নয়াদিল্লি: রাজধানী দিল্লিতে বড়সড় জঙ্গি হামলার ছক ফাঁস করল দিল্লি পুলিশের স্পেশ্যাল সেল। শুক্রবার এক বিশেষ অভিযানে আইসিস–ঘনিষ্ঠ একটি মডিউল ভেঙে দেওয়া হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে ভোপালের দুই তরুণ, দু’জনেরই নাম আদনান। তদন্তকারীদের দাবি, তারা ‘ফিদায়েঁ’ অর্থাৎ আত্মঘাতী হামলার প্রশিক্ষণ নিচ্ছিল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে দিল্লির সাদিক নগর ও মধ্যপ্রদেশের ভোপাল-এ একযোগে অভিযান চালিয়ে দু’জনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে উঠে এসেছে, তারা আইসিসের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে দিল্লিতে এক বৃহৎ সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করছিল।
এক সিনিয়র অফিসার জানান, অভিযুক্তদের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে ল্যাপটপ, পেন ড্রাইভ, বিস্ফোরক তৈরির টাইমার, অস্ত্রশস্ত্র এবং আইসিস–এর প্রতি আনুগত্যের ভিডিও। স্পেশ্যাল সেলের অ্যাডিশনাল কমিশনার প্রমোদ কুশওয়াহা বলেন, “তারা আইইডি বানানোর চেষ্টা করছিল। দক্ষিণ দিল্লির এক মল ও পার্কে রেকি করা হয়েছিল। দীপাবলির সময় ওই হামলা চালানোর পরিকল্পনা ছিল। তবে আমাদের তৎপরতায় তারা কিছু করার আগেই ধরা পড়েছে।”
সূত্রের দাবি, এই অভিযানে একটি সম্ভাব্য আত্মঘাতী হামলা প্রতিহত করা গেছে। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, গ্রেফতার জঙ্গিদের সঙ্গে পাকিস্তানের গুপ্তচর সংস্থা আইএসআই–এর পরোক্ষ যোগাযোগ থাকতে পারে। তদন্তকারীদের মতে, আইএসআই প্রায়ই ইসলামিক স্টেটের ছদ্মবেশে এ ধরনের সন্ত্রাসী নেটওয়ার্ক সক্রিয় রাখে।
বর্তমানে অভিযুক্তদের নিবিড় জেরা চলছে। গোয়েন্দারা তাদের যোগাযোগের নেটওয়ার্ক, বিদেশি অর্থায়ন এবং প্রশিক্ষণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানার চেষ্টা করছেন। পুলিশ সূত্রে ইঙ্গিত, দিল্লি জুড়ে আরও কিছু স্থানে তল্লাশি অভিযান চলছে, কারণ এই মডিউলের দেশের বাইরে পর্যন্ত যোগসূত্র থাকার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
চিন্তাজনকভাবে, গোয়েন্দা মহলের মতে, এ ধরনের স্লিপার সেল–ধরনের সংগঠনগুলো এখন ভারতের মহানগরগুলিতে গোপনে সক্রিয়, এবং তাদের লক্ষ্য উৎসবের সময় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ঘটানো। দিল্লি পুলিশের সময়োপযোগী অভিযান অন্তত আপাতত সেই আশঙ্কা থেকে রাজধানীকে রক্ষা করেছে।


