দিল্লি বিস্ফোরণ নিয়ে দ্বিতীয় দফার বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

delhi-red-fort-blast-amit-shah-nia-investigation

নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লির হৃদয়স্থলে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর গোটা প্রশাসন এখন নড়েচড়ে বসেছে। সোমবার সন্ধ্যায় লালকেল্লা মেট্রো স্টেশনের কাছে একটি হুন্ডাই আই-টোয়েন্টি গাড়িতে ঘটে বিস্ফোরণে এখন পর্যন্ত ৮ জন নিহত এবং বহুজন গুরুতর আহত। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ টানা দ্বিতীয় দফার উচ্চপর্যায়ের নিরাপত্তা বৈঠক ডেকেছেন।

Advertisements

দুপুর ৩টায় কার্তব্য ভবনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দফতরে শুরু হয় বৈঠক। এর আগে সকাল ১১টায় প্রথম বৈঠক হয় অমিত শাহের বাসভবনে। প্রথম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্রসচিব গোবিন্দ মোহন, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর পরিচালক তাপন দে, এনআইএ-র ডিরেক্টর জেনারেল সদানন্দ বাসন্ত দাতে এবং দিল্লি পুলিশের কমিশনার সতীশ গোলচা। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের ডিরেক্টর জেনারেল নলিন প্রভাত ভার্চুয়ালি বৈঠকে যোগ দেন।

   

তিন বছর পর জেল মুক্তি, চোখে জল পার্থের, স্লোগান তুলল অনুগামীরা

বৈঠকে বিস্ফোরণ তদন্তের অগ্রগতি এবং নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। সূত্রের খবর, সোমবার রাতে ফরিদাবাদে উদ্ধার হওয়া বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক সামগ্রীর সঙ্গে এই বিস্ফোরণের কোনও যোগসূত্র আছে কি না, সেটিও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। অমিত শাহ বৈঠকে নির্দেশ দেন, এনআইএ, এনএসজি, এফএসএল এবং দিল্লি পুলিশকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। তিনি বলেন, “এটা শুধু একটা তদন্ত নয়, এটা জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। প্রতিটি সূত্র, প্রতিটি নমুনা, প্রতিটি তথ্যকে গুরুত্ব দিতে হবে।”

এর আগেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়, বিস্ফোরণ মামলাটি এখন থেকে পুরোপুরি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)-র হাতে থাকবে। দিল্লি পুলিশের বিশেষ সেল, এনএসজি এবং ফরেনসিক টিম যা শুরু করেছিল, সেটি এখন এনআইএ সমন্বিতভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে। এনআইএ খুব শিগগিরই এই মামলায় আনুষ্ঠানিক এফআইআর দায়ের করবে এবং দিল্লি পুলিশের হাতে থাকা সমস্ত প্রমাণ নিজেদের অধীনে নেবে।

Advertisements

মঙ্গলবার সকালেই এনআইএ ও এফএসএল টিম আবার ঘটনাস্থলে গিয়ে অতিরিক্ত ফরেনসিক প্রমাণ সংগ্রহ করেছে। বিস্ফোরণের ধরণ, ব্যবহৃত বিস্ফোরক পদার্থ এবং গাড়ির ভিতরের যান্ত্রিক কাঠামো বিশ্লেষণ করে দেখা হচ্ছে—এটি নিছক দুর্ঘটনা, নাকি পরিকল্পিত সন্ত্রাস হামলা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক সূত্রে জানা গেছে, তদন্তের দিক এখন “সম্ভাব্য জঙ্গি যোগসূত্র”-এর দিকে ঝুঁকছে। সোমবার রাতেই অমিত শাহ দিল্লি পুলিশের কমিশনার ও আইবি-র ডিরেক্টরকে ফোন করে সমন্বিত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

দুপুরের বৈঠক শেষে মন্ত্রকের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন, “এনআইএ-কে সবরকম সহায়তা দেওয়া হবে। কেন্দ্র চায়, তদন্ত সম্পূর্ণ স্বচ্ছ এবং দ্রুতগতিতে শেষ হোক।” রাজধানীতে এখন চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়েছে। রেলস্টেশন, মেট্রো, বিমানবন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবনগুলিতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। ড্রোন সার্ভিল্যান্স ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ স্কোয়াডগুলিকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এই ঘটনার জেরে আবারও প্রশ্ন উঠেছে দিল্লির নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়ে। তবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক জানিয়েছে, “কোনও ত্রুটি থাকলে তা চিহ্নিত করে দ্রুত সংশোধন করা হবে।” এনআইএ এখন তদন্তের সব দিক খতিয়ে দেখবে—গাড়িটি কোথা থেকে এল, কে চালাচ্ছিল, এবং ব্যবহৃত বিস্ফোরক সামগ্রী কোথা থেকে এসেছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ফরিদাবাদে উদ্ধার হওয়া বিস্ফোরক সামগ্রীর সঙ্গে এর যোগ থাকতে পারে।