নিউজ ডেস্ক, নয়াদিল্লি: দিল্লির ভয়াবহ দূষণ (pollution) কমাতে গত কয়েকদিন ধরেই নানা কথাবার্তা চলছে। বিষয়টি গড়িয়েছে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। শীর্ষ আদালতে দিল্লি (Delhi) ও কেন্দ্রীয় সরকার জানিয়েছিল মাত্রাতিরিক্ত দূষণের মূল কারণ ফসলের গোড়া পোড়ানো বা নাড়া পোড়ানো।
যদিও সুপ্রিম কোর্টের (supreme court) বেঞ্চ সহকারের ওই বক্তব্য খারিজ করে দেয়। কিন্তু শুক্রবার নাসার (NASA) উপগ্রহ চিত্রে যে ছবি দেখা গিয়েছে তা দিল্লি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বক্তব্যকেই মান্যতা দিচ্ছে।
নাসার উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, পাঞ্জাব (Punjab) ও হরিয়ানা (Haryana) থেকে নাড়া পোড়ানো বা ফসলের অবশিষ্টাংশ পোড়ানোর কালো ধোঁয়া নদীর স্রোতের মতো দিল্লির দিকে এগিয়ে আসছে। চলতি মাসের ১১ তারিখে এই ছবি ধরা পড়েছে নাসার ক্যামেরায়।
উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, রাজধানী ও তার সংলগ্ন এলাকাগুলি ধোঁয়ায় ঢেকে রয়েছে। ওই ছবিতে যে সমস্ত জায়গায় বড় মাপের আগুন জ্বলছে সেই জায়গাগুলিকে লাল কালি দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। সেখানেই দেখা গিয়েছে, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, এমনকী, পাকিস্তানের বেশ কিছু জায়গায় মাইলের পর মাইল জমিতে চাষিরা ফসলের গোড়া পোড়াচ্ছেন। ফসলের গোড়া পোড়ানোর কালো ধোঁয়া আগ্নেয়গিরির লাভা মতো এগিয়ে আসছে দিল্লির দিকে।
নাসার এক বিজ্ঞানী জানিয়েছেন, ফসলের গোড়া পোড়ানোর কারণে যে ভয়ঙ্কর দূষণের সৃষ্টি হয়েছে তাতে ওই একদিনই দু’কোটির বেশি মানুষ কমবেশি শারীরিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ওই বিজ্ঞানীর দাবি, উপগ্রহ চিত্রে যেভাবে কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলীকে দিল্লির দিকে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে তা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। অবিলম্বে ফসলের গোড়া পোড়ানো বন্ধ করা না গেলে দিল্লির দূষণ রোধ করা যাবে না।
উল্লেখ্য, প্রতি বছরই দেওয়ালির পর দিল্লির দূষণ মাত্রা ছাড়ায়। বাজি ফাটানোর সঙ্গে সঙ্গে নভেম্বরের শুরু থেকেই কৃষকরা ফসলের গোড়া পোড়াতে থাকেন। এই দুইয়ের যোগফলেই দিল্লির বাতাস শ্বাস নেওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে। এই মুহূর্তে দিল্লির বাতাস ‘অতি খারাপ’ পর্যায়ে রয়েছে।
ভয়াবহ দূষণের হাত থেকে মানুষকে রক্ষা করতে ইতিমধ্যেই দিল্লিতে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা হয়েছে। সমস্ত সরকারি-বেসরকারি অফিসে চালু করা হয়েছে ওয়ার্ক ফ্রম হোম। বন্ধ রাখা হয়েছে সব ধরনের নির্মাণকাজ ও তাপ বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। সুপ্রিম কোর্ট অবশ্য এটা মেনে নিয়েছে যে, এই দূষণের অন্যতম কারণ ফসলের গোড়া পোড়ানো হলেও সেটাই একমাত্র কারণ নয়। তাছাড়া কৃষকরা যাতে এই কাজ না করেন তার জন্য সরকারকেই উদ্যোগী হতে হবে। কৃষকদের বিকল্প পথের সন্ধান দিতে হবে সরকারকেই। কিন্তু সরকার সেটা করছে না।