দিল্লি পুলিশ (Terrorists Arrested in Delhi) স্পেশাল সেল, কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি এবং ঝাড়খণ্ড অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াড (ATS)-এর যৌথ অভিযানে দেশজুড়ে বড়সড় সাফল্য মিলেছে। একাধিক রাজ্যে তল্লাশি চালিয়ে দুই সন্দেহভাজন আইএসআইএস জঙ্গিকে গ্রেফতার করেছে নিরাপত্তা বাহিনী। এই অভিযানের ফলে সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সম্ভাব্য নেটওয়ার্ক ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রে বড় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা।
অভিযান চালিয়ে ধরা পড়ল দিল্লিতে আফতাব
দিল্লি পুলিশ (Terrorists Arrested in Delhi) স্পেশাল সেলের নেতৃত্বে মঙ্গলবার ভোর থেকে রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালানো হয়। একাধিক সূত্রের ভিত্তিতে আফতাব নামে এক সন্দেহভাজনকে দিল্লি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তদন্তে জানা গেছে, আফতাব মূলত মুম্বইয়ের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরেই সে রাজধানী এবং আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় সক্রিয় ছিল বলে সন্দেহ করছে পুলিশ। নিরাপত্তা সূত্রে জানা গেছে, (Terrorists Arrested in Delhi) আইএসআইএস মডিউলের মাধ্যমে যুবকটির সঙ্গে অনলাইন যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল এবং সে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহের কাজ করছিল।
আফতাবের গ্রেফতারের পর দিল্লি পুলিশ স্পেশাল সেল এবং কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলি যৌথভাবে তার মোবাইল, ল্যাপটপ ও একাধিক ডিজিটাল ডিভাইস বাজেয়াপ্ত করেছে। প্রাথমিক তদন্তে মিলেছে **আইএসআইএসের প্রোপাগান্ডা ভিডিও ও চ্যাট লগের বেশ কিছু প্রমাণ।
রাঁচির ইসলামনগর থেকে ধরা পড়ল আশার দানিশ
অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ড অ্যান্টি-টেররিজম স্কোয়াড (ATS)-এর নেতৃত্বে রাঁচির ইসলামনগর এলাকার তবরক লজে হানা দেয় পুলিশ**। এখানে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া থাকছিল আশার দানিশ, যাকে সন্দেহভাজন আইএসআইএস জঙ্গি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
সূত্রের খবর, দানিশ মূলত ঝাড়খণ্ডের বকেয়ার জেলার পেটারওয়ারের বাসিন্দা। সে দীর্ঘদিন ধরে ইসলামনগরে পরিচয় গোপন করে বসবাস করছিল। তবরক লজ থেকে তাকে আটক করার সময় নিরাপত্তা বাহিনী তার কাছ থেকে একাধিক মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, সিম কার্ড ও সন্দেহজনক নথি উদ্ধার করেছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, দানিশ অনলাইনে আইএসআইএস-এর কনটেন্টের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং সম্ভাব্যভাবে নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজেও যুক্ত থাকতে পারে।
১২টিরও বেশি জায়গায় তল্লাশি, আটকের সংখ্যা বাড়ছে
দিল্লি, ঝাড়খণ্ড, মহারাষ্ট্র এবং উত্তর প্রদেশের একাধিক জায়গায় ১২টিরও বেশি স্থানে তল্লাশি অভিযান** চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী।
এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ৮ জনেরও বেশি সন্দেহভাজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির আশঙ্কা, আইএসআইএস-এর একটি সক্রিয় মডিউল ভারতজুড়ে বিস্তার লাভের চেষ্টা করছিল।
ডিজিটাল জঙ্গি নেটওয়ার্কের খোঁজে তদন্ত
তদন্তকারী সংস্থাগুলি মনে করছে, ধৃতদের সঙ্গে যোগাযোগ ছিল এমন আরও একাধিক সন্দেহভাজন দেশজুড়ে সক্রিয় থাকতে পারে। বিশেষ করে, সোশ্যাল মিডিয়া ও এনক্রিপ্টেড মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে তরুণদের প্রলুব্ধ করে আইএসআইএসের নেটওয়ার্কে যুক্ত করার চেষ্টা চলছিল।
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন: “ধৃতদের ডিজিটাল ডিভাইস থেকে আমরা যে ডেটা উদ্ধার করেছি, তা বিশ্লেষণ করলে স্পষ্ট হবে যে একটি বড় জঙ্গি নেটওয়ার্কের মাধ্যমে নতুন সদস্য সংগ্রহের প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছিল।”
নিরাপত্তা জোরদার, গোয়েন্দা তৎপরতা তুঙ্গে
এই গ্রেফতারের পর দিল্লি, রাঁচি, মুম্বই ও অন্যান্য বড় শহরে নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। মেট্রো স্টেশন, বিমানবন্দর, রেলস্টেশন এবং জনবহুল এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
এছাড়াও, এনআইএ (NIA) এবং অন্যান্য কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আইএসআইএস নেটওয়ার্কের পূর্ণাঙ্গ চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করছে।