দিল্লি পুলিশের এনকাউন্টারে খতম ‘সিগমা অ্যান্ড কোম্পানি’ গ্যাং’

delhi-police-sigma-and-company-encounter

নয়াদিল্লি: রাজধানীর রোহিনি এলাকায় বৃহস্পতিবার ভোরের অন্ধকারে একটা ভয়াবহ গুলিবর্ষণের ঘটনা সবাইকে চমকে দিয়েছে। বিহারের সবচেয়ে কুখ্যাত অপরাধী রঞ্জন পাঠকের নেতৃত্বাধীন ‘সিগমা অ্যান্ড কোম্পানি’ গ্যাং-এর চার সদস্য রঞ্জন পাঠক (২৫), বিমলেশ মাহতো আলিয়াস বিমলেশ সাহনি (২৫), মণিষ পাঠক (৩৩) এবং আমান থাকুর (২১) পুলিশের সঙ্গে এনকাউন্টারে নিহত হয়েছে।

Advertisements

এই চারজনের উপর বিহারে পাঁচটি কনট্রাক্ট কিলিং-এর অভিযোগ ছিল, এবং তারা সামাজিক মাধ্যমে ‘মৃত্যুদণ্ড’ ঘোষণা করে খুনের ভিডিও ছড়িয়ে দিত। দিল্লি এবং বিহার পুলিশের যৌথ অভিযানে এই এক বছরের তাড়না শেষ হয়েছে, যা বিহারের আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে অপরাধীদের একটা বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

গ্যাসে ছাড়, ভাতা বৃদ্ধি ভোটের আগে তেজস্বীর নতুন প্রতিশ্রুতি

এই ঘটনা রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থার শক্তিরও প্রমাণ দিয়েছে।ঘটনার পটভূমি যেন একটা অপরাধী চলচ্চিত্রের মতো। রণজন পাঠক, সীতামড়হি জেলার রাধৌর মালাহি গ্রামের বাসিন্দা, মাত্র ২৫ বছর বয়সে বিহারের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর গ্যাং লিডার হয়ে উঠেছিল। তার নেতৃত্বে ‘সিগমা অ্যান্ড কোম্পানি’ নামক গ্যাং গত ছয় বছর ধরে বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ এবং নেপালের সীমান্তবর্তী এলাকায় অপরাধের জাল বুনছিল।

এরা কনট্রাক্ট কিলিং, চাঁদাবাজি, অস্ত্র পাচার এবং হত্যার মতো অপরাধে জড়িত ছিল। গত তিন মাসে একাই পাঁচটা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে তাদের নাম জড়িয়েছে। সবচেয়ে স্মরণীয় ছিল সেপ্টেম্বরে ব্রহ্মর্ষি সেনার সীতামড়হি জেলা সভাপতি রাম মনোহর শর্মা আলিয়াস গণেশ শর্মার (৪০) হত্যা। এছাড়াও, বাজপাট্টিতে অদিত্য সিং-এর হত্যা এবং পারোহা পঞ্চায়েতের প্রধান রানী দেবীর শ্যালক মদন কুশওয়াহার খুনের সঙ্গে তাদের যোগসূত্র ছিল।

Advertisements

রঞ্জনের উপর বিহার পুলিশ ৫০ হাজার টাকা পুরস্কার ঘোষণা করেছিল, এবং সে সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশকে চ্যালেঞ্জ জানাতো। মণিষ পাঠক ছিল গ্যাং-এর ফিনান্সিয়াল ম্যানেজার এবং প্ল্যানার, বিমলেশ ছিল শুটার, আর আমান থাকুর (করাওয়াল নগরের বাসিন্দা) ছিল তাদের দিল্লির স্থানীয় সহযোগী।

এদের উপর মোট আটটা মামলা ছিল, যার মধ্যে চারটায় আমান, চারটায় বিমলেশ এবং একাধিক হত্যার অভিযোগে মণিষ জড়িত। গ্যাং-এর প্রতিষ্ঠাতা ছিল ভারতী কাপুর ঝা, যার নামও তাদের নোটে উল্লেখ করা হতো।

এনকাউন্টারের ঘটনা ঘটে ২২-২৩ অক্টোবরের মধ্যরাত্রিতে, প্রায় ২:২০ মিনিটে। এরা ১৩ অক্টোবর দিল্লিতে পৌঁছায় এবং করাওয়াল নগরের শেরপুর এলাকায় একটা ফ্ল্যাটে লুকিয়ে ছিল। এই ফ্ল্যাটটি বিহার-উত্তরপ্রদেশের মাইগ্রান্ট লেবারারদের এলাকায়, যা তাদের জন্য নিখুঁত আস্তরণ ছিল।

বিহার পুলিশ চার দিন আগে দিল্লি পুলিশকে ইনপুট দেয়, এবং তারপর থেকে তাদের ডিভাইসের নজরদারি শুরু হয়। তথ্য বলছিল, এরা পশ্চিম বিহার থেকে শেরপুর ভিলেজ পর্যন্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে এবং বিহার নির্বাচনের আগে বড় কোনো অপরাধ করার পরিকল্পনা করছে।