পথকুকুর খাওয়ানোয় কড়া নিয়ম, প্রাণীপ্রেমীদের সুরক্ষা দেবে সরকার

দিল্লি: রাজধানী দিল্লিতে পথকুকুর খাওয়ানোকে ঘিরে প্রায়ই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। অনেক সময় মহিলারা, বয়স্ক মানুষ কিংবা প্রাণীপ্রেমীরা হেনস্থার শিকার হন। এবার সেই…

SC reserved verdict on stray dog

দিল্লি: রাজধানী দিল্লিতে পথকুকুর খাওয়ানোকে ঘিরে প্রায়ই স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। অনেক সময় মহিলারা, বয়স্ক মানুষ কিংবা প্রাণীপ্রেমীরা হেনস্থার শিকার হন। এবার সেই সমস্যার সমাধান আনতে উদ্যোগ নিয়েছে দিল্লি সরকার। নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী পথকুকুর (Stray dog) খাওয়ানোর পদ্ধতিকে সম্পূর্ণভাবে নিয়ন্ত্রিত ও সুশৃঙ্খল করা হবে।

সরকারি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্দিষ্ট খাওয়ানোর পয়েন্ট চিহ্নিত করা হবে। সেখানে সাইনবোর্ড লাগানো থাকবে এবং সেই জায়গা ঠিক করার আগে স্থানীয় রেসিডেন্ট ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন (RWA) ও সাধারণ বাসিন্দাদের সঙ্গে আলোচনাও হবে। এর ফলে একদিকে যেমন কুকুরদের নিরাপদে খাওয়ানো সম্ভব হবে, অন্যদিকে প্রতিবেশী বিরোধও এড়ানো যাবে।

   

দিল্লি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, “যেসব RWA দায়িত্ব নিয়ে এই ফিডিং স্পটগুলি ঠিকভাবে চালাবে, তাদের সরকারিভাবে পুরস্কৃত করা হবে।”

নির্দেশিকায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, যাঁরা কুকুরদের খাওয়ান তাঁদের হয়রানি বা বাধা দেওয়া চলবে না। বিশেষত মহিলারা, সিনিয়র সিটিজেন এবং প্রাণী কল্যাণে যুক্ত সমাজকর্মীরা যদি কোনো সমস্যার মুখোমুখি হন, তবে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তবে খাওয়ানোর সময় পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার কথাও গুরুত্ব দিয়ে বলা হয়েছে। যে কেউ খাবার দিলে তাকে বাকি খাবার ও আবর্জনা ফেলে না রেখে সঠিকভাবে নিষ্পত্তি করতে হবে।

শুধু পথকুকুর নয়, নির্দেশিকায় পোষ্য কুকুরের মালিকদের জন্যও বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে। এবার থেকে তিন মাস বয়স হলেই প্রতিটি কুকুরকে স্থানীয় পুরসভায় নিবন্ধন করাতে হবে। টিকাকরণ হালনাগাদ না থাকলে লাইসেন্স কার্যকর হবে না।

ভারতীয় জাতের কুকুর দত্তক নিলে মালিকরা বিশেষ সুবিধা পাবেন। যেমন— কোনো রেজিস্ট্রেশন ফি লাগবে না, নির্বীজন ও প্রথম টিকাকরণ সরকারি প্রাণী জন্মনিয়ন্ত্রণ (ABC) কেন্দ্রে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হবে।

Advertisements

যেসব কুকুর জলাতঙ্কে আক্রান্ত, তাদের আলাদা করে রাখা হবে এবং মৃত্যুর পর বৈজ্ঞানিকভাবে মৃতদেহ নিষ্পত্তি করা হবে। অন্যদিকে, হিংস্র কুকুরদের টিকা ও নির্বীজন শেষে আবার আগের এলাকায় ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

কুকুর ধরার সময় কোনো প্রকার নিষ্ঠুরতা করা যাবে না। শুধুমাত্র প্রশিক্ষিত কর্মীরাই এই কাজ করবেন বলে সরকার জানিয়েছে।

দিল্লির নাগরিকরা যাতে কুকুর কামড়, জলাতঙ্ক সংক্রান্ত সমস্যা বা ABC প্রোগ্রামের ত্রুটি নিয়ে সহজে অভিযোগ জানাতে পারেন, তার জন্য শীঘ্রই ২৪ ঘণ্টার হেল্পলাইন চালু হবে। একই সঙ্গে অনলাইন পোর্টালও খোলা হবে, যেখানে প্রতিটি অভিযোগ নথিভুক্ত করা হবে। সমাধান না হলে সরাসরি স্টেট ABC মনিটরিং কমিটির কাছে পাঠানো হবে।

দিল্লির উন্নয়নমন্ত্রী কপিল মিশ্র জানিয়েছেন, “নতুন নিয়ম চালুর মূল লক্ষ্য হলো সমাজে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখা, যাতে প্রাণী কল্যাণ ও মানুষের স্বাচ্ছন্দ্য— দুটোই রক্ষা হয়।”

এই উদ্যোগে দিল্লিতে পথকুকুর খাওয়ানো আরও সুশৃঙ্খল হবে এবং প্রাণীপ্রেমীদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হবে বলেই আশা করা হচ্ছে।