‘চক্রব্যূহে জড়ালে বের হওয়া মুশকিল’, পদত্যাগের পর প্রথম জনসভায় ধনখড়ের

উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে আচমকা ইস্তফা দেওয়ার চার মাস পর, প্রথমবারের মতো জনসমক্ষে এলেন জগদীপ ধনখড়। শুক্রবার ভোপালে আরএসএস (RSS)-এর সর্বভারতীয় কার্যনির্বাহী সদস্য মনমোহন বৈদ্যের লেখা বই ‘হম অউর য়হ বিশ্ব’ (Hum Aur Yah Vishva) -এর প্রকাশনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি ‘ন্যারেটিভের চক্রব্যূহ’ থেকে সতর্ক থাকার কথা বলেন, যা রাজনৈতিক মহলে জল্পনা বাড়িয়েছে।

Advertisements

‘ন্যারেটিভের চক্রব্যূহ’ নিয়ে সতর্কবার্তা

আগের একজন বক্তার মন্তব্যের সূত্র ধরে ধনখড় বলেন, “…ভগবান করে কি কই ন্যারেটিভ কে চক্কর মে ন ফাস জায়ে, ইস চক্রব্যূহ মে কই ফাস গয়া তো নিকালনা বডা মুশকিল হ্যায়” (ঈশ্বর করুন যেন কেউ আখ্যানের জালে না জড়িয়ে পড়েন, এই চক্রব্যূহে কেউ ফেঁসে গেলে বেরনো খুব কঠিন)। শ্রোতাদের হাসির মধ্যে তিনি দ্রুত যোগ করেন, “আমি নিজের উদাহরণ দিচ্ছি না।”

   

জুলাই মাসের ২১ তারিখে ধনখড় স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে উপরাষ্ট্রপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন, যা রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক জল্পনার সৃষ্টি করে। প্রায় ১০০ দিনের নীরবতা নিয়ে সম্প্রতি কংগ্রেস দল তাঁর সমালোচনাও করেছিল। এমন পটভূমিতে আরএসএস নেতার বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে তাঁর এই মন্তব্য বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ।

 ‘কর্তব্যের কাছে ফ্লাইট তুচ্ছ’: সাম্প্রতিক অতীতই প্রমাণ

বক্তৃতার সময়সীমা নিয়ে বার্তা আসার পর ধনখড় আরেকটি মন্তব্য করেন, যা দর্শকদের মধ্যে হাসি ও উল্লাস জাগায়। তিনি বলেন, “আমি ফ্লাইট ধরার দুশ্চিন্তায় নিজের কর্তব্যকে ছাড়তে পারি না (Main flight pakadne ki chinta se apne kartavya ko nahin chhod sakta)। আর আমার সাম্প্রতিক অতীতই তার প্রমাণ।”

Advertisements

এই উক্তিটি তাঁর আকস্মিক পদত্যাগ এবং পরবর্তী নীরবতার প্রেক্ষিতে তাঁর ‘কর্তব্যের প্রতি অবিচলতা’কে তুলে ধরেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

আচমকা ইস্তফা এবং জল্পনা

২০২৫ সালের ২১ জুলাই স্বাস্থ্যগত কারণ দেখিয়ে ধনখড় সংবিধানের ৬৭ (ক) অনুচ্ছেদ মেনে উপরাষ্ট্রপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তিনি রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, তিনি তাঁর কার্যকালে দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি প্রত্যক্ষ করতে পেরে গর্বিত।

তবে মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার আগেই তাঁর এই নাটকীয় পদত্যাগ রাজনৈতিক মহলে বহু জল্পনার জন্ম দেয়। পরে ১২ সেপ্টেম্বর সি.পি. রাধাকৃষ্ণন তাঁর স্থলাভিষিক্ত হন। আরএসএস নেতার অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এবং এমন রহস্যময় মন্তব্য করে ধনখড় তাঁর রাজনৈতিক বার্তা স্পষ্ট করলেন বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা।