প্রধানমন্ত্রীকে নয়া বার্তা দিয়ে হুঁশিয়ারি ডেরেক ও ব্রায়েনের

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek o’ Brien) বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) বা ‘সাইলেন্ট ইনভিসিবল রিগিং’ (Silent Invisible Rigging) নিয়ে সংসদের উভয় কক্ষে আলোচনার…

Derek o' Brien message to modi

তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন (Derek o’ Brien) বিশেষ নিবিড় সংশোধন (SIR) বা ‘সাইলেন্ট ইনভিসিবল রিগিং’ (Silent Invisible Rigging) নিয়ে সংসদের উভয় কক্ষে আলোচনার দাবি তুলে ভারতীয় জনতা পার্টির (BJP) নেতৃত্বাধীন নরেন্দ্র মোদীর জোট সরকারকে কড়া হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

তিনি অভিযোগ করেছেন, এসআইআর-এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন (ECI) ভোটার তালিকা থেকে লক্ষ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দিয়ে ‘ভোট চুরি’র চেষ্টা করছে, এবং এই প্রক্রিয়ায় বিজেপি সরাসরি জড়িত। ডেরেক জানিয়েছেন, আগামী সোমবার, ৪ আগস্ট থেকে বিরোধী দলগুলো এই ইস্যুতে সংসদে আলোচনার জন্য চাপ সৃষ্টি করবে। “অস্থির মোদী জোটকে ” সংসদীয় নিয়ম ও পদ্ধতি শেখাতে “বিনামূল্যে টিউটোরিয়াল” প্রদান করবে।

   

এসআইআর বিতর্ক: ভোট চুরির অভিযোগ

বিহারে এসআইআর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ৬৫ লক্ষ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে ৩৬ লক্ষ ভোটারকে ‘স্থায়ীভাবে স্থানান্তরিত’ বা ‘অনুসন্ধানে অপ্রাপ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে বিরোধী দলগুলো, বিশেষ করে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস, ‘ভোট চুরি’ হিসেবে অভিহিত করেছে।

তৃণমূল নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “এই এসআইআর কোনো সাধারণ সংশোধন প্রক্রিয়া নয়, এটি একটি নির্বাচনী ষড়যন্ত্র, যা বিজেপি তাদের রাজনৈতিক সুবিধার জন্য ব্যবহার করছে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন, বিজেপি এই ইস্যুতে সংসদে আলোচনা এড়াতে বাধা সৃষ্টি করছে, কারণ তারা “এই প্রক্রিয়ার পক্ষে কোনো যুক্তিসংগত ব্যাখ্যা দিতে পারছে না।”

সংসদে আলোচনার দাবি এবং বিজেপির প্রতিক্রিয়া

ডেরেক ও’ব্রায়েন জানিয়েছেন, বিরোধী দলগুলোর সমন্বিত জোট ইন্ডিয়া (INDIA) এই ইস্যুতে সংসদে আলোচনার জন্য অ্যাডজার্নমেন্ট মোশন দাখিল করেছে। তিনি বলেন, “এসআইআর নিয়ে আলোচনা উভয় কক্ষে সহজেই করা যায়। বিজেপি এই আলোচনাকে ভয় পাচ্ছে এবং সংসদের কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছে। আমরা সোমবার থেকে তাদের সংসদীয় নিয়ম ও পদ্ধতি শেখাব।”

তিনি আরও বলেন, তৃণমূল এই ইস্যুতে কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি, আরজেডি এবং অন্যান্য বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে একযোগে কাজ করবে। বিজেপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, এসআইআর প্রক্রিয়া ভোটার তালিকার “ডুপ্লিকেট এন্ট্রি” দূর করার জন্য প্রয়োজনীয়। তবে, বিরোধী দলগুলো এই যুক্তিকে প্রত্যাখ্যান করে বলেছে, এটি দরিদ্র এবং প্রান্তিক সম্প্রদায়ের ভোটারদের ভোটাধিকার হরণের একটি কৌশল।

Advertisements

ভারতীয় বিমান বাহিনীর AMCA কে সম্পূর্ণ ‘অদৃশ্য’ করে তুলেছে এই প্রযুক্তি

তৃণমূলের কৌশল ও সংসদীয় পদক্ষেপ

তৃণমূল কংগ্রেস এই ইস্যুকে জনগণের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছে। ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, “আমরা কেবল সংসদে নয়, রাজপথেও এই ভোট চুরির বিরুদ্ধে লড়াই করব।” তিনি জানান, তৃণমূলের নেতৃত্বে বিরোধী দলগুলো সংসদে এই ইস্যুতে প্রশ্ন উত্থাপন, মোশন দাখিল এবং আলোচনার মাধ্যমে সরকারকে চাপে রাখবে।

তিনি বিজেপি-নেতৃত্বাধীন গঠবন্ধনকে “অস্থির” বলে অভিহিত করে বলেন, “মোদী সরকারের জোট এখন দুর্বল। আমরা তাদের নিয়মের মধ্যে থেকে কীভাবে গণতান্ত্রিকভাবে লড়াই করতে হয়, তা শিখিয়ে দেব।”

এসআইআর বিতর্ক ভারতের নির্বাচনী গণতন্ত্রের স্বচ্ছতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের এই হুঁশিয়ারি এবং সংসদে আলোচনার দাবি বিরোধী দলগুলোর ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের ইঙ্গিত দেয়।