পুলিশের রাতভর অভিযানে বাজেয়াপ্ত কোটি টাকার মাদকসহ অস্ত্র, গ্রেফতার ৬৩

দিল্লি: দিল্লির দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে মাদকচক্রের বিরুদ্ধে রাতভর অভিযানে সাফল্য পেল পুলিশ। একযোগে চালানো অভিযানে গ্রেফতার (Arrested) হয়েছে ৬৩ জন অভিযুক্ত। বাজেয়াপ্ত হয়েছে কোটি টাকার মাদকদ্রব্য,…

Delhi Police raid

দিল্লি: দিল্লির দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে মাদকচক্রের বিরুদ্ধে রাতভর অভিযানে সাফল্য পেল পুলিশ। একযোগে চালানো অভিযানে গ্রেফতার (Arrested) হয়েছে ৬৩ জন অভিযুক্ত। বাজেয়াপ্ত হয়েছে কোটি টাকার মাদকদ্রব্য, বিপুল নগদ টাকা এবং ১৫টি আগ্নেয়াস্ত্র। পুলিশের দাবি, এই অভিযান ছিল বহুদিনের পরিকল্পিত পদক্ষেপ, যার লক্ষ্য ছিল রাজধানীতে ছড়িয়ে থাকা অপরাধচক্রকে ধ্বংস করা।

শুক্রবার গভীর রাতে প্রায় ৫০০ পুলিশকর্মী ও ৪০টি বিশেষ টিম একযোগে বিভিন্ন জায়গায় হানা দেয়। দক্ষিণ-পূর্ব দিল্লির একাধিক পকেট চিহ্নিত করে অভিযান চালানো হয়। গোপন সূত্রের খবরের ভিত্তিতে গড়ে তোলা এই পরিকল্পনায় নেশা চক্রের সঙ্গে যুক্ত বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সদস্যকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়েছে।

   

পুলিশের হাতে এসেছে এমডিএমএ, কোকেন, হেরোইন, বিপুল পরিমাণ নগদ টাকা এবং ১৫টি দেশি-বিদেশি পিস্তল। এগুলি কোথা থেকে এসেছে এবং কারা এর মূল সরবরাহকারী, তা জানতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। পুলিশের মতে, এই অভিযান দিল্লির মাদক বাজারে বড় ধাক্কা দিয়েছে।

শুধু মাদক বাজেয়াপ্ত নয়, দিল্লি পুলিশ এখন পাচারকারীদের আর্থিক শিকড় কেটে দেওয়ার কৌশল নিয়েছে। এক বিবৃতিতে পুলিশ জানিয়েছে, পাচারকারীদের শক্তি আসলে তাদের অর্থনৈতিক দাপটে। সেই টাকাই ব্যবহার হয় অপরাধী নেটওয়ার্ক বিস্তার, বৈধ ব্যবসায় প্রবেশ, অর্থনীতির ক্ষতি এমনকি সন্ত্রাসবাদে। তাই এবার সমান জোর দেওয়া হচ্ছে ফিনান্সিয়াল ইনভেস্টিগেশন-এ।

‘নারকোটিক ড্রাগস অ্যান্ড সাইকোট্রপিক সাবস্ট্যান্সেস অ্যাক্ট’ (NDPS Act)-এর ৬৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী মাদক ব্যবসা থেকে উপার্জিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা যায়। দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিলাসবহুল গাড়ি, ফার্মহাউস, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও নগদ অর্থ চিহ্নিত করা হচ্ছে। বাজেয়াপ্তির প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

Advertisements

ক্রাইম ব্রাঞ্চের অ্যান্টি-নারকোটিক্স টাস্ক ফোর্স (ANTF) এখন দ্বিমুখী কৌশলে কাজ করছে অপারেশনাল তদন্ত: পাচারকারী গ্রেফতার, সাপ্লাই চেন ভাঙা, নেটওয়ার্ক ম্যাপিং। ফিনান্সিয়াল তদন্ত: অর্থের উৎস খোঁজা, ডিজিটাল লেনদেন যাচাই, অবৈধ সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত।

প্রত্যেক অভিযুক্তের আর্থিক প্রোফাইল তৈরি করা হচ্ছে। যাদের সম্পদ আয়ের সঙ্গে মেলে না, তাদের নাম বিশেষ তালিকায় তোলা হচ্ছে। এমনকি অভিযুক্তদের পরিবারের সম্পত্তিও নজরে আনা হচ্ছে, যাতে বেনামি হোল্ডিংস ধরা যায়।

ডিজিটাল লেনদেন খতিয়ে দেখতে ব্যবহৃত হচ্ছে NIDAAN, FIU-IND ও ICJS প্ল্যাটফর্ম। এর মাধ্যমে পাচারকারীদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, ওয়ালেট ও হাওলা চক্রে নজর রাখা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, এই তথ্যভিত্তিক অভিযান মাদকবিরোধী লড়াইকে আরও কার্যকর করছে।

দিল্লি পুলিশের রাতভর অভিযান মাদকবিরোধী সংগ্রামে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। গ্রেফতার ৬৩, বাজেয়াপ্ত কোটি টাকার মাদক ও অস্ত্র—সব মিলিয়ে এটি প্রমাণ করে যে, কেবল আইনি পদক্ষেপ নয়, আর্থিক মেরুদণ্ড ধ্বংস করেই নেশা চক্রকে চূড়ান্তভাবে রুখতে হবে।