নয়াদিল্লি, ১৫ নভেম্বর: সোমবার সন্ধ্যায় দিল্লির ঐতিহাসিক লালকেল্লার সামনে ঘটে যায় এক ভয়াবহ বিস্ফোরণ। সন্ধে সাড়ে ছ’টা নাগাদ হঠাৎ একের পর এক দুটি গাড়িতে প্রচণ্ড বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে গোটা এলাকা। প্রথমে একটি সাদা হুন্ডাই আই২০ গাড়িতে বিস্ফোরণ হয়, যার ধাক্কায় আশপাশের আরও তিন-চারটি গাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং একের পর এক ছোট-বড় বিস্ফোরণ ঘটে।
পুলিশ ও এনআইএ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম গাড়িতে ব্যবহৃত হয়েছে প্রায় ২ কেজি অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট মিশ্রিত শক্তিশালী বিস্ফোরক। এটি সাধারণত কৃষি সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়, কিন্তু ফুয়েল অয়েলের সঙ্গে মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছে ভয়ংকর এএনএফও (অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট ফুয়েল অয়েল)। এই বিস্ফোরকের ধাক্কায় দ্বিতীয় গাড়িতে আগুন লেগে আরও বিস্ফোরণ ঘটে।
অ্যান্ড্রয়েড ইউজারদের জন্য নতুন WhatsApp Chat Cleanup ফিচার
প্রত্যক্ষদর্শীদের কথা অনুযায়ী বিস্ফোরণের শব্দ এতটাই ভয়ংকর ছিল যে, কয়েক কিলোমিটার দূর থেকেও শোনা গিয়েছে। মুহূর্তের মধ্যে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে কালো ধোঁয়া আর আগুনের লেলিহান শিখা। রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে গাড়ির ধ্বংসাবশেষ, ভাঙা কাঁচ আর মানুষের চিৎকার। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা ১৩-এ পৌঁছেছে, আহত অন্তত ২৫ জনেরও বেশি। অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
তদন্তকারীরা এর পরেই বলেছিলেন এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং সুপরিকল্পিত জঙ্গি হামলা। ঘটনাস্থলে উদ্ধার হয়েছিল ডেটোনেটরের অংশবিশেষ এবং বিস্ফোরকের অবশিষ্টাংশ। “প্রথম বিস্ফোরণটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে, যার ফলে চেইন রিঅ্যাকশনে অন্য গাড়িগুলোতে আগুন ধরে যায়,” জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক।
এই ঘটনার মূল সন্দেহভাজন ডা. উমর উন নবী ওরফে উমর মহম্মদ নবী, জম্মু-কাশ্মীরের পুলওয়ামার লেথপোরা এলাকার বাসিন্দা। সে ফরিদাবাদের আল-ফালাহ ইউনিভার্সিটিতে ডাক্তারি পড়াত এবং গবেষণা করত। সূত্রের খবর, উমর বোমা তৈরির ‘বিশেষজ্ঞ’। অনলাইন থেকে শিখে সে সাধারণ উপাদান দিয়ে শক্তিশালী আইইডি তৈরি করতে পারদর্শী হয়ে উঠেছিল। ডিএনএ পরীক্ষায় নিশ্চিত হয়েছে যে, বিস্ফোরিত আই২০ গাড়ির চালক ছিল সে নিজেই।
পুলিশের ধারণা, সে প্যানিক হয়ে গিয়েছিল। কারণ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা আগেই ফরিদাবাদে তার সহযোগীদের গ্রেফতার করা হয় এবং ২৯০০ কেজিরও বেশি বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করা হয়, যার বড় অংশ ছিল অ্যামোনিয়াম নাইট্রেট। উমর ভেবেছিল তারাও ধরা পড়ে যাবে, তাই তাড়াহুড়োয় গাড়িতে বিস্ফোরক নিয়ে বেরিয়ে পড়ে এবং অসাবধানতাবশত বিস্ফোরণ ঘটে যায়। কিন্তু কিছু সূত্র বলছে, এটি সুইসাইডাল অ্যাটাকের পরিকল্পনা ছিল।


