসবাদী হামলার পর সেনার প্রয়োজন বাড়তেই কিছু ধ্রুব হেলিকপ্টার ফের চালানো শুরু হয়েছে। তবে HAL খুবই সতর্কভাবে, ধাপে ধাপে নিরাপদ বলে প্রমাণিত ইউনিটগুলিকেই অনুমতি দিচ্ছে। এখনও অনেক হেলিকপ্টার পরিদর্শনের অপেক্ষায় রয়েছে।

Advertisements

বিশ্বাস ফেরাতে হবে প্রযুক্তিতেই নয়, ব্যবস্থাপনাতেও

ধ্রুব শুধু একটি হেলিকপ্টার নয়, আত্মনির্ভর ভারতের প্রতিরক্ষা শক্তির অন্যতম স্তম্ভ। তাই পরপর দুর্ঘটনা শুধু প্রযুক্তির দোষে ঠেলা যায় না, প্রশিক্ষণ, রক্ষণাবেক্ষণ, এবং দায়বদ্ধতার মতো বিষয়গুলিও সমান গুরুত্বপূর্ণ।

HAL-এর চেয়ারম্যান ডি কে সুনীল স্পষ্টই বলেছেন, নকশায় বড় সমস্যা নেই, কিন্তু সম্ভবত রক্ষণাবেক্ষণ ও অপারেশনাল ব্যবস্থাপনায় ফাঁক রয়ে গিয়েছে।

চূড়ান্ত তদন্ত রিপোর্ট হাতে না আসা পর্যন্ত পুরো বহর আকাশে ফিরবে না। আর রিপোর্টের ফলাফলের উপরেই নির্ভর করবে, ভবিষ্যতে ধ্রুবকে ঘিরে সেনাবাহিনীর আস্থা কতটা বজায় থাকে।