‘কোচিং সেন্টার’ গুলিকে ‘পোচিং সেন্টার’ বলে কটাক্ষ ধনখড়ের

ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় (Dhankhar) কোচিং সেন্টারগুলির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, এই কেন্দ্রগুলি ‘প্রতিভা শোষণের কেন্দ্র’ বা ‘পোচিং সেন্টার’ হয়ে উঠেছে, যা তরুণ প্রজন্মের…

Dhankhar mocks coaching canters

ভারতের উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় (Dhankhar) কোচিং সেন্টারগুলির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করে বলেছেন, এই কেন্দ্রগুলি ‘প্রতিভা শোষণের কেন্দ্র’ বা ‘পোচিং সেন্টার’ হয়ে উঠেছে, যা তরুণ প্রজন্মের জন্য ‘ব্ল্যাক হোলের ’-এর মতো। তিনি বলেন, “কোচিং সেন্টারগুলি ছত্রাকের মতো গজিয়ে উঠছে। এটি আমাদের যুব সমাজের জন্য, যারা আমাদের ভবিষ্যৎ, অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে এভাবে কলঙ্কিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হতে দেওয়া যায় না।” উপরাষ্ট্রপতি (Dhankhar) আরও বলেন, এই সেন্টারগুলি বিলবোর্ড এবং সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের জন্য বিপুল অর্থ ব্যয় করছে, যা অর্থের সঠিক ব্যবহার নয় এবং এই বিজ্ঞাপনগুলি আমাদের সভ্যতার নীতির জন্য ‘চোখের বিষ’।

   

কোচিং সেন্টারের ক্রমবর্ধমান প্রভাব

উপরাষ্ট্রপতি (Dhankhar) ধনখড় একটি অনুষ্ঠানে বলেন, কোচিং সেন্টারগুলি শিক্ষার্থীদের প্রতিভাকে একটি নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মধ্যে আটকে ফেলছে, যা তাদের সৃজনশীলতা এবং স্বাধীন চিন্তাশক্তিকে দমিয়ে দিচ্ছে। তিনি বলেন, “কোচিং সেন্টারগুলি আমাদের তরুণ প্রজন্মের প্রতিভাকে শোষণ করছে।

তারা শিক্ষার্থীদের স্বাধীনভাবে চিন্তা করার সুযোগ না দিয়ে একটি যান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বন্দি করছে।” তাঁর মতে, এই প্রতিষ্ঠানগুলি শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির নামে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করছে, যা তাদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।বিজ্ঞাপনের নামে অর্থের অপচয়ধনখড় কোচিং সেন্টারগুলির বিজ্ঞাপন কৌশল নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন।

তিনি (Dhankhar) বলেন, “বিলবোর্ড এবং সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপনের জন্য কোটি কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। এই অর্থ শিক্ষার মান উন্নয়ন বা শিক্ষার্থীদের কল্যাণে ব্যবহার করা যেত।” তিনি এই বিজ্ঞাপনগুলিকে ‘আকর্ষণীয় কিন্তু বিভ্রান্তিকর’ বলে বর্ণনা করেন, তিনি আরও বলেন, এই ধরনের বিজ্ঞাপন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যে অবাস্তব প্রত্যাশা তৈরি করে এবং তাদের ভুল পথে পরিচালিত করে।

শিক্ষাব্যবস্থার কলঙ্ক

উপরাষ্ট্রপতি (Dhankhar) জোর দিয়ে বলেন, কোচিং সেন্টারগুলির অবাধ বিস্তার ভারতের শিক্ষাব্যবস্থাকে কলঙ্কিত করছে। তিনি বলেন, “আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা সৃজনশীলতা ও জ্ঞানের বিকাশের জন্য হওয়া উচিত, কিন্তু কোচিং সেন্টারগুলি এটিকে বাণিজ্যিকীকরণের দিকে নিয়ে যাচ্ছে।” তিনি সরকার এবং সমাজকে এই ‘বিপজ্জনক প্রবণতা’র বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানান। ধনখড় বলেন, “আমাদের যুব সমাজ আমাদের ভবিষ্যৎ। তাদের প্রতিভাকে এভাবে নষ্ট হতে দেওয়া যায় না।”

Advertisements

কোচিং শিল্পের বর্তমান চিত্র

ভারতের কোচিং শিল্প বর্তমানে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বাজারে পরিণত হয়েছে, যেখানে জেইই, নিট, ইউপিএসসি এবং অন্যান্য প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী প্রতি বছর কোচিং নেয়। বিশেষ করে রাজস্থানের কোটা, দিল্লি এবং পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুর ও কলকাতার মতো শহরগুলি কোচিং হাব হিসেবে পরিচিত। তবে এই শিল্পের অতিরিক্ত বাণিজ্যিকীকরণ এবং শিক্ষার্থীদের উপর চাপের অভিযোগ বহুদিন ধরেই উঠছে। সম্প্রতি কোটায় শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার ঘটনা এই সমস্যার গুরুত্ব আরও প্রকট করেছে।

সরকারি পদক্ষেপের প্রয়োজনীয়তা (Dhankhar)

ধনখড় (Dhankhar) বলেন, “আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে হবে যাতে শিক্ষার্থীদের কোচিং সেন্টারের উপর নির্ভর করতে না হয়।” তিনি স্কুল ও কলেজগুলিতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতির সুবিধা বাড়ানোর পক্ষে মত প্রকাশ করেন। শিক্ষাবিদরা বলছেন, কোচিং সেন্টারগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা যেতে পারে।

উপরাষ্ট্রপতি (Dhankhar) জগদীপ ধনখড়ের মন্তব্য কোচিং সেন্টারগুলির অবাধ বিস্তার এবং শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। তাঁর এই মন্তব্য শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার এবং শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর নতুন করে আলোকপাত করেছে।

নবান্নের কড়া বার্তা: পঞ্চায়েত মূল্যায়নে নতুন ১০ শর্ত, না মানলে অনুদান বন্ধ

সরকার এবং সমাজকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে ভারতের তরুণ প্রজন্ম তাদের প্রতিভাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারে। এই ইস্যু আগামী দিনে কীভাবে সমাধান করা হয়, তা নিয়ে সকলের নজর রয়েছে।