প্রতিবেশী দেশের রাজধানীতে প্রকাশ্যে মোদী হত্যার হুমকি মৌলবাদীদের

dhaka-rally-modi-death-threat-iskcon-hindus-2025

ঢাকা: বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে। এই উত্তেজনা এখন আন্তর্জাতিক মাত্রা নিয়েছে। ঢাকায় একটি জনসভায় একজন ইসলামপন্থী নেতা প্রকাশ্যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায় এবং আইএসকন (ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণা কনশাসনেস) অনুসারীদের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়ে বলা হয়েছে, “হিন্দুদের ধরো, ইস্কনের লোকদের কাটো”।

Advertisements

এই ঘটনা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে উঠেছে, যেখানে অনেকে মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে ইসলামপন্থীদের সামনে হাত তুলে সরেন্ডার করার অভিযোগ করছেন। বাংলাদেশ পুলিশ এখনও এই হুমকিদাতাদের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি, যা দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে ভয়ের পরিবেশ তৈরি করেছে।ঘটনাটি ঘটেছে চট্টগ্রামের একটি র‍্যালিতে, যা হেফাজত-ই-ইসলামের মতো কট্টরপন্থী গোষ্ঠীর আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়।

১৫ হাজারের কমে সেরা ৫টি বাজেট স্মার্টফোন, রইল খুঁটিনাটি

ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, একজন নেতা মাইকে চিৎকার করে বলছেন, “মোদীকে কাটো, হিন্দুদের শেষ করো, আইএসকনের লোকদের ধরে হত্যা করো।” এই স্লোগানে হাজারো লোক যোগ দিয়েছে, এবং কোনো নিরাপত্তা বাহিনী এটি থামাতে পারেনি। এটি শুধু একটি ঘটনা নয়, এটি বাংলাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের উপর চলমান হামলার অংশ। আগস্ট মাস থেকে এ পর্যন্ত হাজারো হিন্দু মন্দির, বাড়িঘর এবং ব্যবসা লক্ষ্য করে আক্রমণ হয়েছে।

ইউএন মানবাধিকার বিষয়ক কর্মকর্তারা এবং অন্যান্য অধিকার সংস্থা ইউনুস সরকারের অধীনে মানবাধিকার লঙ্ঘন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। হিন্দুরা বলছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা দিচ্ছে না, এবং কট্টর ইসলামপন্থীরা ক্রমশ প্রভাবশালী হয়ে উঠছে। এই ইস্যু এখন ভারতের সীমান্ত পেরিয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজে হিন্দুদের উপর হামলার খবর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

Advertisements

ভারতের বিদেশ মন্ত্রণালয় বলেছে, এই হুমকিগুলো অগ্রহণীয়, এবং বাংলাদেশ সরকারকে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে হবে। ইস্কনের বাংলাদেশ শাখা এই হুমকির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছে এবং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে এই বিষয়ে হাসিনা সরকারের সঙ্গে কথা বলার আহ্বান জানিয়েছে।

চট্টগ্রামের নোয়াখালীতে অক্টোবর মাসে ইস্কন মন্দিরে হামলায় তিনজন হিন্দুর মৃত্যু হয়েছে, যার জন্য তারা ভারতীয় সরকারকে দায়ী করেছে। হেফাজত-ই-ইসলামের মতো গোষ্ঠী ইস্কনকে ‘সন্ত্রাসবাদী সংস্থা’ বলে চিত্রিত করে নিষিদ্ধ করার দাবি করছে, এবং তাদের ভিডিওতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে যে, ইস্কন ব্যান না হলে হিন্দুদের হত্যা করা হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ, কিন্তু তাঁর নেতৃত্বে সংখ্যালঘু সুরক্ষার প্রশ্ন উঠেছে। সরকার বলছে, হামলাগুলোর সংখ্যা অতিরঞ্জিত, এবং অনেকগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।

তবে, গত তিন মাসে ৮৮টি হামলায় ৭০ জনকে গ্রেফতারের দাবি করলেও, এই র‍্যালির মতো প্রকাশ্য হুমকিতে পুলিশের নীরবতা সমালোচিত। চট্টগ্রামে নভেম্বরে ইস্কন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার করা হয়েছে সিডিশনের অভিযোগে, যা হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে আরও ক্ষোভ বাড়িয়েছে।